সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

খেলারাম খেলে যা

খেলারাম খেলে যা

কলেজ জীবনেই সৈয়দ শামসুল হকের এই উপন্যাসটি পড়েছিলাম। যৌনতায় ভরপুর এই উপন্যাসের একটি লাইন এখনো মনে আছে....
"জাহেদা জানালা দিয়ে দেখো আকাশে কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে। জাহেদা বলেছিলো" বুঝছি আপনে অহন আমারে লাগাইবার চান"।
আজ "খেলারাম খেলে যা" র সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ২য় মৃত্যু বার্ষিকী।
রাজনৈতিক চাটাচাটিকে একটা শিল্প হিসাবে দাড় করাতে যে ক'জন সাহিত্যিক আজীবন অক্লান্তভাবে খেটে গেছেন জনাব হক নি:সন্দেহে তাদের কাতারে সামনেই থাকবেন।
জনাব হক একজন সাহিত্যিক ছিলেন, তবে সেটা রাজনীতি নিরপেক্ষ ছিলো না। একজন এক্স রাজনীতিবিদ(😁) হিসেবে আমি তার রাজনৈতিক দিকটা তুলে ধরবো মাত্র।
সৈয়দ শামসুল হকের রাজনৈতিক অবস্থান ছিল খুবই ইন্টারেস্টিং!
সৈয়দ শামসুল হক জীবনের শেষ সময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তার আগে কোন কোন মহলের সাথে তার কিরূপ সখ্যতা ছিলো একনজরে দেখে আসা যাক:
(১) ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি তার রিপোর্টে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন। এর অবশ্য নগদ প্রতিদানও পেয়েছিলেন তিনি।
পাকিস্তান সরকার তার পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৬৬ সালে সর্বকনিষ্ঠ লেখক হিসেবে 'বাংলা একাডেমী' সাহিত্য পুরষ্কারে ভূষিত করে!
(২) মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের যেসব বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানের অখণ্ডতার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিলেন সৈয়দ হক ছিলেন তাঁদের একজন।
মুক্তিযোদ্ধাদের খাটো করে, রাজাকারদের গুরুত্ব দিয়ে তাঁর একটা উপন্যাস আছে। নাম- ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। পরে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি তা সংশোধন করেন।
(৩) ১৯৭৮ সালে ‘উত্তরাধিকারে’ ছাপা হওয়া ‘গণনায়ক’-এ শেখ মুজিবকে চিত্রিত করা হয় একজন দুঃশাসক হিসেবে।
(৪) জিয়াউর রহমানের আমলে গুলশানে আনুগত্যের নজরানাস্বরুপ তাঁকে একটা বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়।
(৫) এরশাদের আমলে এসে তিনি বাড়িটা পুনঃনির্মাণ করেন।
আমাদের সবার প্রিয় 'কবি’ এরশাদের (😹) কবিতাগুলো যারা লিখে দিতেন, বলা হয়ে থাকে সৈয়দ হক ছিলেন তাঁদের একজন।
(৬) এরশাদের পতনের পর তিনি ঝুঁকে পড়েন আওয়ামী লীগের দিকে এবং এই যায়গায় আমৃত্যু টিকেছিলেন।
ইন্টারেস্টিং না?
অনেক ইন্টারেস্টিং।
এতো গেলো তার কেচ্ছা, এবার আসা যাক তার বৌ মিসেস সৈয়দা আনোয়ারা হকের কাহিনীতে!
'মিসেস আনোয়ারা পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একজন ডাক্তার (ক্যাপ্টেন / ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
1971 সালের যুদ্ধের সময়ও সৈয়দা আনোয়ারা হক পিএএফ ঢাকা স্টেশনে চাকরি করতেন। '
মানে হলো পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অংশ হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
(সুত্র:Bangladesh Defence Journal Publishing' প্রকাশিত সাবির আব্দুস সামী সম্পাদিত " Origins of Bangladesh Army") (কমেন্ট)
ইন্টারেস্টিংলি, স্বামীর মতো অবশ্য ইনিও পরে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন! তুলে নেন কলম আর চটাচট লিখে ফেলেন কিছু বই যার মধ্যে আছে 'একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে' ও ' হানাদার বাহিনী জব্দ' নামক দুটি বই! 😂 🙊
আমি উইকিপিডিয়ায় মিসেস আনোয়ারার তথ্যটা জাস্টিফাই করতে গিয়ে দেখি মিসেস আনোয়ারার পুরো পেশাগত জীবনটাই গায়েব করে দেওয়া হয়েছে! সেখানে শুধু লেখা আছে She's an psychiatrist হাহা!
গত ১৪ নভেম্বর থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্তই তার জীবনী ৩ বার এডিট করা হয়েছে! (এসবই এডিট করা যায় আরকি!)
যাইহোক, জনাব হককে নিয়ে আরো কিছু হককথা পড়তে হলে রনি ভায়ের নিচের মজার লেখাটা দেখা যেতে পারেঃ
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2152281338117842&id=100000079894563
Red October. ( আমি নিজে কিছুটা যোগ করেছি।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর