সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দৃষ্টিভঙ্গী

দৃষ্টিভঙ্গী

একেকজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী, চিন্তা চেতনা, ব্যক্তিত্ব আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক । আমি যেমন আমার মতো তেমনি আরেকজনও তার মতো । তবে একসাথে পথ চলতে গেলে, বা বন্ধু হলে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই তা প্রায় কাছাকাছি হতে হয় । নইলে যতো আন্তরিক সম্পর্কই হোক না কেন এক সময় সে সম্পর্ক আর থাকে না বা টিকিয়ে রাখা যায় না, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও । এমন কি দাম্পত্য জীবনও নয় । ধরা যাক, আমি একজন মডারেট মুসলিম । আরেক বন্ধু কট্টর মুসলিম বা মৌলবাদী । তার সঙ্গে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলা যেতে পারে কিন্তু এক সময় সেই চলা আর হবে না । যেমন গত সপ্তাহে টানা ছয়দিন বৃষ্টি ছিলো । আমি বিরক্তি প্রকাশ করতেই একজন বললো, বৃষ্টি হলো আল্লাহর রহমত ।
আমি তীব্র আপত্তি করে বললাম, এসব ফালতু কথা কি না বললেই নয় ? আল্লাহর কি শুধু রহমতই আছে ? গজব নেই ?
দেশের কোটি কোটি মানুষের বিরাট অসুবিধা । রাস্তাঘাট সব ডুবে গেছে । মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে । বৈরি আবহাওয়ায় ট্রান্সপোর্ট কষ্ট (cost)বেড়ে যাওয়ায় সবজি, মাছ ইত্যাদির দাম বেড়ে গেছে । সময় মতো বাড়ি ফেরা যাচ্ছে না । রিক্সা, সিএনজির ভাড়া তিন চারগুন বেড়ে গেছে । সিলেট, নীলফামারিসহ উত্তর বঙ্গের অনেক জেলায় বন্যা । মানুষের বাড়িঘর, ফসলি জমি সব ডুবে গেছে, অনেক মাছের প্রজেক্ট পানিতে ভেসে কোটি কোটি টাকার মাছ চলে গেছে । ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত । মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠেছে । রান্না করার কোনো অবস্থা নেই । খাবার নেই, ত্রাণের জন্য হাহাকার । মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত । বান্দরবান, রাঙামাটিতে পাহাড় ধ্বসে মানুষের মৃত্যু ।
এটা আল্লাহর রহমত হয় কিভাবে ? এটাতো আল্লাহর গজব । সে মুখ কালো করে ফেললো । আবার গত দু’দিন অসহ্য গরম পড়ায় সে বললো, আল্লাহ এসব দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করছে । সব কিছুতেই আল্লাহকে টেনে এনে অযথা সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষকে ভীতশ্রদ্ধ করে তোলা হচ্ছে । তাদের সঙ্গে একজন উদারপন্থী মুসলিমের বন্ধুত্ব সাময়িক হলেও হতে পারে তবে একসময় বিচ্ছেদ অনিবার্য ।
তেমনি সামাজিক, ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয়, পারিবারিক, রাজনৈতিক দৃষ্টিতে অমিল থাকলেও এক সময় সে বন্ধুত্ব ভেঙে যাবেই । ফেসবুকেও এমন অনেক হয় । যেমন কয়েকদিন আগে আমি ১০০% নিশ্চিত হয়ে একটা তথ্যমূলক লেখা লিখেছিলাম বইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে । একজন কমেন্ট করলেন
“এই বই সিআইএ কম্পোজ করেছে”।
অথচ তার কাছে এব্যাপারে কোনো তথ্য নেই । স্বাভাবিকভাবেই তার কমেন্ট আমি ভালো নজরে দেখিনি । লেখকের চেয়ে কমেন্টকারীকে বেশি প্রাজ্ঞ হতে হয় । এ নিয়ে ফেসবুকেও অনেকের সঙ্গে মনোমালিন্য হয় ।

August 4, 2017 ·

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...