সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জেমিমার পাসপোর্ট

জেমিমার পাসপোর্ট

জেমিমার বয়স যখন চার বছর তখনি আমি জেমিমার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করে রেখেছিলাম । কাগজপত্রে আর ডকুমেন্টে আমি নিজে যেমন সবসময় আপ টু ডেট থাকি জেমিমাকেও তেমন করেই গড়ে তুলতে চেয়েছি । যদিও তার মার সঙ্গে আমার সেপারেশন হয়ে গেছে তবে আমার ইচ্ছা অনুযায়ি তিনি জেমিমাকে গড়ে তুলছেন । গতকাল আমি মিরপুর ১ নাম্বারে G Mart এর Supreme Dinner এ অপেক্ষা করছিলাম । দুপুর সাড়ে ১২ টায় জেমিমা এলো তার মার সঙ্গে । আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে বললো " পাপা, তুমি দাড়ি রেখেছো কেন ? কাজটা তুমি ঠিক করোনি ।" তারপর জেমিমা হট ডগ এর অর্ডার করাতে আমি অবাক হয়েছি । হট ডগ আমার প্রিয় ফাস্ট ফুড । ইউরোপ আমেরিকায় অনেক খেয়েছি । অনেকক্ষণ বাবা মেয়ে দুষ্টুমি করলাম । আমি এখনো জেমিমাকে দুট্টু মেয়ে বলে ডাকি ।
জেমিমার মা বললো, G Mart এর উল্টো দিকেই দোতলায় V I P's Party Center । ওখানেই আমরা লাঞ্চ করবো । সেন্ট্রালি এয়ার কনডিশনড রেস্তোরা । খুব পরিস্কার পরিবেশ রেস্তোরার ।
এবার আমাদের সঙ্গে জয়েন করলো কুমিল্লা থেকে যাওয়া -বন্ধু শামিম , ইঞ্জিনিয়ার কবির আর ব্যবসায়ী মোখলেস । ৩০ আইটেমের বুফে লাঞ্চ । সব আইটেম আমরা নিই নি। প্রতিজন ৬০০ টাকা প্লাস ভ্যাট । ৮ রকমের ভর্তা , চার রকমের চাটনি/আচার-আম-তেতুল-জলপাই- আর একটা কি যেন মনে নেই । বিফ ,চিকেন,রুই মাছ , চিংড়িমাছ ,সবজি। চার রকমের স্যালাড , মিষ্টি ,দধি, কোল্ড ডৃংকস । খাবারের মান ভালো । এসব খাবার বেশি খাওয়া যায়না কারন আমরা কেউ ভোজন রসিক না । অনেকটা বিদেশি দূতাবাসের পার্টির মতো । ওইসব পার্টিতে অনেক খাবারে্র আয়োজন থাকলেও সবাই এলকোহল খেয়েই পেট পুরিয়ে নেয় । খাবার খুব একটা খাওয়া হয়না । আমি তিনটি ইউরোপিয়ান দূতাবাসের পার্টিতে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম । তাই এই বিষয়টা আমি জানি । আরেকবার সেনাকুঞ্জেও দাওয়াত খেয়েছিলাম আমার এক বন্ধু সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তার অনুরোধে।
আমাদের খাওয়ার মাঝেই কাউকে না জানিয়ে জেমিমার মা গোপনে কাউন্টারে গিয়ে বিলটা পরিশোধ করে ফেলেছিলো । সবাই অনুরোধ করলেও ওয়াহিদা সুলতানা-সেতু(ডাকনাম) জেমিমার মার নাম- তিনি কাউকে বিল দিতে দেন নি। আমার বন্ধুরা সবাই অবাক হয়ে বললো - ভাবি, আপনাদের দেখে বিশ্বাসই হয় না যে আপনি- করিম ডিভোর্সড । রাত ৮ টায় আমি কুমিল্লা ফিরে আসি ।

 May 25, 2015

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...