সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফাদার্স ডে-র ইতিহাস

ফাদার্স ডে-র ইতিহাস

করিম চৌধুরী
আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। আমেরিকার মানুষদের কিছু কাজ দেখে আমরা অবাক না হয়ে পারিনা । তাদের এই অবাক করে দেয়া কাজকর্ম দেখে আমরা প্রাচ্যের মানুষরা ভাবি ওরা বোধহয় কিছুটা পাগল ।
শিক্ষিত ও আধুনিক মানুষরা অবশ্য মনে করেন আমেরিকানদের যে সেন্স অফ হিউমার তা দেখেই আমরা নানান যন্ত্রণার পূর্বদেশীয় মানুষরা ভাবি এসবই তাদের পাগলামি বা ফাজলামি । আমাদের দেশে অনেক কিছুর অভাব থাকলেও অন্তত যন্ত্রণার অভাব নেই এতোটুকু ।
এতো যন্ত্রণার দেশের মানুষ হিসাবে আমেরিকানদের সেন্স অফ হিউমার বোঝার মতো সময়ইবা আমাদের কই? অথচ সেন্স অফ হিউমার যে একজন মানুষের একটি বড় মাপের যোগ্যতা তা না লিখলেও চলে। সিরিয়াস একটা কথাও ওরা বলবে রসিকতা করে। জীবনকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য যা কিছু প্রয়োজন ওরা সবই করেছে।
প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য তাদের যেমন আছে ভালোবাসা দিবস বা সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে- মাতৃত্বের প্রতি সম্মান স্বরূপ তেমনি আছে মাদার্স ডে বা মা দিবস। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য তাদের আছে থ্যাংকসগিভিং ডে বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিবস । জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের জন্মদিন উপলক্ষে আছে তাদের প্রেসিডেন্টস ডে । আমেরিকায় ডে এর অভাব নেই। মেমোরিয়াল ডে,ভেটারেন্স ডে,ইস্টার সানডে,গুড ফ্রাইডে,ক্রিস্টমাস ডে,ইনডিপেনডেন্স ডে,ফ্রেন্ডশিপ ডে আরো কতো কি ! বাবাদেরকে সম্মানিত করার জন্য আছে তাদের ফাদার্স ডে বা বাবা দিবস ।
কর্মসূত্রেই কয়েকজন আমেরিকানের সঙ্গে আমার বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিলো। যার সঙ্গে আমার বিশেষ সখ্য ছিলো তিনি আমার অনেক দিনের চেনা। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। নাম হেনরিখ ফ্র্যাংক। ফ্র্যাংক নামেই তিনি পরিচিত। পড়ালেখা জানা লোক। পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পলিটিক্যাল সাইন্সে এমএস করেছিলেন । কথাবার্তায়ও তিনি তার নামের মতোই ফ্র্যাংক ছিলেন । কোন কিছু জানতে চেয়ে তাকে প্রশ্ন করা মানে রীতিমতো নাজেহাল হওয়া । তবে ভদ্রলোক খুবই রসিক এবং বন্ধুপ্রিয় । ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু জানার আগ্রহ নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ফাদার্স ডে তে আপনার প্রোগ্রাম কি?
ফ্র্যাংক রহস্যজনকভাবে হেসে বললো, ইয়াংম্যান,আমি জানি তুমি অবিবাহিত । বিয়ে না করেও এদেশে সন্তানের পিতা হওয়া যায় । এটা আমাদের দেশে স্বীকৃত ও বৈধ । কিন্তু তুমি এখনো পিতাও হওনি । ফাদার্স ডে নিয়ে তোমার এতো আগ্রহ কেন ? সন্তানের পিতা হওয়ার জন্য যে বিশেষ মানুষটির দরকার তোমার তাও নেই । তুমি বরং ভালোবাসা দিবস নিয়েই ব্যস্ত থাকো । ভালোবাসার সেই মানুষটি পেয়ে গেলে তুমি যে খুব শিগগিরই পিতা হবে তা তোমার মাথাভর্তি চুল আর লোমশ বুক দেখেই বুঝা যায় । তখন ফাদার্স ডে নিয়ে ভেবো । এখন ফাদার হওয়ার জন্য ভাবো ।
ছোট্ট এক প্রশ্নের উত্তরে এতগুলো কথা শোনার পর আমিও রসিকতা করে বললাম, তখন তো আমি হাজব্যান্ড ডে বা স্বামী দিবস পালনের আন্দোলন করবো ।
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ফ্র্যাংক বললেন,ক্যারিম,আমি লক্ষ্য করেছি, তুমি যেরকম লোভাতুর দৃষ্টিতে মেয়েদের দিকে তাঁকাও, কিছু না করেও একদৃষ্টিতে অনেকক্ষণ কোন মেয়ের দিকে তাঁকিয়ে থাকলে তোমার লোভী দৃষ্টিতেই সেই মেয়ে প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়বে । কাজেই তুমি যে হাজব্যান্ড ডে বা স্বামী দিবস পালনের চেষ্টা করবে তা অন্তত আমি বিশ্বাস করি । তবে তোমার স্ত্রীও বোধহয় ওয়াইফ ডে পালনের আন্দোলনে নামবে ।
রসিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে এবার আমি বললাম, ওয়াইফ ডে বা স্ত্রী দিবস তা হতেই পারেনা । স্বামীরা তা কিছুতেই মানবেন না । যদি হয় তবে সেটা হবে ওয়াইফ নাইট (Wife Night) বা স্ত্রী রজনী । সারা বিশ্বের স্বামীরা অপেক্ষায় থাকবেন সেই বিশেষ রজনীর জন্য । বছরের একটি বিশেষ রাতে দুনিয়ার সব স্বামীরা তাদের স্ত্রীদেরকে অভিনন্দিত করবে বিশেষভাবে ।
হাসতে হাসতে ফ্র্যাংক বললেন,তুমি দেখছি আমার চেয়েও ফানি !
শোনো ক্যারিম, একটা নতুন আইডিয়া আমার মাথায় খেলেছে । প্রত্যেকের জন্য একটা বিশেষ দিন থাকা দরকার । ভাইদের জন্য ব্রাদার্স ডে, বোনদের জন্য সিস্টার্স ডে, ভাতিজা ভাগ্নেদের জন্য নেফিউ ডে, ভাইঝি বোনঝিদের জন্য নীস ডে, সহকর্মীদের জন্য কলিগ ডে,অফিসের কর্তাদের জন্য বস ডে, তেমনিভাবে শ্বশুর শাশুড়ি, শ্যালক শ্যালিকা, আত্মীয়স্বজন অর্থাৎ প্রত্যেকের জন্যই একটি করে দিন । তাহলে বছরের প্রতিদিনই কোন না কোন অনুষ্ঠান থাকবে ।
হাসতে হাসতে গম্ভীরভাবে বললাম, ফ্র্যাংক ডোন্ট বি ফানি । লেটস কাম টু দি পয়েন্ট । আমি আসলে আপনার কাছে কিছু তথ্য জানতে চাই । ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু বলুন । প্লিজ নো মোর ফান । আই এম সিসিয়াস ।
ফ্র্যাংক বললেন, অলরাইট শোনো । ওয়াশিংটন রাজ্যের (ওয়াশিংটন ডিসি আমেরিকার রাজধানী । ওয়াশিংটন ষ্টেট (State) ওয়েস্ট কোস্টে কানাডার ভ্যাংকুভারের সঙ্গে) স্পোকেইন ( Spokane) সিটির সনোরা লুইস স্মার্ট ডড(Sonora Louise Smart Dod) নামের এক মহিলা সর্বপ্রথম তার পিতাকে সম্মানিত করার জন্য ১৯০৯ সালে ফাদার্স ডে পালনের চিন্তা করেন । তার পিতার নাম ছিলো উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট । স্মার্টের স্ত্রী মারা যান ১৮৯৮ সালে । স্মার্ট দ্বিতীয়বার আর বিয়ে করেন নি । তিনি যত্নের সঙ্গে তার ছয় সন্তানকে বড় করেন । সনোরা লুইস স্মার্ট পিতার এই স্যাক্রিফাইস দেখে অভিভূত হন এবং বাবাকে বিশেষভাবে সম্মানিত করার জন্য ন্যাশনাল ফাদার্স ডে পালনের অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানান । স্পোকেইন সিটি প্রশাসন এবং লোকাল ইয়াংম্যান ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এই উদ্যোগকে সমর্থন দেন । সনোরার উদ্যোগেই সর্বপ্রথম স্পোকেইন সিটিতে ফাদার্স ডে পালন করা হয় ১৯১০ সালের ১৯ জুন তারিখে । এরই মাঝে বহু বছর কেটে গেছে । দিনটিকে জাতীয়ভাবে পালনের জন্য বহু প্রস্তাবও পাস হয়েছে । শেষ পর্যন্ত ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচারড এম নিক্সন সেই প্রস্তাবে সই করে ফাসার্স ডে বা বাবা দিবস কে জাতীয়ভাবে পালনের আইনগত বৈধতা দেন । আমেরিকা ও কানাডায় প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আমরা ফাদার্স ডে পালন করি ।
যে তথ্যগুলো জানার জন্য কাজে ফাঁকি দিয়ে এতক্ষন গল্প করা আমি তা জেনেছি।
ফ্র্যাংক কে বড় করে একটা ধন্যবাদ দিলাম । প্রত্যুত্তরে সে ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম । টেক কেয়ার মাই ফ্রেন্ড বলে বেরিয়ে গেলো ।

করিম চৌধুরী
নিউ ইয়র্ক
karimcbd@gmail.com
( এই লেখাটি ১০।০৬।১৯৯৭ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন এর বিশেষ সংখ্যায় প্রচ্ছদ কাহিনী হিসাবে ছাপা হয়েছিলো । ফেইসবুকে লেখার সময় কিছু ছোট করে নিয়েছি । কিছু অংশ বাদ দিয়েছি । থ্যাংক ইউ )

করিম চৌধুরী
আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। আমেরিকার মানুষদের কিছু কাজ দেখে আমরা অবাক না হয়ে পারিনা । তাদের এই অবাক করে দেয়া কাজকর্ম দেখে আমরা প্রাচ্যের মানুষরা ভাবি ওরা বোধহয় কিছুটা পাগল ।
শিক্ষিত ও আধুনিক মানুষরা অবশ্য মনে করেন আমেরিকানদের যে সেন্স অফ হিউমার তা দেখেই আমরা নানান যন্ত্রণার পূর্বদেশীয় মানুষরা ভাবি এসবই তাদের পাগলামি বা ফাজলামি । আমাদের দেশে অনেক কিছুর অভাব থাকলেও অন্তত যন্ত্রণার অভাব নেই এতোটুকু ।
এতো যন্ত্রণার দেশের মানুষ হিসাবে আমেরিকানদের সেন্স অফ হিউমার বোঝার মতো সময়ইবা আমাদের কই? অথচ সেন্স অফ হিউমার যে একজন মানুষের একটি বড় মাপের যোগ্যতা তা না লিখলেও চলে। সিরিয়াস একটা কথাও ওরা বলবে রসিকতা করে। জীবনকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য যা কিছু প্রয়োজন ওরা সবই করেছে।
প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য তাদের যেমন আছে ভালোবাসা দিবস বা সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে- মাতৃত্বের প্রতি সম্মান স্বরূপ তেমনি আছে মাদার্স ডে বা মা দিবস। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য তাদের আছে থ্যাংকসগিভিং ডে বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিবস । জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের জন্মদিন উপলক্ষে আছে তাদের প্রেসিডেন্টস ডে । আমেরিকায় ডে এর অভাব নেই। মেমোরিয়াল ডে,ভেটারেন্স ডে,ইস্টার সানডে,গুড ফ্রাইডে,ক্রিস্টমাস ডে,ইনডিপেনডেন্স ডে,ফ্রেন্ডশিপ ডে আরো কতো কি ! বাবাদেরকে সম্মানিত করার জন্য আছে তাদের ফাদার্স ডে বা বাবা দিবস ।
কর্মসূত্রেই কয়েকজন আমেরিকানের সঙ্গে আমার বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিলো। যার সঙ্গে আমার বিশেষ সখ্য ছিলো তিনি আমার অনেক দিনের চেনা। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। নাম হেনরিখ ফ্র্যাংক। ফ্র্যাংক নামেই তিনি পরিচিত। পড়ালেখা জানা লোক। পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পলিটিক্যাল সাইন্সে এমএস করেছিলেন । কথাবার্তায়ও তিনি তার নামের মতোই ফ্র্যাংক ছিলেন । কোন কিছু জানতে চেয়ে তাকে প্রশ্ন করা মানে রীতিমতো নাজেহাল হওয়া । তবে ভদ্রলোক খুবই রসিক এবং বন্ধুপ্রিয় । ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু জানার আগ্রহ নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ফাদার্স ডে তে আপনার প্রোগ্রাম কি?
ফ্র্যাংক রহস্যজনকভাবে হেসে বললো, ইয়াংম্যান,আমি জানি তুমি অবিবাহিত । বিয়ে না করেও এদেশে সন্তানের পিতা হওয়া যায় । এটা আমাদের দেশে স্বীকৃত ও বৈধ । কিন্তু তুমি এখনো পিতাও হওনি । ফাদার্স ডে নিয়ে তোমার এতো আগ্রহ কেন ? সন্তানের পিতা হওয়ার জন্য যে বিশেষ মানুষটির দরকার তোমার তাও নেই । তুমি বরং ভালোবাসা দিবস নিয়েই ব্যস্ত থাকো । ভালোবাসার সেই মানুষটি পেয়ে গেলে তুমি যে খুব শিগগিরই পিতা হবে তা তোমার মাথাভর্তি চুল আর লোমশ বুক দেখেই বুঝা যায় । তখন ফাদার্স ডে নিয়ে ভেবো । এখন ফাদার হওয়ার জন্য ভাবো ।
ছোট্ট এক প্রশ্নের উত্তরে এতগুলো কথা শোনার পর আমিও রসিকতা করে বললাম, তখন তো আমি হাজব্যান্ড ডে বা স্বামী দিবস পালনের আন্দোলন করবো ।
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ফ্র্যাংক বললেন,ক্যারিম,আমি লক্ষ্য করেছি, তুমি যেরকম লোভাতুর দৃষ্টিতে মেয়েদের দিকে তাঁকাও, কিছু না করেও একদৃষ্টিতে অনেকক্ষণ কোন মেয়ের দিকে তাঁকিয়ে থাকলে তোমার লোভী দৃষ্টিতেই সেই মেয়ে প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়বে । কাজেই তুমি যে হাজব্যান্ড ডে বা স্বামী দিবস পালনের চেষ্টা করবে তা অন্তত আমি বিশ্বাস করি । তবে তোমার স্ত্রীও বোধহয় ওয়াইফ ডে পালনের আন্দোলনে নামবে ।
রসিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে এবার আমি বললাম, ওয়াইফ ডে বা স্ত্রী দিবস তা হতেই পারেনা । স্বামীরা তা কিছুতেই মানবেন না । যদি হয় তবে সেটা হবে ওয়াইফ নাইট (Wife Night) বা স্ত্রী রজনী । সারা বিশ্বের স্বামীরা অপেক্ষায় থাকবেন সেই বিশেষ রজনীর জন্য । বছরের একটি বিশেষ রাতে দুনিয়ার সব স্বামীরা তাদের স্ত্রীদেরকে অভিনন্দিত করবে বিশেষভাবে ।
হাসতে হাসতে ফ্র্যাংক বললেন,তুমি দেখছি আমার চেয়েও ফানি !
শোনো ক্যারিম, একটা নতুন আইডিয়া আমার মাথায় খেলেছে । প্রত্যেকের জন্য একটা বিশেষ দিন থাকা দরকার । ভাইদের জন্য ব্রাদার্স ডে, বোনদের জন্য সিস্টার্স ডে, ভাতিজা ভাগ্নেদের জন্য নেফিউ ডে, ভাইঝি বোনঝিদের জন্য নীস ডে, সহকর্মীদের জন্য কলিগ ডে,অফিসের কর্তাদের জন্য বস ডে, তেমনিভাবে শ্বশুর শাশুড়ি, শ্যালক শ্যালিকা, আত্মীয়স্বজন অর্থাৎ প্রত্যেকের জন্যই একটি করে দিন । তাহলে বছরের প্রতিদিনই কোন না কোন অনুষ্ঠান থাকবে ।
হাসতে হাসতে গম্ভীরভাবে বললাম, ফ্র্যাংক ডোন্ট বি ফানি । লেটস কাম টু দি পয়েন্ট । আমি আসলে আপনার কাছে কিছু তথ্য জানতে চাই । ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু বলুন । প্লিজ নো মোর ফান । আই এম সিসিয়াস ।
ফ্র্যাংক বললেন, অলরাইট শোনো । ওয়াশিংটন রাজ্যের (ওয়াশিংটন ডিসি আমেরিকার রাজধানী । ওয়াশিংটন ষ্টেট (State) ওয়েস্ট কোস্টে কানাডার ভ্যাংকুভারের সঙ্গে) স্পোকেইন ( Spokane) সিটির সনোরা লুইস স্মার্ট ডড(Sonora Louise Smart Dod) নামের এক মহিলা সর্বপ্রথম তার পিতাকে সম্মানিত করার জন্য ১৯০৯ সালে ফাদার্স ডে পালনের চিন্তা করেন । তার পিতার নাম ছিলো উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট । স্মার্টের স্ত্রী মারা যান ১৮৯৮ সালে । স্মার্ট দ্বিতীয়বার আর বিয়ে করেন নি । তিনি যত্নের সঙ্গে তার ছয় সন্তানকে বড় করেন । সনোরা লুইস স্মার্ট পিতার এই স্যাক্রিফাইস দেখে অভিভূত হন এবং বাবাকে বিশেষভাবে সম্মানিত করার জন্য ন্যাশনাল ফাদার্স ডে পালনের অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানান । স্পোকেইন সিটি প্রশাসন এবং লোকাল ইয়াংম্যান ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এই উদ্যোগকে সমর্থন দেন । সনোরার উদ্যোগেই সর্বপ্রথম স্পোকেইন সিটিতে ফাদার্স ডে পালন করা হয় ১৯১০ সালের ১৯ জুন তারিখে । এরই মাঝে বহু বছর কেটে গেছে । দিনটিকে জাতীয়ভাবে পালনের জন্য বহু প্রস্তাবও পাস হয়েছে । শেষ পর্যন্ত ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচারড এম নিক্সন সেই প্রস্তাবে সই করে ফাসার্স ডে বা বাবা দিবস কে জাতীয়ভাবে পালনের আইনগত বৈধতা দেন । আমেরিকা ও কানাডায় প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আমরা ফাদার্স ডে পালন করি ।
যে তথ্যগুলো জানার জন্য কাজে ফাঁকি দিয়ে এতক্ষন গল্প করা আমি তা জেনেছি।
ফ্র্যাংক কে বড় করে একটা ধন্যবাদ দিলাম । প্রত্যুত্তরে সে ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম । টেক কেয়ার মাই ফ্রেন্ড বলে বেরিয়ে গেলো ।

করিম চৌধুরী
নিউ ইয়র্ক
karimcbd@gmail.com
( এই লেখাটি ১০।০৬।১৯৯৭ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন এর বিশেষ সংখ্যায় প্রচ্ছদ কাহিনী হিসাবে ছাপা হয়েছিলো । ফেইসবুকে লেখার সময় কিছু ছোট করে নিয়েছি । কিছু অংশ বাদ দিয়েছি । থ্যাংক ইউ )


করিম চৌধুরী
আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। আমেরিকার মানুষদের কিছু কাজ দেখে আমরা অবাক না হয়ে পারিনা । তাদের এই অবাক করে দেয়া কাজকর্ম দেখে আমরা প্রাচ্যের মানুষরা ভাবি ওরা বোধহয় কিছুটা পাগল ।
শিক্ষিত ও আধুনিক মানুষরা অবশ্য মনে করেন আমেরিকানদের যে সেন্স অফ হিউমার তা দেখেই আমরা নানান যন্ত্রণার পূর্বদেশীয় মানুষরা ভাবি এসবই তাদের পাগলামি বা ফাজলামি । আমাদের দেশে অনেক কিছুর অভাব থাকলেও অন্তত যন্ত্রণার অভাব নেই এতোটুকু ।
এতো যন্ত্রণার দেশের মানুষ হিসাবে আমেরিকানদের সেন্স অফ হিউমার বোঝার মতো সময়ইবা আমাদের কই? অথচ সেন্স অফ হিউমার যে একজন মানুষের একটি বড় মাপের যোগ্যতা তা না লিখলেও চলে। সিরিয়াস একটা কথাও ওরা বলবে রসিকতা করে। জীবনকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য যা কিছু প্রয়োজন ওরা সবই করেছে।
প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য তাদের যেমন আছে ভালোবাসা দিবস বা সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে- মাতৃত্বের প্রতি সম্মান স্বরূপ তেমনি আছে মাদার্স ডে বা মা দিবস। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য তাদের আছে থ্যাংকসগিভিং ডে বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিবস । জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের জন্মদিন উপলক্ষে আছে তাদের প্রেসিডেন্টস ডে । আমেরিকায় ডে এর অভাব নেই। মেমোরিয়াল ডে,ভেটারেন্স ডে,ইস্টার সানডে,গুড ফ্রাইডে,ক্রিস্টমাস ডে,ইনডিপেনডেন্স ডে,ফ্রেন্ডশিপ ডে আরো কতো কি ! বাবাদেরকে সম্মানিত করার জন্য আছে তাদের ফাদার্স ডে বা বাবা দিবস ।
কর্মসূত্রেই কয়েকজন আমেরিকানের সঙ্গে আমার বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিলো। যার সঙ্গে আমার বিশেষ সখ্য ছিলো তিনি আমার অনেক দিনের চেনা। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। নাম হেনরিখ ফ্র্যাংক। ফ্র্যাংক নামেই তিনি পরিচিত। পড়ালেখা জানা লোক। পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পলিটিক্যাল সাইন্সে এমএস করেছিলেন । কথাবার্তায়ও তিনি তার নামের মতোই ফ্র্যাংক ছিলেন । কোন কিছু জানতে চেয়ে তাকে প্রশ্ন করা মানে রীতিমতো নাজেহাল হওয়া । তবে ভদ্রলোক খুবই রসিক এবং বন্ধুপ্রিয় । ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু জানার আগ্রহ নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ফাদার্স ডে তে আপনার প্রোগ্রাম কি?
ফ্র্যাংক রহস্যজনকভাবে হেসে বললো, ইয়াংম্যান,আমি জানি তুমি অবিবাহিত । বিয়ে না করেও এদেশে সন্তানের পিতা হওয়া যায় । এটা আমাদের দেশে স্বীকৃত ও বৈধ । কিন্তু তুমি এখনো পিতাও হওনি । ফাদার্স ডে নিয়ে তোমার এতো আগ্রহ কেন ? সন্তানের পিতা হওয়ার জন্য যে বিশেষ মানুষটির দরকার তোমার তাও নেই । তুমি বরং ভালোবাসা দিবস নিয়েই ব্যস্ত থাকো । ভালোবাসার সেই মানুষটি পেয়ে গেলে তুমি যে খুব শিগগিরই পিতা হবে তা তোমার মাথাভর্তি চুল আর লোমশ বুক দেখেই বুঝা যায় । তখন ফাদার্স ডে নিয়ে ভেবো । এখন ফাদার হওয়ার জন্য ভাবো ।
ছোট্ট এক প্রশ্নের উত্তরে এতগুলো কথা শোনার পর আমিও রসিকতা করে বললাম, তখন তো আমি হাজব্যান্ড ডে বা স্বামী দিবস পালনের আন্দোলন করবো ।
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ফ্র্যাংক বললেন,ক্যারিম,আমি লক্ষ্য করেছি, তুমি যেরকম লোভাতুর দৃষ্টিতে মেয়েদের দিকে তাঁকাও, কিছু না করেও একদৃষ্টিতে অনেকক্ষণ কোন মেয়ের দিকে তাঁকিয়ে থাকলে তোমার লোভী দৃষ্টিতেই সেই মেয়ে প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়বে । কাজেই তুমি যে হাজব্যান্ড ডে বা স্বামী দিবস পালনের চেষ্টা করবে তা অন্তত আমি বিশ্বাস করি । তবে তোমার স্ত্রীও বোধহয় ওয়াইফ ডে পালনের আন্দোলনে নামবে ।
রসিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে এবার আমি বললাম, ওয়াইফ ডে বা স্ত্রী দিবস তা হতেই পারেনা । স্বামীরা তা কিছুতেই মানবেন না । যদি হয় তবে সেটা হবে ওয়াইফ নাইট (Wife Night) বা স্ত্রী রজনী । সারা বিশ্বের স্বামীরা অপেক্ষায় থাকবেন সেই বিশেষ রজনীর জন্য । বছরের একটি বিশেষ রাতে দুনিয়ার সব স্বামীরা তাদের স্ত্রীদেরকে অভিনন্দিত করবে বিশেষভাবে ।
হাসতে হাসতে ফ্র্যাংক বললেন,তুমি দেখছি আমার চেয়েও ফানি !
শোনো ক্যারিম, একটা নতুন আইডিয়া আমার মাথায় খেলেছে । প্রত্যেকের জন্য একটা বিশেষ দিন থাকা দরকার । ভাইদের জন্য ব্রাদার্স ডে, বোনদের জন্য সিস্টার্স ডে, ভাতিজা ভাগ্নেদের জন্য নেফিউ ডে, ভাইঝি বোনঝিদের জন্য নীস ডে, সহকর্মীদের জন্য কলিগ ডে,অফিসের কর্তাদের জন্য বস ডে, তেমনিভাবে শ্বশুর শাশুড়ি, শ্যালক শ্যালিকা, আত্মীয়স্বজন অর্থাৎ প্রত্যেকের জন্যই একটি করে দিন । তাহলে বছরের প্রতিদিনই কোন না কোন অনুষ্ঠান থাকবে ।
হাসতে হাসতে গম্ভীরভাবে বললাম, ফ্র্যাংক ডোন্ট বি ফানি । লেটস কাম টু দি পয়েন্ট । আমি আসলে আপনার কাছে কিছু তথ্য জানতে চাই । ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু বলুন । প্লিজ নো মোর ফান । আই এম সিসিয়াস ।
ফ্র্যাংক বললেন, অলরাইট শোনো । ওয়াশিংটন রাজ্যের (ওয়াশিংটন ডিসি আমেরিকার রাজধানী । ওয়াশিংটন ষ্টেট (State) ওয়েস্ট কোস্টে কানাডার ভ্যাংকুভারের সঙ্গে) স্পোকেইন ( Spokane) সিটির সনোরা লুইস স্মার্ট ডড(Sonora Louise Smart Dod) নামের এক মহিলা সর্বপ্রথম তার পিতাকে সম্মানিত করার জন্য ১৯০৯ সালে ফাদার্স ডে পালনের চিন্তা করেন । তার পিতার নাম ছিলো উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট । স্মার্টের স্ত্রী মারা যান ১৮৯৮ সালে । স্মার্ট দ্বিতীয়বার আর বিয়ে করেন নি । তিনি যত্নের সঙ্গে তার ছয় সন্তানকে বড় করেন । সনোরা লুইস স্মার্ট পিতার এই স্যাক্রিফাইস দেখে অভিভূত হন এবং বাবাকে বিশেষভাবে সম্মানিত করার জন্য ন্যাশনাল ফাদার্স ডে পালনের অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানান । স্পোকেইন সিটি প্রশাসন এবং লোকাল ইয়াংম্যান ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এই উদ্যোগকে সমর্থন দেন । সনোরার উদ্যোগেই সর্বপ্রথম স্পোকেইন সিটিতে ফাদার্স ডে পালন করা হয় ১৯১০ সালের ১৯ জুন তারিখে । এরই মাঝে বহু বছর কেটে গেছে । দিনটিকে জাতীয়ভাবে পালনের জন্য বহু প্রস্তাবও পাস হয়েছে । শেষ পর্যন্ত ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচারড এম নিক্সন সেই প্রস্তাবে সই করে ফাসার্স ডে বা বাবা দিবস কে জাতীয়ভাবে পালনের আইনগত বৈধতা দেন । আমেরিকা ও কানাডায় প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আমরা ফাদার্স ডে পালন করি ।
যে তথ্যগুলো জানার জন্য কাজে ফাঁকি দিয়ে এতক্ষন গল্প করা আমি তা জেনেছি।
ফ্র্যাংক কে বড় করে একটা ধন্যবাদ দিলাম । প্রত্যুত্তরে সে ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম । টেক কেয়ার মাই ফ্রেন্ড বলে বেরিয়ে গেলো ।

করিম চৌধুরী
নিউ ইয়র্ক
karimcbd@gmail.com
( এই লেখাটি ১০।০৬।১৯৯৭ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন এর বিশেষ সংখ্যায় প্রচ্ছদ কাহিনী হিসাবে ছাপা হয়েছিলো । ফেইসবুকে লেখার সময় কিছু ছোট করে নিয়েছি । কিছু অংশ বাদ দিয়েছি । থ্যাংক ইউ )

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...