সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডিগ্রী

 ডিগ্রী



অনেকদিন আগে আমার এক বন্ধু লিখেছিলেন" সু শিক্ষাই আসল। ডিগ্রীতো থার্মোমিটারেও আছে। "
থার্মোমিটারের ডিগ্রী জ্বর মাপার জন্য। আর শিক্ষার ডিগ্রী শিক্ষা মাপার জন্য।
আমার পরিচিত অনেকেই আছেন। তারা নিজেকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত বলে দাবী করে অহংকারও করে। যেন তারা নবী। কেউ কেউ এমন কথাও বলে,আমাদের নবীজিও স্বশিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন!!!! নিজের মুর্খতা ঢাকার জন্য এরা নিজেকে স্বশিক্ষিত দাবি করে!!! এরা এইট নাইন পর্যন্ত পড়েছে। ফেসবুকে হাওলাতি লেখা লেখে। যেন তারা দেশের উচ্চ শিক্ষিত বিশিষ্ট নাগরিক। অথচ এরা Illegal কে বলে Unlegal, Incomplete কে বলে Uncomplete, Structure কে বলে টাকচার। স্বশিক্ষার কি বাহার! স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হলেই যদি চলতো তবে আর কলেজ, ভার্সিটি হতো না। ছেলেমেয়েরা কলেজ ভার্সিটিতে পড়তোও না। উচ্চতর ডিগ্রীও নিতো না। আজ বিকেল পাঁচটায় বন্ধু Mr.Abdul Mannan এসেছিলেন। অফিসে বসেই অনেক গল্প হলো। বৃষ্টি নেমেছিলো তাই আর হাঁটা হয় নি। অফিসেই আমি ইলেকট্রিক কেটলিতে পানি গরম করে কফি বানানোর ব্যবস্থা রেখেছি। দুই রাউন্ড কফি খেয়ে শিক্ষা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমি বন্ধুকে বললাম,দেখুন, ১৩/১৪/১৫ বছরের অসংখ্য ছেলে হোটেলে কাজ করে। কেউ বাসে,মাইক্রোতে হেলপারের কাজ করে। অনেকেই রাজমিস্ত্রি,ইলেকটৃক মিস্ত্রী বা টাইলস মিস্ত্রির কাজ করে। কেউ সিএএনজি চালায়। এদের প্রতিদিনকার ইনকাম কমপক্ষে ৫০০ টাকা।
একটা ছেলে বা মেয়ে এমএ পাশ করতে ২৭/২৮ বছর সময় লাগে। এতে ছাত্রছাত্রীদের লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। ১৫ বছরের যে ছেলেটি লেখাপড়া বাদ দিয়ে কর্ম জীবনে ঢুকে দৈনিক ৫০০ টাকা রোজগার করে। ছুটির দিন বাদ দিলেও মাসে তার কমপক্ষে ১২০০০ টাকা রোজগার হয়। ১৫ থেকে ২৮ বছর =১৩ বছর।
এই ১৩ বছরে সে মোট রোজগার করে মাসে ১২০০০ হলে বছরে ১ লাখ চুয়াল্লিশ হাজার। ১৩ বছরে ১৮লাখ ৭২ হাজার টাকা। এরা সবাই স্বশিক্ষিত!
যে ছেলে বা মেয়েটি এই টাকাকে তুচ্ছ করে ২৮ বছর পর্যন্ত লেখাপড়া করে। এবং এই লেখাপড়া করতে গিয়ে সে লাখ লাখ টাকা খরচ করে। অনেক বড় আর্থিক ক্ষতি সে মেনে নেয় শিক্ষা বা ডিগ্রীর জন্য। শিক্ষিত লোককে আপনি সম্মান করবেন না? বন্ধু আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। ডিগ্রী ছাড়া সুশিক্ষা অর্জন করা যায় না।
বলছিলাম, বন্ধুর সুশিক্ষা আর ডিগ্রী নিয়ে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় একটা ইউনিভার্সিটি আছে। নাম Pacific Western University. নিউজ উইক ও টাইম ম্যাগাজিনে ওই ইউনিভার্সিটি একটা বিজ্ঞাপন দিতো। বিজ্ঞাপনটি এতো বছর পরও আমার মনে আছে। তাদের বিজ্ঞাপন ছিলো....
" Of course Experience is the Best Teacher.
But Degrees Open The Door."
ফটো ক্রেডিট : Abdul Mannan. ( তিনি অনেকগুলো ছবি তুলেছেন। পরে দেবো।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...