সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিশ্বকাপ ফুটবল ও অপদার্থ জনগণ

বিশ্বকাপ ফুটবল ও অপদার্থ জনগণ

৫টি বিশ্বকাপ আমি দেশের বাইরে দেখেছি। ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ দেখেছিলাম। তখন আমি জাপানে। সেবার আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ম্যাড়াডোনা তখনই নাম করেছিলো। যদিও তাকে আমার ততো ভালো খেলোয়াড় মনে হয় নি। ১৯৯০ সালে আমি অস্টৃয়াতে ছিলাম। সেবার ইটালিতে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। পাশের দেশ অস্টৃয়া। সেবার ফাইনাল হয়েছিলো জার্মানি আর আর্জেন্টিনার মধ্যে। জার্মানি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ১৯৯৪ সালে হয়েছিলো আমেরিকার নয়টি সিটিতে । তখনো আমি অস্টৃয়া। সেবার ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ১৯৯৮ সালে হয়েছিলো ফ্রান্সে। তখন আমি আমেরিকায়। সেবার স্বাগতিক ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ২০০২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়েছিলো যৌথভাবে জাপান ও সাউথ কোরিয়ায়। তখনো আমি আমেরিকায়। নিজের কথা বেশি লেখা হয়ে গেলো যদিও। কোনো দেশেই ফুটবল নিয়ে এতো উম্মাদনা আমি দেখিনি। আমাদের দেশে যতো উম্মাদনা হয়।
আগামি মাসের ১৪ তারিখ বিশ্বকাপ ২০১৮ শুরু হচ্ছে রাশিয়া ফেডারেশনে ।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, আমরা স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে সমর্থ হই নি। কিন্তু এই দেশে ফুটবল উন্মাদনা যে হারে দেখি, সে হারে এদেশের খেলোয়ারদের মাঝে দেখি না। এ দেশের জনগণ প্রতি ৪ বছর পর পর যে হারে আর্জেনটিনা, ব্রাজিল, জার্মানী, ইটালী ইত্যাদি দেশের পতাকার পেছনে টাকা খরচ করে, গেঞ্জি বানায়! আমাদের দেশের উন্মাদ জনগন কম করে হলেও ১৫/২০ কোটি টাকা খরচ করে ।
প্রতিবেশি একজন ওষুধ কেনার অভাবে ধুকে ধুকে মারা যাচ্ছে। তোমরা বাসার ছাদে, গাছের মগডালে ২০০/৩০০ বা তারও বেশী টাকা দিয়ে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার পতাকা ঝুলাও!!!
এটাও অনেকে জানে না, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বিনা কারনে অন্য একটি দেশের পতাকা ঝুলানো কতোটা গর্হিত অপরাধ!! টিভিতে দেখা যায় হাজার হাজার জনগণ আর্জেন্টিনার বিশাল পতাকা উড়িয়ে, বুকে মেসির ছবি, ভিনদেশী পতাকার ছবির স্টিকার লাগিয়ে ভাব নিয়ে মিছিল করে !
অথচ বিজয় দিবস বা আমাদের স্বাধীনতা দিবসে এদের কতো সুন্দর নীরবতা!
শুধু তাই নয়। ২০১০ সালে আমি মিরপুর ১ নাম্বার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পেছনে ছয় তলায় ছিলাম। প্রায়ই ছাদে যেতাম। ১৫ আগস্ট জাতিয় শোক দিবসেও বাংলাদেশের ততো পতাকা দেখা যায় নি। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের যতো পতাকা দেখা গেছে! মনে হয় বাংলাদেশ এদের কাম্য ছিলো না। এদের মিছিল দেখলে মনে হয় আমরা ল্যাটিন আমেরিকার দেশ হয়ে গেছি!!!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...