সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হাংগেরি



হাংগেরি
পূর্ব ইউরোপ যাকে বলে ইস্টার্ন ব্লক তথা সাবেক সভিয়েট ব্লকের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে ঘুরতে অনেক মজা । জিনিষপত্রের দাম খুব কম । হাঙ্গেরির মুদ্রার নাম ফরিন্ট (Forint) । ভিয়েনা থেকে বাসে বা ট্রেনে সরাসরি বুডাপেস্ট যাওয়া যায় । ভিয়েনা টু বুডাপেস্ট দূরত্ব মাত্র ১৩৪ মাইল বা ২১৫ কি.মি । হাঙ্গেরির রাজধানী বুডাপেস্ট শহরটি বেশ মনোরম । ড্যানিয়ুব নদীর তীরে এই শহর । ভিয়েনাও ড্যানিয়ুব নদীর তীরে । আবার চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগও ড্যানিয়ুব নদীর তীরে । ড্যানিয়ুব ইউরোপে খুব নাম করা নদী ।
সবাই জানেন বুডা আর পেস্ট নামে দুটি আলাদা শহরকে একসঙ্গে জোড়া হয়েছে । মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ড্যানিয়ুব নদী । বুডা শহরটি প্রাচীন , আর পেস্ট একবারেই আধুনিক । বাংলাদেশের চেয়ে একটু ছোট দেশ হাঙ্গেরি । তখন জনসংখ্যা ছিলো ৮০ লাখ । এখন এক কোটি । হাঙ্গেরি ল্যান্ড লক ( Land locked) মানে ভুবেষ্টিত দেশ যার কোন সমুদ্র সৈকত নেই । বালাতোন হ্রদই তাদের সী বীচ ।








উল্লেখ করার মতো হাঙ্গেরিতে অনেক কিছু আছে । তার মধ্যে বালাতোন হ্রদ (Balaton Lake) অন্যতম । বুডাপেস্ট থেকে বালাতোন যেতে দু’ঘন্টা লাগে । মধ্য ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই মিষ্টি পানির হ্রদটি ৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ । ছোট ছোট পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা এই হ্রদটি চোখ জুড়িয়ে দেয় । হাঙ্গেরিয়ানরা ছাড়াও প্রচুর বিদেশি এখানে আসে সাঁতার কাটা, মাছ ধরা ও নৌকা ভ্রমনের জন্য ।
হাঙ্গেরিকে নিয়ে অনেক রাজনৈতিক কথা বলা যায় । দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে হাঙ্গেরির ভুমিকা, ১৯৫৮ সালে ইমরে নেগিকে হত্যা , তারপর জানোস কাদার প্রেসিডেন্ট । ফেসবুকে এতোসব লেখা সময় সাপেক্ষ । আমি গাব্রিয়েলার সঙ্গে হাঙ্গেরি গিয়েছিলাম ১৯৯৩ সালে । তখন হাঙ্গেরির অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ । সমাজতন্ত্র আর নেই । রেস্তোরাঁয় খাবার পাওয়া যায় না বললেই চলে । বালাতোন হ্রদের পাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করে হাঙ্গেরিয়ান মেয়ে বন্ধু গাব্রিয়েলা একটা রেস্তোরাঁ পেলো । হাঙ্গেরিয়ান গুলাস স্যুপ খুব বিখ্যাত । কিন্তু সেদিন ওই রেস্তোরাঁয় গুলাস ছিলো না । অনেক ছবিই এখন আর নেই । হাঙ্গেরিতে তোলা কয়েকটা ছবি পেয়েছি মাত্র । খাবার সময় গাব্রিয়েলা ছবিটি তুলেছিলো । পুরনো ছবি দেখলে বা গান শুনলে সে সব দিনগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠে । কেমন আছে সেই চব্বিশ বছরের তরণী গাব্রিয়েলা এখন ? বেঁচে থাকলে বুখারেস্টে বসবাসকারী মধ্য বয়সী এক ভদ্রমহিলা । জীবন কতো বিচিত্র !!!
 May 16, 2016 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর