সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মার মৃত্য

মার মৃত্য






আগে বিভিন্ন দিবস আমি ঘটা করেই পালন করতাম । ফাদার্স ডে,মাদার্স ডে,ভ্যালেনটাইনস ডে,থ্যাংকসগিভিং ডে,মেমোরিয়েল ডে । আমার ঘটা করে পালন করা ছিলো ওইসব বিশেষ দিনের উপর পত্রিকায় আরটিক্যাল লেখা । মাকে নিয়ে লিখিনি আলাদা কোন লেখা । বিভিন্ন লেখায় মার প্রসঙ্গ এসেছে । বাবাকে নিয়ে আমার বিশেষ কোনো স্মৃতি নেই। বাবার কোনো ছবিও নেই। বাবা খুব রক্ষণশীল ছিলেন। ছবি তোলা পাপ মনে করতেন।
ছবিতে আমার মা । সেই কলেজ জীবনে । মা মারা যান ২০ আগস্ট,১৯৯৭ । আমি তখন নিউ ইয়র্কে ছিলাম । প্রথম খবর দিয়েছিলো ভাতিজা বাবলু হংকং থেকে ফোন করে । নিউ ইয়র্ক সময় ভোর পাঁচটা ।
আমি থাকতাম ৪৪৪ থার্ড এভিনিউতে । ম্যানহাটান বা নিউ ইয়র্ক সিটির গুরুত্বপূর্ণ জায়গা । এই সিটিকে ক্যাপিটাল অফ দ্য ওয়ার্ল্ড বলা হয় । জাতিসংঘ সদর দফতর, বেলভিউ হসপিটাল,টাইমস স্কোয়ার ,এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং,১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে সন্ত্রাসী বিমান হামলায় বিধ্বস্ত টুইন টাওয়ার বা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার,পাবলিক লাইব্রেরি,রকফেলার সেন্টার,এবিসি,এনবিসি,সিবিএস,ফক্স নিউজ চ্যানেল সবই ছিলো বাসা থেকে ওয়াকিং ডিসট্যান্স । একদিকে হাডসন রিভার আরেকদিকে ইস্ট রিভার । এসবের মাঝেই সময় কেটে যেতো কতো আনন্দে ! জীবিকা নির্বাহের জন্য শুধু চাকরি করতাম । বাকি সময় আমি ঘুরেই কাটাতাম ।
ভোর পাঁচটায় ঘুম চোখে ফোন টেনে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে...
*কাকা, আমি বাবলু হংকং থেকে ।
*এই সময়ে ফোন করেছো কেন ? জানো না আমার দুনিয়ার ঘুম সকালে ?
*সরি কাকা, কাকা একটা কথা ... ।
*কি বলো ।
*কাকা..ওমম...বুবু মারা গেছেন ।
* কখন ?
* বাংলাদেশ সময় আজ সকাল ।
* আচ্ছা রাখো ।
আজ আর না । অনেক গল্প আর বিচিত্র সব অভিজ্ঞতায় ভরপুর আমার জীবন । আরেক ভাতিজাকে ফোন করে বলেছিলাম, মার কবরটা ফুল দিয়ে ঢেকে দিস আমার পক্ষ থেকে । হ্যাপি মাদার্স ডে । মার কবরের ফুলে ঢাকা এই ছবি ভাতিজা আমাকে নিউ ইয়র্ক পাঠিয়েছিলো।

 May 8, 2016 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...