সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পিকিউলিয়ার জীবন

আমার জীবন সবসময় একটু পিকিউলিয়ার । সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ না ধুয়ে চা খেয়ে ফ্রেশ হয়ে আবার শুয়ে আছি । আজ সকাল ঠিক সাড়ে নয়টায় আমার জিপি নাম্বারে একটা মিস কল এলো বাংলালিংক নাম্বার থেকে । অপরিচিত নাম্বার । সক্কাল বেলা আমার মেজাজ খারাপ করার জন্য যথেষ্টরও বেশি । কারন মিস কল । ইউরোপ আমেরিকায় "মিস কল" শব্দটা আমি কখনোই শুনিনি । কারো প্রয়োজন হলে কাউকে সে কল করবে এটাইতো স্বাভাবিক । মিস কল , মিস্টার কল, মিসেস কল এসব আবার কী ?
১০ মিনিট পর আবার কল এলো । আমি ধরে বললাম ,গুড মর্নিং । ওপাশ থেকে এক মেয়ে বললো, আপনি এতো কিপটা ? আমি বললাম, মানে ? সে বললো , মিস কল দিলাম কল ব্যাক করলেন না যে ? আমি মেজাজ খারাপ করে বললাম, কে বলছেন ? কোত্থেকে বলছেন ? সে উলটো জিজ্ঞেস করলো, আপনি কি করিম চৌধুরী ?
হ্যাঁ । সে তার নাম বললো । কুড়িগ্রাম থেকে বলছে । বিবাহিতা । ২৫ বছর বয়সি । ৭ বছরের একটা মেয়ে আছে । স্বামী সংসার সবই আছে । কণ্ঠস্বর খুব মিষ্টি মেয়েটির । কোন ভনিতা ছাড়াই সে বললো , করিম, আপনাকে ভালোবাসি আমি ।
আমি বললাম থ্যাংক ইউ । আমার সৌভাগ্য । আমার নাম্বার কোথায় পেলেন ? আমার ফরটিন জেনারেশনের কেউতো কুড়িগ্রাম থাকা দূরের কথা যায়নি কখনো ।
-আমি "মৌচাকে ঢিল" ম্যাগাজিনে আপনার "থ্যাংকসগিভিং ডে " আর "কেলোসাহাটশির তীরে" এই দুটি লেখা পড়েছি । লেখার শেষে ফোন নাম্বার আছে সেখান থেকে আপনার নাম্বার নিয়েছি । আমি বললাম , এটাতো ২০১২ সালের লেখা । এখন ২০১৫ সাল । থ্যাংক ইউ ট্যাংক ইউ বলে রাখলাম ।
ওমা ! দুই ঘন্টা পর আবার ফোন । তার অনেক কথা । কোটি কোটি কথা । শেষ কথা সে আমাকে ভালোবাসে । দুপুর তিনটায় আবার ফোন । আরো কথা । আমি বিজি বলায় সে অনুনয় করে বললো, সে আমাকে ভালোবাসে । আমি যেনো তার ভালোবাসার মূল্য দেই । আমি বললাম , আলবৎ । মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসা থাকতেই হবে । সে বললো ,আরে এই ভালোবাসা না । তোমার আমার আলাদা ভালোবাসা । আমি খেয়াল করলাম সে আমাকে " তুমি " বলা শুরু করেছে । আমি বললাম , আমিতো তোমার অনেক বড় । সে বললো , পুরুষের আবার বয়স কী ? কোন মতে রাখলাম । সন্ধ্যা ৭ টায় আবার ফোন । বেশি ফোন করার জন্য আমি তাকে ধমক দিলাম । সে কেঁদে ফেললো । আমি শান্তনা দিলাম । সে বললো , স্বামী সন্তান সব ছেড়ে সে আমার কাছে চলে আসবে । ফোনে সে আমাকে চুমুও খেয়েছে !!! আবার রাতে ফোন করবে বলেছে ।
আমার কাজ বাড়ালো আর কী ! এখন আবার মোবাইল খোঁচাখুঁচি করো । কল ব্লক সার্ভিস একটিভেট করো । ঝামেলা হলে জিপির কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে কল করে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলো । তারপর আমাকে ভালোবাসার মেয়েটির নাম্বার ব্লক করা ।
আহারে অশান্তিরে !!!

 August 4, 2015

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর