সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সহবাস

সহবাস

অনেকদিন আগে আমার লেখক বন্ধু Mahmuda Akhter বলেছিলেন, “আপনি ইদানীং অতীত স্মৃতিচারণ বেশি করছেন ।”
আমি অতীতের কথাই বেশি লিখি । বেশিরভাগই আত্মজৈবনিক কথা । কয়েকদিন হয় একটা কথা মনে পড়ছে । লিখবো কি লিখবো না এ নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম । আজ এক বন্ধুকে বলায় সে বললো, স্মৃতি কথা তো স্মৃতিই । এখানে ভালো স্মৃতি থাকবে । খারাপ স্মৃতিও থাকবে । সুখের কথা থাকবে । দুঃখের কথা থাকবে । কান্নার কথা থাকবে । আবার হাসির কথাও থাকবে ।
তেমনি এক হাসির কথা ।
আমি তখন ক্লাশ টেনে পড়তাম । বড় আপার ঝাউতলা বাসায় থাকতাম। ছোটবেলা থেকেই আমি একটু অন্য রকম । কেউ বলতো পোংটা, কেউ বলতো বান্দর, কেউ বলতো বৃটিশ, কেউ বলতো ইঁচড়েপাকা । কেউ বলতো মেধাবি । আমাদের দেশের মানুষেরতো মতের শেষ নেই !
তো শহর থেকে অনেক দূরের গ্রামের এক ভদ্রলোক এলেন ১৫ দিন আপার বাসায় থাকবেন । সেই আশির দশকে। তিনি বিএ পরীক্ষা দেবেন । ভিক্টোরিয়া কলেজে সীট । শহরে কোনো আত্মীয় নেই । দুলাভাইয়ের দিকে কেমন যেন আত্মীয় তিনি । তাই পরীক্ষা যতোদিন ততোদিন তিনি থাকবেন । তার থাকার জায়গা হলো আমার রুমে ।
আমি পড়ি টেনে আর তিনি বিএ পরীক্ষা দেবেন । অনেক সিনিয়র বলা যায় । কিন্তু ওই, আমি যে পোংটা । তাই খুব সহজেই তার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গেলো । তিনি বড় বড় উত্তর জোরে পড়তেন । আমি শুনতাম পাশের টেবিল থেকে । তিনি আমার খাটেই থাকতেন । তার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অনেক পড়া তখন আমার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিলো ।
তো একদিন রউফ ভাইকে বললাম,
রউফ ভাই, আপনিতো উপরের ক্লাশে পড়েন । তাই পারবেন । আমাদেরতো এক কথায় প্রকাশ আছে ৫ নাম্বার । আপনিতো বিএ পাশ করে টিচার হবেন বলেছেন । এক কথায় প্রকাশ করেন তো
“ এক সঙ্গে বাস করা ” ।
তিনি একটু আমতা আমতা করে বললেন, তুমি এইটা কি প্রশ্ন করলা ? আমি বললাম, আপনি পারেন না । সহবাস । তিনি খুব জোরে হাসি দিয়ে বললেন, তুমি একটা পোংটা !
আমি বললাম, এক সঙ্গে কাজ করলে যদি সহকর্মী হয়, এক সঙ্গে জার্নি করলে যদি সহযাত্রী হয়, তাহলে এক সঙ্গে বাস করলে সহবাস হবে না কেন ?
রউফ ভাই বললেন, আমি পারি না । তুমি পারলে অন্য কেউরে জিগাও । কেউ কি পারেন ?

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...