সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার আলবদরের চাইতেও বেশী ঘৃনিত, নিকৃষ্ট ও পাপী

.
১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের আগে আমরা জানতাম মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা(FF) = ৫৭০০০, মুজিব বাহিনী(BLF) = ৩০০০ হাজার, কাদের সিদ্দিকি বাহিনী = ১০০০ সহ মোট = ৬১০০০।
এর মধ্যে আবার ৫৭০০০ মুক্তিযোদ্ধা(FF) সহ আওয়ামীলীগের মূল নেতৃত্ব তথা সৈয়দ নজরুল ইসলাম,তাজউদ্দিন আহমেদ, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান, আব্দুল মান্নান, আব্দুল মোমেন,ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, জেনারেল ওসমানী ও শেখ কামাল সহ ১৯৭০ সনের আওয়ামীলীগের ১৬৭ জন এমএনএ , ৩০০জন এমপিএ সবাই ৩০০০ মুজিব বাহিনীকে মুক্তিবাহিনী বলে স্বীকার করতেন না। তাঁরা এই ৩০০০ মুজিব বাহিনীকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধ বা শত্রু বলে মনে করতেন। যাক,তবুও ধরে নিলাম ১৯৭৫ এর ১৫ই অগাস্টের আগে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৩০০০ বিতর্কিত মুজিব বাহিনী সহ ৬১০০০।
জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে তাঁকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ বলা শুরু করে শুধু আওয়ামীলীগের লোকেরা ও ভারতীয় সেনারাই যুদ্ধ করে নাই। আমরাও যুদ্ধ করেছি। জিয়াউর রহমানকে সামনে রেখে এই বক্তব্য দিয়ে ২০,০০০ নতুন মুক্তিযোদ্ধা যোগ হয়। সংখ্যা হলো ৮১০০০।
১৯৮৪ সালে এরশাদ ক্ষমতায় এসে তাকে সামনে নিয়ে কিছু দালাল, সুবিধাবাদী যোগ করে নতুন ৪০,০০০ হাজার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা।
একই সাথে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮১,০০০+৪০,০০০= ১২১০০০হাজার।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি আহাদ চৌধুরী ও তাঁর সমর্থকেরা দাবী তুলে ,আসল মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে নকল মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশী। তাই নতুন ভাবে তালিকা করা দরকার৷ তারা পুনরায় নতুনভাবে তালিকা তৈরী করার কাজ শুরু করেন।
আহাদ চৌধূরীরা মুক্তিযোদ্ধার নতুন ভাবে লিস্ট করে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাড় করান ২ লাখ। অভিযোগে জানা যায় ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সন পর্যন্ত আহাদ চৌধূরী ও তাঁর সমর্থকেরা প্রতিজনের কাছ থেকে ১০,১৫,২০,২৫ হাজার পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে ৮০,০০০ হাজারের বেশী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার জন্ম দেন।
আজ ২লাখ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ১লাখ ৪০হাজার মুক্তিযোদ্ধাই ভূয়া। এই এক লাখ ৪০হাজার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা নামক দুষ্কৃতিকারীরা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। এই এক লাখ ৪০ হাজার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে কিছু লিখতে আমার ঘৃনা হয়। এরা রাজাকার আলবদরের চাইতেও বেশী ঘৃনিত, নিকৃষ্ট ও পাপী।
.
২০০৮ সালে লিখিত।
আবু মোহাম্মদ খান বাবলু (দেখুন ভিডিও - ১ম কমেন্টে}
১৯৭১ ও অনেক অজানা কথা
( আবু মোহাম্মদ খান বাবলু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতের মূর্তি পাহাড়ে অবস্থিত মুজিব ক্যাম্প-এ ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিকট থেকে উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ৬ নং সেক্টরের দেওয়ানগঞ্জ/হেমকুমারী সাব সেক্টরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অধীনে সেকশন ও প্লাটুন কমান্ডার হিসেব যুদ্ধ করেছেন তিনি।
--
‘১৯৭১ ও অনেক অজানা কথা’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন ২০০৮ সালে। গ্রন্থটিতে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখেছেন তিনি। এ ছাড়াও তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে। যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে। ১৯৭৭-৭৯ সাল পর্যন্ত সাপ্তাহিক একটি পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৫ বছর ‘সাপ্তাহিক পরিবর্তন’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।....বই-এর ভেতরের ফ্ল্যাপ থেকে)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...