সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফেসবুক : উপদেশ, কমেন্ট, ছবি এবং বন্ধু সংখ্যা


ফেসবুক : উপদেশ, কমেন্ট, ছবি এবং বন্ধু সংখ্যা

অনেক সময় আমরা অনেক কিছু বলি বা করি যা নিজেদের অজান্তেই ভুল বলে প্রমাণিত হয় । কিছু ভুল আছে তা পরে বুঝলেও কিছুই করার থাকে না । সেই ভুলে অনেক ক্ষতি যেমন হয় তেমনি অনেক সময় প্রিয়জনকেও হারাতে হয় । কিছু ভুল মার্জনীয় হলেও অনেক ভুলই মার্জনার বাইরে । আগে অনেককেই অনেক বিষয়ে বলতাম । এখন আর বলি না । কি দরকার ? অযথা মানুষকে পরামর্শ বা উপদেশ দেয়ার ? আমি যা বলবো তা-ই ঠিক তা নির্ধারণের মাপকাঠিই বা কী ? মানুষ সব সময় তার নিজের পছন্দ মতো কথাই শুনতে চায় । ফেবুতেও আমরা কার বন্ধু হবো বা হবো না তা নিজেকেই নির্ধারণ করতে হয় । বেশিরভাগ অজানা মানুষই ফেসবুকে বন্ধু হয় । নিজের আত্নীয়স্বজন বা বন্ধুতো আর ৪০/৫০ জনের বেশি না কারোই । তাহলে এই শত শত হাজার হাজার বন্ধু আসে কোত্থেকে ? দূর সম্পর্কের কোনো আত্নীয়ও যে আমার খুব শুভাকাঙ্ক্ষী হবে এতে কোনো নিশ্চয়তা নেই । বাংলাদেশে টুইটার বা অন্য কোনো মাধ্যম বেশি ব্যবহার হয় না যতোটুকু ফেসবুক হয় । টুইটারের ভাষা ইংরেজি। ফেবুতে প্রায় ৮০% লোক ভুল বানানে বাংলা লিখে! আবার ইংরেজি?
এখানে পাঠকের চেয়ে লেখক বেশি ! অনেকদিন থেকে লক্ষ্য করে আসছি, ফেবুতে লেখার চেয়ে ছবির কদর বেশি । একটা সুন্দর লেখাতে মানুষ অনেক কিছু শিখতে পারে কিন্তু দেখা গেছে, একটা ছবি দিলে লাইক কমেন্ট ইত্যাদি বেশি থাকে । মেয়েদের ছবি হলে তো আর কথাই নেই ! ছেলেরা হুমড়ি খেয়ে পরে। লাভ রিয়েক্ট, Awesome, সুপার, লোভনীয়, কি যে লাগছে, তুমি এতো সুন্দর, ভাষা হারিয়ে ফেলেছি,জটিল, ঝাক্কাস, Wow জাতীয় কতো কিসিমের কমেন্ট!
অনেকেই ভিন্নমত পোষণ করে আমাকে বলেছেন যে, ফেসসবুকে যে কেউ যে কোন কিছু লিখতে পারে ! এটা তার স্বাধীনতা । আমি মনে করি তা ঠিক নয় । যে কোনোভাবেই যে কেউ ফেসবুক একাউন্ট খোলতে পারে । ক্লাশ সিক্স সেভেনের ছেলেমেয়েরা যখন লিখে
“ অতীত ভুলতে চাই”।
তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে মনে, সে কোন অতীত ভুলতে চায় ? দু’তিন বছর আগে যে বিছানায় পেশাব করেছিলো তা ভুলতে চায়, না অন্য কিছু ? ফেসবুক কোনো পত্রিকা নয় যে এখানে নির্দিষ্ট শিক্ষিত পাঠক শ্রেণি থাকবে । পোষ্ট পাবলিক করা থাকলে যে কেউ তা দেখতে পায় ।
ফেসবুকে লেখার বা ছবি দেয়ার স্বাধীনতা আছে বলে যা খুশি তা কি লেখা যায় বা যেমন খুশি তেমন ছবি দেয়া যায় ? আমি মনে করি না । মেয়েদের ছবি দেয়া ফেসবুকে খুব রিস্কি। অনেক মেয়েরাই দু'দিন পর পর নিজের আকর্ষণীয় ছবি ফেবুতে আপলোড করে। যা কপি করে যে কেউ রেখে দিতে পারে। ফটোশপে সেই ছবি নগ্নও করে অনেকে।
কয়েকমাস আগে শামীম আমাকে বললো, চৌধুরী চলেন, দুর্গাপুর এক বিচার দেখে আসি । আমি বললাম, কিসের বিচার ? শামীম জানালো, ফেসবুকের বিচার । আপনি মজা পাবেন । গেলাম উনার শ্বশুর বাড়িতে । বিচার শুরুর আগে উনার ব্রাদার ইন ল ( সম্মন্ধি) আমাকে কিছু ছবি দেখালো উনার মোবাইল ফোনে সেভ করে রাখা স্কৃনশট থেকে ।
এলাকার এক ছেলে উনাদের কাছের এক মেয়ের ছবি দিয়ে ফেবুতে লিখেছে ‘সে তাকে ভালোবাসে’। এটাই বিচারের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ । এটা অনেকেই স্বীকার করবেন যে, ফেসবুকে পোষ্টের কারণে অনেককেই হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হতে হয়েছে । অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন । এগুলো রাজনৈতিক হলেও ব্যক্তিগত কারনে আরো ভয়ংকর ঘটনা আমি জানি যা ফেসবুকের কারনে হয়েছে । অনেক কাপলের সংসার পর্যন্ত ভেঙে গেছে । বাংলাভিশনে ‘আমি এখন কি করবো’ অনুষ্ঠানে অনেকেই প্রেম, ভালোবাসা ও অনেক স্বামী-স্ত্রী সমস্যা জানিয়ে প্রশ্ন করলে ড. মেহতাব খানম প্রথম যে প্রশ্নটি করেন তা হচ্ছে,
“ তার সাথে কি কারো ফেসবুকে বা অন্য কোনো মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছে”?
এসব আরো অনেক কারনে আমার সাড়ে আট বছরের ফেসবুক জীবনে বন্ধুর সংখ্যা মাত্র ৮৮৪ জন।
এতে আমি কোনো সমস্যা দেখছি না । আমি এও মনে করি, সব বন্ধুকে আনফ্রেন্ড করলেও কোনো ক্ষতি নেই । পোষ্ট পাবলিক করা থাকলে যে কেউ তা পড়তে পারে ।

 August 28, 2017

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর