সেনানিবাসে ব্যাংক ডাকাতি এবং অপরাপর প্রসঙ্গ
ঢাকা সেনানিবাসের অত্যন্ত স্পর্শকাতর স্থানে অবস্থিত একটি বেসরকারী ব্যাংকের বুথে নিরপত্তা প্রহরীকে হত্যা করে সব টাকা লুট হয়েছে! বিষয়টি দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে! সেনাভবনের পার্শ্বে, পুরাতন ডিজিএফআই হোডকোয়ার্টারের বিপরীতে, সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট ব্রাঞ্চের পার্শ্বে এহেন দুর্ধর্ষ ঘটনা জানান দিচ্ছে- সেনাবাহিনী ও সেনানিবাসের নিরাপত্তা ঠিকঠাক মত কাজ করছে না। সেনাভবন অর্থাৎ, সেনাবাহিনী প্রধানের বাসভবনের আশে পাশে কড়া পাহারা, তথা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকার কথা। কেতাবে লেখা থাকলে বাস্তবে নিশ্চয়ই সিস্টেমে বড় ধরনের গোলমাল আছে। আগে ধরে নেয় হতো, ক্যান্টনমেন্ট এমন একটি জায়গা, যেখানে আর যাই হোক, নিরাপত্তার কোনো সংকট নেই। চোর ডাকাত দূরের কথা, কোথাও কিছু রাস্তায় পরে থাকলেও কেউ তুলে নিবে না। অবস্থা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে- সে যুগ হয়েছে বাসী।
ঢাকা সেনানিবাসের ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এলাকায় দীর্ঘকাল বসবাস করায় এর অলিগলি সব চেনা, মুখগুলোও পরিচিত। সেনানিবাসে ঢুকতে বেরুতে সিভিলিয়ানদের যে কী হয়রানি, তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন বুঝেন। তদুপরি সিসিটিভি ও লেটেস্ট যোগাযোগের এই যুগে অস্ত্রশস্ত্রসহ ডাকাত ঢুকে সেনাপ্রধানের বাড়ির কাছে পৌঁছে অপারেশন চালিয়ে খুনাখারাবি করে ব্যাংকের টাকা লুট করে কোনো ধরা পড়া ব্যতিরেকেই নিশ্চিন্তে বাইরে চলে যেতে পারার ঘটনা বলে দিচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তা বলতে আর কিছু নাই। সেনানিবাসও এখন নিরাপদ নয়। আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটার আলামত নয় তো? যদিও এখন দেখা যাবে, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের এবং এমপি ইউনিটের কিছু ছেলেদের রগরানো হচ্ছে, কিছু এক্সট্রা টাইট, কয়েকদিন পরে আবার যেই সেই।
একটা ঘটনার কথা বলি। কয়েকদিন আগে এক ভদ্রলোক মতিঝিল থেকে একটা উবার ভাড়া করলেন। ভাঙা বাংলায় বলেন- ক্যান্টনমেন্ট চলো। ড্রাইভার রাজী হয় না। বলে- ক্যান্টনমেন্টের পাশ নাই। যাত্রী বিরক্ত হয়ে বলে, তোর পাশের দরকার হবে না, আমি আছি তো, দ্যাখ কি করি। পথে টুকটাক কিছু আলাপে বোঝা গেলো, তিনি কোলকাতার মানুষ এবং ভারতীয়। গাড়িটি ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ জাহাঙ্গীর গেটের কাছাকাছি আসলে আরোহী বললেন, সোজা যাও অর্থাৎ ফ্লাগ কার লাইন দিয়ে! ড্রাইভার ভয় পেয়ে বলে, ‘স্যার, বলেন কি আপনি? তা সম্ভব নয়। আমার বিপদ হবে।’ আরোহী আশ্বস্ত করে বলে, ‘তুমি যাও, কোনো সমস্যা হবে না, দেখো আমি কি করি!’ এমপি সদস্য যথারীতি ফ্লাগ লাইনে গাড়িটি থামায় এবং পরিচয় জানতে চায়। আরোহী তার পকেট থেকে একটা ভিজিটিং কার্ডের মতো কাগজ বের করে দেখায় (ওটাতে কোনো ছবি ছিল না বা আইডি কার্ডও নয়)। এমনকি আরোহী গাড়ির কাঁচও নামিয়ে কথা বলেনি। ওটা দেখেই এমপি গাড়ি ছেড়ে দিলো। ড্রাইভার এবার বুঝে গেলো আরোহী হোমড়া চোমড়া কেউ হবে। এবার ক্যান্টনমেন্টের নির্দিষ্ট বাড়ির সামনে পৌঁছলে দেখা যায় কয়েকজন সেনা অফিসার তাকে রিসিভ করতে দাঁড়িয়ে আছে। এই হলো সেনানিবাসের বর্তমান সিকিউরিটির হাল!
ঢাকা সেনানিবাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোথায় এসে ঠেকেছে, তা বুঝতে এই একটি ঘটনাই যথেষ্ট। এর বাইরে, বেশ কয়েকবছর ধরে নানা মাধ্যমে খবর বের হয়েছে, ক্যান্টনমেন্টগুলিতে প্রতিবেশি দেশের গেয়েন্দা সংস্থা 'র'-য়ের অবাধ বিচরণ। কচুক্ষেতের ডিজিএফআই অফিসের একটি ফ্লোরে ভারতীয় বাহিনীর মেজর জেনারেলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক ডজন অফিসার বসে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার আগামাথা ঠিক করে থাকেন। বাংলাদেশ আর্মি অনেক আগেই কর্পোরেট আর্মিতে পরিণত হয়েছে। এদেশের সেনাবাহিনীর সাধারণ থেকে নীতিগত বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দা ও সেনারা ভূমিকা রেখে থেকে। এমনকি সেনাবাহিনীর গতিবিধি সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয় বাংলাদেশ বাহিনীর কর্তাদের। গত দু’টার্ম ধরে আর্মিতে চলা ক্লিনজিং মিশনে ভারতীয় বাহিনীর লোকেরা সশরীরে উপস্থিত থাকে। মেজর জিয়াউল হক, লে. কর্নেল যায়েদী, লে. কর্নেল হাসিনুরের মত কয়েকডজন সার্ভিং সেনা অফিসারকে অপহরণ, মাসের পর মাস আটক, এবং জিজ্ঞাসাবারে নামে টর্চারের সময় উপস্থিত থাকে হিন্দিভাষী ভারতীয় গোয়েন্দারা!
বাংলাদেশে সেনাবাহিনী বলতে যে কঠোর কঠিন সার্ভিসকে বোঝাতো, সেখানে এখন স্থান দখল করেছে অঢেল টাকা পয়সার ছড়াছড়ি, হাইরাইজ মাল্টিস্টোরেড ভবন, নানা উপায়ে বিত্ত বৈভবের ব্যবস্থা, ব্যক্তিগত আরাম আয়েশ, মোটা চাকার পাজেরো গাড়িতে পারিবার নিয়ে হৈ হল্লা, আড্ডাবাজি, পার্টি, চাকরির পরে ব্যবসা বানিজ্যের হাতছানি ইত্যাদি। এখনকার কান্টনমেন্টে গেলে মনে হয় কোনো বাহিনীর এলাকা নয়, বরং হয় কোনো পর্যটনকেন্দ্র বা সেভেনস্টার হোটেলের আঙিনা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেনাবাহিনী এবং সেনানিবাসের এই দশা হঠাৎ করে হয়নি। খুব পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে করা হয়েছে। পিলখানা ম্যাসাকার পরবর্তী সেনাবাহিনীর ভেতরে অনেকেই দেখছেন অপেশাদারী একটি মেরুদন্ডহীন ডিপার্টমেন্ট। আজকাল পুলিশের হাতে সেনা অফিসার ও সদস্যদের পথ ঘাটে প্রহা
র খাওয়ার যে প্রবণতা, তা একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের একটি আঁতেল শ্রেণী আছেন, যারা জোরেসোরেই প্রচার করে থাকেন, বাংলাদেশে সেনাবাহিনীরই দরকার নাই। আবার সরকারী দলের আজন্ম ক্ষোভ- তাদের জনকের হত্যাকারী বাহিনী হলো সেনাবাহিনী। কাজেই এই বাহিনীকে যে কোনো ভাবে দমন করে রাখতে হবে, পারলে বিলুপ্ত করো। সেনাবাহিনীতে যতই পরিবর্তন বা রক্ত বদলাক না কেনো, ভোটছাড়া প্রধানমন্ত্রী এখনও তাদের ভয়েই ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না!
আজকের ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠতে পারে, কালকের ঘটনা কি কেবল একটি ডাকাতি? নাকি বড় কোনো ঘটনার পূর্বাভাস? এরপরে সেনাসদরের ভেতরে অফিসাররা খুন হলেও বা পিলখানার মত কোনো ঘটনা ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। হু ইজ নেস্কট? ইজ ইট অ্যা ফুল ড্রেস রিহার্সাল? গত এক দশকের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে প্রতিবেশিদের অনেক টেনশন হ্রাস পেলেও এবারে ৫০০ কোটি টাকার পুরোনো অস্ত্রের ভাগাড় বানিয়ে এসব পালিশ করার কাজে ব্যস্ত রাখার এক মহৎ পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই হাতে নেয়া হয়েছে। দরকার হলে এর জন্য টেনিং নিতেও যেতে হবে প্রতিবেশীরই কাছে, বাইরে যাওয়ার পথ রুদ্ধ। প্রতিরক্ষা চুক্তির নামে বেঁধে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে। কেবল বাকী আছে এটিকে তাদের সাবসার্ভিয়েন্ট বাহিনী হিসাবে অফিসিয়াল ঘোষণা!
প্রায় নিরাপত্তাহীন দেশ। এ অবস্থায় দেশ ও জাতীয় সেনাবাহিনীকে বাঁচাতে হলে আর দেরী নয়, এখনই সময়। উঠে দাঁড়ান।
Courtesy: M.A.Malique
ঢাকা সেনানিবাসের অত্যন্ত স্পর্শকাতর স্থানে অবস্থিত একটি বেসরকারী ব্যাংকের বুথে নিরপত্তা প্রহরীকে হত্যা করে সব টাকা লুট হয়েছে! বিষয়টি দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে! সেনাভবনের পার্শ্বে, পুরাতন ডিজিএফআই হোডকোয়ার্টারের বিপরীতে, সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট ব্রাঞ্চের পার্শ্বে এহেন দুর্ধর্ষ ঘটনা জানান দিচ্ছে- সেনাবাহিনী ও সেনানিবাসের নিরাপত্তা ঠিকঠাক মত কাজ করছে না। সেনাভবন অর্থাৎ, সেনাবাহিনী প্রধানের বাসভবনের আশে পাশে কড়া পাহারা, তথা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকার কথা। কেতাবে লেখা থাকলে বাস্তবে নিশ্চয়ই সিস্টেমে বড় ধরনের গোলমাল আছে। আগে ধরে নেয় হতো, ক্যান্টনমেন্ট এমন একটি জায়গা, যেখানে আর যাই হোক, নিরাপত্তার কোনো সংকট নেই। চোর ডাকাত দূরের কথা, কোথাও কিছু রাস্তায় পরে থাকলেও কেউ তুলে নিবে না। অবস্থা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে- সে যুগ হয়েছে বাসী।
ঢাকা সেনানিবাসের ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এলাকায় দীর্ঘকাল বসবাস করায় এর অলিগলি সব চেনা, মুখগুলোও পরিচিত। সেনানিবাসে ঢুকতে বেরুতে সিভিলিয়ানদের যে কী হয়রানি, তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন বুঝেন। তদুপরি সিসিটিভি ও লেটেস্ট যোগাযোগের এই যুগে অস্ত্রশস্ত্রসহ ডাকাত ঢুকে সেনাপ্রধানের বাড়ির কাছে পৌঁছে অপারেশন চালিয়ে খুনাখারাবি করে ব্যাংকের টাকা লুট করে কোনো ধরা পড়া ব্যতিরেকেই নিশ্চিন্তে বাইরে চলে যেতে পারার ঘটনা বলে দিচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তা বলতে আর কিছু নাই। সেনানিবাসও এখন নিরাপদ নয়। আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটার আলামত নয় তো? যদিও এখন দেখা যাবে, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের এবং এমপি ইউনিটের কিছু ছেলেদের রগরানো হচ্ছে, কিছু এক্সট্রা টাইট, কয়েকদিন পরে আবার যেই সেই।
একটা ঘটনার কথা বলি। কয়েকদিন আগে এক ভদ্রলোক মতিঝিল থেকে একটা উবার ভাড়া করলেন। ভাঙা বাংলায় বলেন- ক্যান্টনমেন্ট চলো। ড্রাইভার রাজী হয় না। বলে- ক্যান্টনমেন্টের পাশ নাই। যাত্রী বিরক্ত হয়ে বলে, তোর পাশের দরকার হবে না, আমি আছি তো, দ্যাখ কি করি। পথে টুকটাক কিছু আলাপে বোঝা গেলো, তিনি কোলকাতার মানুষ এবং ভারতীয়। গাড়িটি ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ জাহাঙ্গীর গেটের কাছাকাছি আসলে আরোহী বললেন, সোজা যাও অর্থাৎ ফ্লাগ কার লাইন দিয়ে! ড্রাইভার ভয় পেয়ে বলে, ‘স্যার, বলেন কি আপনি? তা সম্ভব নয়। আমার বিপদ হবে।’ আরোহী আশ্বস্ত করে বলে, ‘তুমি যাও, কোনো সমস্যা হবে না, দেখো আমি কি করি!’ এমপি সদস্য যথারীতি ফ্লাগ লাইনে গাড়িটি থামায় এবং পরিচয় জানতে চায়। আরোহী তার পকেট থেকে একটা ভিজিটিং কার্ডের মতো কাগজ বের করে দেখায় (ওটাতে কোনো ছবি ছিল না বা আইডি কার্ডও নয়)। এমনকি আরোহী গাড়ির কাঁচও নামিয়ে কথা বলেনি। ওটা দেখেই এমপি গাড়ি ছেড়ে দিলো। ড্রাইভার এবার বুঝে গেলো আরোহী হোমড়া চোমড়া কেউ হবে। এবার ক্যান্টনমেন্টের নির্দিষ্ট বাড়ির সামনে পৌঁছলে দেখা যায় কয়েকজন সেনা অফিসার তাকে রিসিভ করতে দাঁড়িয়ে আছে। এই হলো সেনানিবাসের বর্তমান সিকিউরিটির হাল!
ঢাকা সেনানিবাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোথায় এসে ঠেকেছে, তা বুঝতে এই একটি ঘটনাই যথেষ্ট। এর বাইরে, বেশ কয়েকবছর ধরে নানা মাধ্যমে খবর বের হয়েছে, ক্যান্টনমেন্টগুলিতে প্রতিবেশি দেশের গেয়েন্দা সংস্থা 'র'-য়ের অবাধ বিচরণ। কচুক্ষেতের ডিজিএফআই অফিসের একটি ফ্লোরে ভারতীয় বাহিনীর মেজর জেনারেলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক ডজন অফিসার বসে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার আগামাথা ঠিক করে থাকেন। বাংলাদেশ আর্মি অনেক আগেই কর্পোরেট আর্মিতে পরিণত হয়েছে। এদেশের সেনাবাহিনীর সাধারণ থেকে নীতিগত বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দা ও সেনারা ভূমিকা রেখে থেকে। এমনকি সেনাবাহিনীর গতিবিধি সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয় বাংলাদেশ বাহিনীর কর্তাদের। গত দু’টার্ম ধরে আর্মিতে চলা ক্লিনজিং মিশনে ভারতীয় বাহিনীর লোকেরা সশরীরে উপস্থিত থাকে। মেজর জিয়াউল হক, লে. কর্নেল যায়েদী, লে. কর্নেল হাসিনুরের মত কয়েকডজন সার্ভিং সেনা অফিসারকে অপহরণ, মাসের পর মাস আটক, এবং জিজ্ঞাসাবারে নামে টর্চারের সময় উপস্থিত থাকে হিন্দিভাষী ভারতীয় গোয়েন্দারা!
বাংলাদেশে সেনাবাহিনী বলতে যে কঠোর কঠিন সার্ভিসকে বোঝাতো, সেখানে এখন স্থান দখল করেছে অঢেল টাকা পয়সার ছড়াছড়ি, হাইরাইজ মাল্টিস্টোরেড ভবন, নানা উপায়ে বিত্ত বৈভবের ব্যবস্থা, ব্যক্তিগত আরাম আয়েশ, মোটা চাকার পাজেরো গাড়িতে পারিবার নিয়ে হৈ হল্লা, আড্ডাবাজি, পার্টি, চাকরির পরে ব্যবসা বানিজ্যের হাতছানি ইত্যাদি। এখনকার কান্টনমেন্টে গেলে মনে হয় কোনো বাহিনীর এলাকা নয়, বরং হয় কোনো পর্যটনকেন্দ্র বা সেভেনস্টার হোটেলের আঙিনা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেনাবাহিনী এবং সেনানিবাসের এই দশা হঠাৎ করে হয়নি। খুব পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে করা হয়েছে। পিলখানা ম্যাসাকার পরবর্তী সেনাবাহিনীর ভেতরে অনেকেই দেখছেন অপেশাদারী একটি মেরুদন্ডহীন ডিপার্টমেন্ট। আজকাল পুলিশের হাতে সেনা অফিসার ও সদস্যদের পথ ঘাটে প্রহা
র খাওয়ার যে প্রবণতা, তা একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের একটি আঁতেল শ্রেণী আছেন, যারা জোরেসোরেই প্রচার করে থাকেন, বাংলাদেশে সেনাবাহিনীরই দরকার নাই। আবার সরকারী দলের আজন্ম ক্ষোভ- তাদের জনকের হত্যাকারী বাহিনী হলো সেনাবাহিনী। কাজেই এই বাহিনীকে যে কোনো ভাবে দমন করে রাখতে হবে, পারলে বিলুপ্ত করো। সেনাবাহিনীতে যতই পরিবর্তন বা রক্ত বদলাক না কেনো, ভোটছাড়া প্রধানমন্ত্রী এখনও তাদের ভয়েই ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না!
আজকের ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠতে পারে, কালকের ঘটনা কি কেবল একটি ডাকাতি? নাকি বড় কোনো ঘটনার পূর্বাভাস? এরপরে সেনাসদরের ভেতরে অফিসাররা খুন হলেও বা পিলখানার মত কোনো ঘটনা ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। হু ইজ নেস্কট? ইজ ইট অ্যা ফুল ড্রেস রিহার্সাল? গত এক দশকের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে প্রতিবেশিদের অনেক টেনশন হ্রাস পেলেও এবারে ৫০০ কোটি টাকার পুরোনো অস্ত্রের ভাগাড় বানিয়ে এসব পালিশ করার কাজে ব্যস্ত রাখার এক মহৎ পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই হাতে নেয়া হয়েছে। দরকার হলে এর জন্য টেনিং নিতেও যেতে হবে প্রতিবেশীরই কাছে, বাইরে যাওয়ার পথ রুদ্ধ। প্রতিরক্ষা চুক্তির নামে বেঁধে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে। কেবল বাকী আছে এটিকে তাদের সাবসার্ভিয়েন্ট বাহিনী হিসাবে অফিসিয়াল ঘোষণা!
প্রায় নিরাপত্তাহীন দেশ। এ অবস্থায় দেশ ও জাতীয় সেনাবাহিনীকে বাঁচাতে হলে আর দেরী নয়, এখনই সময়। উঠে দাঁড়ান।
Courtesy: M.A.Malique
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন