সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

৭১ বিরোধী আওয়ামীলীগ -- "Who told you, to revolt" ?

৭১ বিরোধী আওয়ামীলীগ -- "Who told you, to revolt" ?

"বিমান হামলার দু'তিন দিন আগের ঘটনা। ডিফেন্স পজিসন গুলো তদারকির রুটিন কাজে ব্রাম্মন বাড়িয়া যাবার সময় সিলেট সড়কের সরাইলের কাছে হটাৎ করে তাহের উদ্দিন ঠাকুরের সাথে দেখা। রাস্তার পাশে একটা গাছ তলাতে সে দাঁড়িয়ে, ছোটখাটো একদল জনতা তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে।
ঠাকুরের সাথে আমার ছাত্রজীবনের পরিচয়। ১৯৬১ সালে ঢাকা হল ছাত্র সংসদে ছাত্র ইউনিয়ন প্যানেলে ঠাকুর জিএস ও আমি সহ-ক্রীড়া সম্পাদক ছিলাম।
স্বভাবত আমি গাড়ি থেকে নেমে সোৎসাহে ২৭ তারিখে আমার বিদ্রহের কথা জানালাম। ভবিষ্যৎ কর্ম পন্থা সম্পর্কে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা জানতে চাইলাম।
আমাকে হতবাক করে দিয়ে ঠাকুর রীতিমত ক্ষেপা হয়ে গেলো। সে বলেঃ
“I don't know anything. I've nothing to do with you. Who told you, to revolt? We didn't ask you to do so...you people in uniform always complicate the situation" "
"আমি কিচ্ছু জানিনা, আমার করার কিছুই নেই। তোমাদের বিদ্রোহ করতে বলেছে কে? আমরা তোমাদের কাছে এমন কিছুই চাইনি….তোমরা পোশাকীরা সব সময় পরিস্থিতি জটিল করে ফেলো"
৪র্থ লাইনে মনোযোগ দেন। ঠাকুর বলছে We didn't ask you to do so… আমরা তোমাদের কাছে এমন কিছুই চাইনি। তিনি “We” অর্থাৎ “আমরা” বা সমষ্টিকের পক্ষে বলছেন।
আমরা বলতে কাদের কথা বলেছে? শাফায়াতের প্রশ্ন কি ছিল? কাদের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়ে ছিলেন জামিল? ঠাকুর কোন সমষ্টির পক্ষে উত্তেজিত হলেন? বিদ্রোহের দায়ে কাকে/কাদের ভৎসনা করেন ঠাকুর! বিদ্রোহের ফলে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতিতে সৈনিকদের ওপর চটলেন কেন, ১৯৭০ সালে লীগের নির্বাচিত সাংসদের চোখে ভূল কে? ঠাকুরের বক্তব্য আমাদের কি ইংগিত করে!
আবার আসি কর্নেল শাফায়াৎ জামিলের কাছে।
"তাহের ঠাকুরের মনোভাব দেখে যারপরনাই বিস্মিত হলাম। বংগবন্ধুর আহবানে চাকুরী নিশ্চায়তা প্রলোভন, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্যা তুচ্ছ করে দেশের জন্য, নিরস্ত্র জনগনের জীবন রক্ষায় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লাম, আর একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এই লোক বলছে #Who told you to #revolt? "
ঘটনাঃ ৪এপ্রিল ১৯৭১
"সত্য উন্মোচিত হোক"
সুত্র :
-----
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য-আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর - পৃষ্ঠা ৩৭
কর্নেল শাফায়াৎ জামিল (অব:)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর