"... ভারতে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিলেন স্বনামধন্য সাহিত্যিক এবং চিত্র নির্মাতা কাজী জহির রায়হান। তিনি জেনেছিলেন অনেক কিছু, চিত্রায়িতও করেছিলেন অনেক দুর্লভ দৃশ্যের। কিন্তু অতসব জানতে বুঝতে গিয়ে তিনি বেজায় অপরাধ করে ফেলেছিলেন। স্বাধীনতার ঊষালগ্নেই তাকে সেই অনেক কিছু জানার অপরাধেই প্রাণ দিতে হয়েছে বলে সকলের ধারনা।
ভারতের মাটিতে অবস্থান কালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের চুরি, দুর্নীতি, অবৈধ,
ব্যবসা, যৌন কেলেংকারী, বিভিন্ন রূপ ভোগ-বিলাস সহ তাদের বিভিন্নমূখী
অপকর্মের প্রামাণ্য দলীল ছিল - ছিল সচিত্র দৃশ্য। আওয়ামী লীগের অতি সাধের
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজী জহির রায়হানের এতবড় অপরাধকে স্বার্থান্বেষী
মহল কোন্ যুক্তিতে ক্ষমা করতে পারে? তাই বেঁচে থেকে স্বাধীনতার পরবর্তী রূপ
দেখে যাওয়ার সুযোগ আর হয়নি জহির রায়হানের।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩নম্বর আসামী স্টুয়ার্ড মুজিবেরও ঘটেছিল এই পরিণতি। এই দায়িত্বশীল নিষ্ঠাবান তেজোদীপ্ত যুবক স্টুয়ার্ড মুজিব আমার ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে এবং পরে ৮ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছে। তার মত নির্ভেজাল ত্বরিতকর্মা একজন দেশপ্রেমিক যোদ্ধা সত্যিই বিরল। প্রচন্ড সাহস ও বীরত্বের অধিকারী স্টুয়ার্ড মুজিব ছিল শেখ মুজিবের অত্যন্ত প্রিয় অন্ধভক্ত।
মাদারীপুর থানার অন্তর্গত পালং অধিবাসী মুজিবকে দেখেছি বিদ্যুতের মতই এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটোছুটি করতে। কি করে মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করা যায়, ভারতের কোন্ নেতার সাথে যোগাযোগ করলে মুক্তিযুদ্ধের রসদ লাভ করা যায়, কেবল সেই চিন্তা এবং কর্মেই অস্থির দেখেছি স্টুয়ার্ড মুজিবকে। মুজিব ভারতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেক কুকীর্তি সম্পর্কেই ছিল ওয়াকেবহাল। এতবড় স্পর্ধা কি করে সইবে স্বার্থান্বেষী মহল। তাই স্বাধীনতার মাত্র সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই ঢাকা নগরীর গুলিস্তান চত্বর থেকে হ্যাইজ্যাক হয়ে যায় স্টুয়ার্ড মুজিব। এভাবে হারিয়ে যায় বাংলার আর একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র।
ভারতে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরগুলোও ছিল নানান কুকর্মে লিপ্ত আওয়ামী নেতৃত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই সচেতনভাবেই তারা ট্রেনিং শিবিরগুলো এড়িয়ে চলত। এ সকল ট্রেনিং শিবিরে অবস্থান করত সাধারণ জনগণের সন্তান, যাদের ভারতের অন্যত্র কোন ধরনের আশ্রয় ছিল না। যারা হোটেল, কিম্বা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে তারা আর মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরের ধারে-কাছেও ভেড়েনি, অংশগ্রহণ করাতো দুরেই থাক।
এ ধরনের সুবিধাভোগীগের নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ভাগে ভারতীয় স্পাই সংস্থা ‘র’ (RAW) মেজর জেনারেল ওভানের মাধ্যমে ‘মুজিব বাহিনী’ নামে একটি বিশেষ বাহিনী গঠনে হাত দেয়। এই বাহিনীতে বাংলাদেশ ছাত্র লীগের অবস্থাসম্পন্ন সদস্যরাই কেবল অন্তর্ভুক্ত ছিল। এদের ট্রেনিং পরিচালনা করা হয় ভারতের ‘দেরাদূন’ শহরে।
তাদের জন্য বিশেষ সুবিধে এবং অন্যান্য আরাম-আয়েসের সুব্যবস্থা ছিল। ‘মুজিব বাহিনী’ গঠন ছিল বাংলার সাধারণ জনগণের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের বিকল্প ব্যবস্থা। ‘মুজিব বাহিনীর’ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের পুর্বেই যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। তাদের দুর্ভাগ্য বা সৌভাগ্যই বলা চলে যে, সাধারণ মানুষের মুক্তিযুদ্ধে তাদের রক্ত ঝরাতে হয়নি। তাদের অভিজাত রক্ত সংরক্ষিত করা হয়েছিল স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ত ঝরানোর লক্ষ্যে॥"
- মেজর (অব:) এম এ জলিল / অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা ॥ [ কমল কুঁড়ি প্রকাশন - ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ । পৃ: ৩৯-৪১ ]
·
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩নম্বর আসামী স্টুয়ার্ড মুজিবেরও ঘটেছিল এই পরিণতি। এই দায়িত্বশীল নিষ্ঠাবান তেজোদীপ্ত যুবক স্টুয়ার্ড মুজিব আমার ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে এবং পরে ৮ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছে। তার মত নির্ভেজাল ত্বরিতকর্মা একজন দেশপ্রেমিক যোদ্ধা সত্যিই বিরল। প্রচন্ড সাহস ও বীরত্বের অধিকারী স্টুয়ার্ড মুজিব ছিল শেখ মুজিবের অত্যন্ত প্রিয় অন্ধভক্ত।
মাদারীপুর থানার অন্তর্গত পালং অধিবাসী মুজিবকে দেখেছি বিদ্যুতের মতই এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটোছুটি করতে। কি করে মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করা যায়, ভারতের কোন্ নেতার সাথে যোগাযোগ করলে মুক্তিযুদ্ধের রসদ লাভ করা যায়, কেবল সেই চিন্তা এবং কর্মেই অস্থির দেখেছি স্টুয়ার্ড মুজিবকে। মুজিব ভারতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেক কুকীর্তি সম্পর্কেই ছিল ওয়াকেবহাল। এতবড় স্পর্ধা কি করে সইবে স্বার্থান্বেষী মহল। তাই স্বাধীনতার মাত্র সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই ঢাকা নগরীর গুলিস্তান চত্বর থেকে হ্যাইজ্যাক হয়ে যায় স্টুয়ার্ড মুজিব। এভাবে হারিয়ে যায় বাংলার আর একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র।
ভারতে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরগুলোও ছিল নানান কুকর্মে লিপ্ত আওয়ামী নেতৃত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই সচেতনভাবেই তারা ট্রেনিং শিবিরগুলো এড়িয়ে চলত। এ সকল ট্রেনিং শিবিরে অবস্থান করত সাধারণ জনগণের সন্তান, যাদের ভারতের অন্যত্র কোন ধরনের আশ্রয় ছিল না। যারা হোটেল, কিম্বা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে তারা আর মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরের ধারে-কাছেও ভেড়েনি, অংশগ্রহণ করাতো দুরেই থাক।
এ ধরনের সুবিধাভোগীগের নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ভাগে ভারতীয় স্পাই সংস্থা ‘র’ (RAW) মেজর জেনারেল ওভানের মাধ্যমে ‘মুজিব বাহিনী’ নামে একটি বিশেষ বাহিনী গঠনে হাত দেয়। এই বাহিনীতে বাংলাদেশ ছাত্র লীগের অবস্থাসম্পন্ন সদস্যরাই কেবল অন্তর্ভুক্ত ছিল। এদের ট্রেনিং পরিচালনা করা হয় ভারতের ‘দেরাদূন’ শহরে।
তাদের জন্য বিশেষ সুবিধে এবং অন্যান্য আরাম-আয়েসের সুব্যবস্থা ছিল। ‘মুজিব বাহিনী’ গঠন ছিল বাংলার সাধারণ জনগণের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের বিকল্প ব্যবস্থা। ‘মুজিব বাহিনীর’ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের পুর্বেই যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। তাদের দুর্ভাগ্য বা সৌভাগ্যই বলা চলে যে, সাধারণ মানুষের মুক্তিযুদ্ধে তাদের রক্ত ঝরাতে হয়নি। তাদের অভিজাত রক্ত সংরক্ষিত করা হয়েছিল স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ত ঝরানোর লক্ষ্যে॥"
- মেজর (অব:) এম এ জলিল / অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা ॥ [ কমল কুঁড়ি প্রকাশন - ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ । পৃ: ৩৯-৪১ ]
·
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন