সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইন্দিরা 'গান্ধী' হলেন কিভাবে ?

ইন্দিরার পিতা- জওহরলাল নেহরু, স্বামী - ফিরোজ জাহাঙ্গির খান ।
 তবে তিনি ইন্দিরা গান্ধী হলেন কিভাবে ?



- সেদিন ভারতীয় রাজনীতি বিষয়ে এক পরিচিত কলেজ প্রভাষকের সাথে আলাপ হচ্ছিল। একথা সেকথার পর এক পর্যায়ে তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, ইন্দিরা গান্ধী মহাত্মা গান্ধীর কন্যা না নাতনী।
আমি আশ্চর্য হইনি। কারণ আমার জানামতে আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ এরকমই মনে করে। উত্তর দিলাম- পুত্র বধু।
দেখলাম লেকচারার সাহেবের ইতিহাস জ্ঞান বেশ টনটনে।
তিনি আমার নির্বুদ্ধিতায় মর্মাহত হয়ে বললেন- ধুর মিয়া, ইন্দিরা গান্ধী বিয়ে করেছিলেন এক পার্সিয়ানকে, নাম ফিরোজ গান্ধী,ধর্মে অগ্নিউপাসক।
তাঁর সাথে অনেক আলাপ হল। সেদিকে না গিয়ে আসল কথায় আসি।
ইন্দিরা গান্ধী । পুরো নাম ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহরু। স্বামী ফিরোজ জাহাঙ্গির খান । পিতা জওহর লাল নেহরু। মা কমলা নেহেরু, দাদা মতিলাল নেহেরু।
দেখা যাচ্ছে স্বামীর দিক, পিতার দিক কোন দিকেই 'গান্ধী' নেই। তাহলে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহরু ইন্দিরা গান্ধী হলেন কিভাবে?
ফিরোজ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টির একজন নবীন সদস্য ছিলেন এবং এলাহাবাদে পার্টির কাজের সুবাদে ইন্দিরা এবং তাঁর মা কমলা নেহরুর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয় এবং তিনি নেহেরু পরিবারের খুব কাছের একজন হয়ে যান । ১৯৩৩ সালে তিনি ইন্দিরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ,তখন এটা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কমলা নেহেরু।ইন্দিরা নেহেরুর বয়স তখন মাত্র ১৬ ।
১৯৩৬ সালে কমলা নেহেরু মারা যান এবং ইন্দিরা তখন খুব একা হয়ে যান।পিতা জওহরলাল তাকে অক্সফোর্ডে পড়তে পাঠান। ফিরোজ গান্ধী আরো আগ থেকেই অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করছিলেন। অক্সফোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়টাতেই ইন্দিরা এবং ফিরোজ খুব ঘনিষ্ঠ ভাবে একে অপরের কাছে চলে আসেন।
সেই সময়েই ইন্দিরা তার পিতা জওহরলাল নেহেরু কে প্রায় ১০০ টা চিঠি পাঠিয়েছিলেন।চিঠিতে একটা মাত্র বাক্য লেখা থাকতো। “বাবা, আমি ফিরোজ কে ভালবাসি” ।
জহরলাল নেহরু এতে বেশ বিচলিত ও বিব্রতবোধ করেন। কারণ সে সময় অসম ধর্মের বিয়েকে ভারতে খারাপ চোখে দেখা হত। এই বিবাহ হলে খবরের কাগজে নানা কথা লেখা হতে পারে ...তাই কোনো উপায় না দেখে বিষয়টা নিয়ে জহরলাল মহাত্মা গান্ধীর শরণাপন্ন হন।
গান্ধীজি ইন্দিরা ও ফিরোজের সাথে আলাপ করে তাদের অনড় অবস্থান বুঝতে পারেন।
- আমার পুত্রের সাথে ইন্দিরাকে বিয়ে দেবে ? গান্ধীর এমত প্রস্তাবে চমকে উঠেন জহরলাল নেহরু। তিনি জানান, আমার কোন আপত্তি নাই, তবে ইন্দিরা রাজি হবে না ।
গান্ধী বলেন, ইন্দিরা রাজি। ফিরোজকে আমি দত্তক নেব। সে হবে আমার পুত্র ফিরোজ গান্ধী।
পরে সে মতেই ফিরোজ গান্ধীর সাথে হিন্দু রীতিতে বিয়ে হয় ইন্দিরা নেহরুর। ইন্দিরা হয়ে যান 'ইন্দিরা গান্ধী'।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর