সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হাজার বছরের প্রতিশোধ নিলাম আজ



প্রসঙ্গ :- #হাজার বছরের #প্রতিশো
ধ নিলাম আজ’ একথা কেনো বলেছিলেন #ইন্দিরা গান্ধী?
১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামে প্রিয় মাতৃভূমির অভ্যুদয় হয়। নতুন জীবনের জয়গান গাইবার জন্য প্রিয় মাতৃভূমির প্রতিটি মানুষ খুশিতে আত্মহারা হয়েছিল। বাংলাদেশের আপামর জনতা সেদিন উৎফুল্ল হয়েছিল, আনন্দে মেতেছিল বাংলাদেশীদের মনপ্রান… জানেন কি, সেদিন আমাদের সাথে সাথে আরেকটি দেশও বেজায় উৎফুল্ল হয়েছিল?!
সেই দেশটার নাম আমাদেরই প্রতিবেশী বন্ধু ভারত। সেদিনই ভারতের পার্লামেন্টে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বিজয়ের মুষ্টি উঁচিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘হাজার সাল কা বদলা লিয়া’ অর্থাৎ হাজার বছরের প্রতিশোধ নিয়েছি!
সামান্য কাণ্ডজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ উপরের কথাটি শুনলে কোন প্রকার ব্যাখ্যা ছাড়াই বুঝতে পারে যে কথাটি তিনি কেন বলেছিলেন।
ইতিহাস থেকে পাই, ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাত্র ২৩ বছর পর ভেঙ্গে দুই টুকরা হয় মুসলিম দেশ পাকিস্তান। সুতরাং এখানে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় হাজার বছরের বদলা বলতে এ ২৩ বছর কে বলা হয়নি, ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানীদের সাথে এ ২৩ বছরের প্রতি আঙ্গুল তুলেণ নি। তিনি আঙ্গুল তুলেছেন অন্য কোথাও, আজ ইন্দিরার সে কথার কড়ায় গণ্ডায় জওয়াব আমরা পাচ্ছি।ইন্দিরা গান্ধীর ‘হাজার সাল কা বদলা লিয়া’ বলতে কিসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তা বুঝাতে আপনাদেরকে আবারো আরও একটু ইতিহাস গেলাতে বাধ্য হচ্ছি…
‘’ ৭১১ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মুহাম্মদ বিন কাশিম (৬৯৫-৭১৫ খৃ) খলিফা আল ওয়ালিদের আদেশে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের আনুগত্যে ভারতে অভিযান পরিচালনা করেন। তরুণ যুবক কাশিম ভারতের ক্ষমতাধর অত্যাচারী, লুণ্ঠনকারী শাসক রাজা দাহীরকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত ও নিহত করেন। অতঃপর সেখানে মুসলিম বাহিনী তাদের শাসন কর্তৃত্ব কার্যকর করেন। এটি ছিল ভারতে কোন মুসলিম শাসকের প্রথম আগমন। রাজা দাহীর স্থানীয় জনসাধারণের কাছে অত্যাচারের মূর্ত প্রতীক হলেও, সারা ভারতে তার প্রভাব ছিল অতুলনীয়। যার কারণে দাহীরের পতনে অন্যান্য শাসকদের ভিত করে তুলে। তবে মুসলমানেরা রাজ্য জয়ে এর পরে আর সামনে এগোয়নি। অতঃপর আফগান শাসক সুলতান মাহমুদ গজনবী (৯৭১-১০৩০ খৃ) ভারত বিজয় করেন। স্থানীয় অত্যাচারিত অসহায় হিন্দু জনগোষ্ঠীর সহযোগিতায় তিনি উত্তর ভারতের প্রায় সবটুকুই দখল করতে সক্ষম হন। স্থানীয় হিন্দুরাই তাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। যার কারণে তার বিরুদ্ধে গঠিত শক্তিকে নির্মূল করতে তিনি ১৭ বার ভারতে অভিযান পরিচালনা করেন। ১৭ বারই তিনি ভারতীয় শক্তির বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন এবং ভারতের সমুদয় শক্তিকে তিনি চুরমার করে দিতে সক্ষম হন। আরো পরে ভারতের বিখ্যাত ওলী মইনুদ্দিন চিশতী – রহঃ (১১৩৮–১২২৯ খৃ) মুসলিম ও নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের উপর পৃথ্বীরাজ চৌহানের (১১৪৯-১১৯২ খৃ) অত্যাচার, নির্যাতন ও বাড়াবাড়ির কথা জানিয়ে প্রতিকারের আশায় গজনীর সুলতানের কাছে চিঠি লিখেন। ইতিমধ্যে পৃথ্বীরাজ গজনী সুলতানের দখলীকৃত ‘তাবারীন্দ’ রাজ্য দখল করেন। যার কারণে গজনীর সুলতান (বর্তমান আফগান) শিহাব উদ্দিন ঘোরী (১১৫০-১২০৬ খৃ) ভারতে অভিযান পরিচালনা করেন। ঘোরীর সাঁড়াশি আক্রমণে ভারতের সকল বিদ্রোহী শক্তি চিরতরে লন্ড ভণ্ড হয়ে যায়। এই যুদ্ধে পৃথ্বীরাজ চৌহান পরাজিত ও গ্রেফতার হন। ঘোরীর এই বিজয়ের পর ভারতে কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর মত আর কোন শক্তিই অবশিষ্ট ছিল না। তখন থেকে ভারতে মুসলমানদের স্থায়ী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।‘’ (কালেক্টেড নজরুল ইসলাম টিপু আর্টিকেল)
একটু বিশ্লেষণ দরকার, এখন হিসাব করুন, ৭০০ থেকে ১৭০০ পর্যন্ত যদি ধরি তাহলে এখানে হাজার সাল হয়। উপমহাদেশের গত ১৯০০ বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখতে পাই এখানে প্রথমে হিন্দুরা শাসন করেছে ৭০০ বছর, মুসলিমরা শাসন করেছে ১০০০ বছর এবং ব্রিটিশরা করেছে ২০০ বছর, এরপর যখন ভারত আবার ব্রিটিশদের থেকে ক্ষমতা পায় তখন অলরেডি ভারতের দুদিকে মুসলিম দেশ।
সে ব্যাথা ভারত ভুলেনি, সুযোগের অপেক্ষায় থাকে ভারত, তারপর ১৯৭১……আবারো ইতিহাস, আমরা বাংলাদেশীরা বা মুসলিম রা তখন হিন্দুদের দ্বারা খুব নির্যাতিত হচ্ছিলাম, তারা আমাদেরকে মানুষ মনে না করে গোলাম মনে করত, তারা জমিদার হয়ে সারা বাংলায় অত্যাচার চালাত…
শুধুমাত্র ছোট একটা উদাহরন টানি, কবি গুরু রবিন্দ্রনাথ ছিলেন জমিদার, বাংলার মানুষ যাতে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে নিজেদের অধিকার না বুঝতে পারে, অফিস আদালত না করতে পারে, এবং হিন্দু জমিদাররা যাতে বাংলার মুসলমানদের রক্ত শুষে নিতে পারে সেজন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কখনো চান নি বাংলাদেশীরা শিক্ষিত হউক। তাই ১৯২১ সালে যখন বাংলাদেশের ঢাকায় ঢাকা ইউনিভার্সিটি করা হয় তখন এই রবিন্দ্রনাথ প্রচণ্ড বিরোধিতা করেছিলেন যাতে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় নাহয়, যাতে মুসলিমরা উচ্চশিক্ষিত হতে না পারে। হিন্দু জমিদারদের বা এমন রবীন্দ্রনাথ দের বাংলাদেশ বা মুসলিম বিদ্বেষী ঘটনার এমন আরও অজস্র প্রমান রয়েছে।
এখানে আরেকটু ইতিহাস টানা প্রয়োজন। ব্রিটিশরা যখন দেশ ভাগ করে দিয়ে যায় তখন কিন্তু ওরা জোর করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সাথে দিয়ে যায়নি বা ভারত বাংলাদেশকে জোর করে পাকিস্তানের সাথে পাঠায়নি বা যুদ্ধলদ্ধ উপহার হিসেবে পাকিস্তান বাংলাদেশকে পায়নি, জানেন কিভাবে এত দূরত্ব সত্বেও বাংলাদেশ পাকিস্তান একটি দেশ ছিল??? হিন্দু বা হিন্দু জমিদারদের অত্যাচারে আমরা বাংলাদেশীরা জোর দাবী জানিয়ে পাকিস্তানের সাথে গিয়েছিলাম, আমরা মুসলিম বলে।
তাই তাবলীগ জামাতে টঙ্গির তুরাগ নদীর তীরে ১০ কোটি মানুষের ঢল নামুক সেটা মেনে নেয়া হবে।
তবে মোহাম্মাদ বিন কাশিমের অনুপ্রেরণায় যদি এক জন জন্ম নেয়, সেটা ভারত বা ভারতের দোসর আওয়ামীলীগ বরদাশত করবেনা, তাকে জংগি বলে দমন করতেই হবে।
কারন মোহাম্মাদ বিন কাশিমের ইতিহাস বিজয়ের ইতিহাস।

June 26 at 9:54 AM ·

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর