সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শিমন পেরেজ


শিমন পেরেজ











শিমন পেরেজ (এই শব্দ সম্পর্কে listen (সাহায্য·তথ্য); হিব্রু ভাষায়: שמעון פרס‎; জন্ম: ২ আগস্ট, ১৯২৩-২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬) উইজনিউ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পোলীয় বংশোদ্ভূত বিশিষ্ট ইসরায়েলী রাজনীতিবিদ। ২০০৭ থেকে ২০১৪ মেয়াদে ইসরায়েলের ৯ম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘ ৬৬ বছরের অধিক রাজনৈতিক জীবনে তিনি দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও আরও দুইবার স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্বসহ ১২বার মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন। নভেম্বর, ১৯৫৯ সালে নেসেটে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
*প্রারম্ভিক জীবন
সাইমন পার্স্কি নামে আইজাক ও সারা পার্স্কি দম্পতির সন্তান হিসেবে পোল্যান্ডের উইজনিউ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাড়ীতে তাঁরা হিব্রু, ইদিস ও রুশ ভাষায় কথা বলতেন। এছাড়াও, বিদ্যালয়ে তিনি পোলীয় ভাষা শিখেন। এসময় তিনি ইংরেজি ও ফরাসির পাশাপাশি হিব্রু ভাষায়ও দক্ষতা অর্জন করেন। বাবা কাঠের ব্যবসায়ী ছিলেন ও মা গ্রন্থাগারিক ছিলেন। গারশন নামীয় তাঁর এক ছোট ভাই ছিল। প্রয়াত মার্কিন চলচ্চিত্র তারকা লরেন বাকল সম্পর্কে তাঁদের আত্মীয় ছিলেন।
১৯৩২ সালে তাঁর বাবা ফিলিস্তিনে অভিবাসিত হন ও তেল আভিভে বসতি গড়েন। এরপর ১৯৩৪ সালে পরিবারটি সেখানে চলে যায়। বাফোর এলিমেন্টারি স্কুলে ভর্তি হন ও তেল আভিভের জিউলা জিমন্যাসিয়ামে মাধ্যমিক শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি বেন শিমেন কৃষি বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হন ও কিবাজ জেভায় কয়েক বছর বসবাস করেন। কিবাজ আলুমট প্রতিষ্ঠায় তিনিও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মাপাইয়ের দলীয় প্রধান ডেভিড বেন-গুরিয়ন ও বার্ল কাতনেলসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ও মাপাই কার্যালয়ে তাঁকে নেয়া হয়। ১৯৪১ সালে উইজনিউতে অবস্থানকারী পেরেজের আত্মীয়গণ হলোকস্টে নিহত হন।
১৯৫০-এর দশকের শুরুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের পরিচালক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে দ্য নিউ স্কুল ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি, অর্থনীতি ও দর্শনে পড়াশোনা করেন। এছাড়াও, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভান্সড ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পড়েন।
কর্মজীবন
তিনি অনেকগুলো কূটনৈতিক ও সামরিক পদে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়াও ইসরায়েলের স্বাধীনতার যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-মহাসচিব হিসেবে সরকারীভাবে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের পদে নিযুক্ত হন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৯ সালে পর্যন্ত একই মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব হন। সমগ্র কর্মজীবনে মাপাই, রাফি, অ্যালাইনম্যান্ট, লেবার ও কাদিমা দলের পক্ষে নেসেটে প্রতিনিধিত্ব করেন। তন্মধ্যে, অ্যালাইনম্যান্ট ও লেবার দলের প্রধান ছিলেন তিনি।
*রাষ্ট্রপতি
২০০৭ সালের শুরুর দিকে কাদিমা দলের পক্ষে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী হন। ১৩ জুন, ২০০৭ তারিখে নেসেটে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাঁকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ১৫ জুলাই, ২০০৭ তারিখে শপথ নেন ও সাত বছর দায়িত্ব পালন করেন। এরফলে প্রথম সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি হবার সৌভাগ্য লাভ করেন। এরপর ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অবসর নেন। এসময় তিনি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বয়স্ক রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছিলেন। এপ্রিল, ২০১৩ সালে পেরেজ ঘোষণা করেন যে, ২০১৪ সালের পর তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন না। ১০ জুন, ২০১৪ তারিখে রিওভেন রিভলিন তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ও ২৪ জুলাই, ২০১৪ তারিখে শপথ নেন।
অসলো চুক্তিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অংশ নেন। আইজাক রবিন ও ইয়াসির আরাফাতের সাথে তিনিও শান্তি প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন। এর ফলে, ১৯৯৪ সালে তাঁদের সাথে তিনিও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
*ব্যক্তিগত জীবন
১৯৪৫ সালে সোনিয়া জেলমানের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাঁদের সংসারে তিন সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে ২০০৭ সালের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথকালীন সময়ে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। ২০ জানুয়ারি, ২০১১ তারিখে ৮৭ বছর বয়সে সোনিয়া মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ট্রাক চালক হিসেবে কর্মজীবন শেষ করার পর সোনিয়া বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হবার পর তিনি স্বামীর পদগ্রহণের বিষয়ে সম্মতি জানাননি। তেল আভিভেই তিনি বসবাস করতে আগ্রহী ছিলেন। তারপর থেকে তাঁরা পৃথকভাবে বসবাস করছিলেন।
তিনি ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে মারা যান। এই পোস্ট টা ওইদিন লিখেছিলাম।
 September 29, 2016

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর