সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জুতা কাহিনী


জুতা কাহিনী

অনেকেরই মনে থাকার কথা ১৪ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের উদ্দেশে ইরাকি সাংবাদিক মুনতাজার আল জাইদির জুতা নিক্ষেপের ঘটনা । রবীন্দ্রনাথের ‘জুতা আবিস্কার’ কবিতাও অনেকেই পড়েছেন ।
ইংরেজ শাসনামলে দীনবন্ধু মিত্র রচিত নীলদর্পণ যখন মঞ্চস্থ হতো, তখন ইংরেজদের অত্যাচারের মঞ্চ-অভিনয় দেখে দর্শক জুতা নিক্ষেপ করতো । একই ঘটনা ঘটেছিলো পলাশী যুদ্ধ নিয়ে রচিত সিরাজদ্দৌলা যখন মঞ্চস্থ হয় । মীর জাফরের কার্যকলাপের অভিনয় দেখে উত্তেজিত দর্শক নিজের জুতার মায়া ত্যাগ করেছিলো ।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই জুতা নিয়ে অনেক গল্প, কবিতা, গান, কৌতুক ইত্যাদি রচিত হয়েছে । অসংখ্য হাস্যকর ঘটনা ঘটেছে । আমাদের এই উপমহাদেশেও জুতা নিয়ে কবিতা (যেমন—একদা ছিল না জুতা চরণ যুগলে...), গান (যেমন—মেরা জুতা হে জাপানি...), প্রবাদ-প্রবচন (যেমন—গরু মেরে জুতা দান) ইত্যাদি আরও কত কি রচিত হয়েছে, কোনো হিসাব নেই ।
ভালো ব্র্যান্ডের জুতার প্রতি অনেকের দুর্বলতাও আছে । আমারো আছে । আমি রকপোর্ট, পারপোর্ট জুতা ইউজ করেছি । এখনো  এক জোড়া আছে । এর নাম পাসপোর্ট । কিনেছিলাম কুয়ালালামপুর পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের আট তলায় 'ইসেটান' ডিপার্ট্মেন্ট স্টোর থেকে । দাম পরেছিলো ২২ হাজার টাকা ।
বাংলাদেশে মসজিদে জুতা হারানো নিয়েও আছে অনেক গল্প । মসজিদে কখনো জুতা হারাবেন না যদি দুইটা দুই জায়গায় রাখেন । বেশি দূরে দরকার নেই । সামান্য দূরে রাখলেই চলবে । যতো দামিই হোক এক জুতা কেউ নেবে না । আর মসজিদ থেকে যারা জুতা চুরি করে তারা কখনো বেশি সময় নিয়ে চুরি করে না । জাস্ট বের হওয়ার সময় পায়ে দিয়ে চলে যায় ।
জুতা নিয়ে বহুল আলোচিত ইতিহাস রচনা করেছিলো ইরাকি সাংবাদিক মুনতাজার আল জাইদি ১৪ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে ।
অন্যদিকে ঘটনার বলি হলেন ওই সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ । কালো, চকচকে, পলিশ করা জুতা । দেখেই বোঝা গেছে, ব্র্যান্ডের জুতা । জুতা মারার ক্ষেত্রেও জাইদি সাহেবের রুচির তারিফ করতে হয় । মি.বুশ যেহেতু প্রেসিডেন্ট মানুষ, তাঁকে তো আর যেনতেন জুতা মারা যায় না !
অনেকে মনে করেছিলেন, কাহিনী বোধহয় এখানেই শেষ । কিন্তু না । আসল চমক কিছুদিন পর থেকেই । ঘটনার কয়েক দিনের মাথায় জুতার ব্র্যান্ড-মালিকানা নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে বিরোধ দেখা দিল । পরে অবশ্য প্রমাণিত হলো, জুতা দুটো তুরস্কের বাইডেন কোম্পানির তৈরি । বাইডেন কোম্পানি এই মডেলের জুতার নাম দেয় ‘বুশ মডেল’। এ মডেলের জুতা কেনার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের জুতার দোকানগুলোতে রীতিমতো ভিড় লেগে যায় । বাইডেন কোম্পানির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মতে, বুশকে জুতা মারার ঘটনার পর বিশ্বের নানা দেশ (এমনকি আমেরিকা) থেকে এই মডেলের জুতা তৈরির প্রচুর অগ্রিম অর্ডার জমা পড়ে, যা বিগত কয়েক বছরের মোট উৎপাদন সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যায় । পৃথিবীর অনেক মানুষ এই মডেলের জুতা এক নজর দেখে মনের সাধ পূরণ করে । তাঁদের কেউ কেউ আবার এ মডেলের জুতা সংরক্ষণ করে ভবিষ্যৎ বংশধরদের দেখানোর জন্য ।
মধ্যপ্রাচ্যের কোনো কোনো স্থানে ল্যান্ডমার্ক হিসেবে এই মডেলের জুতার বিশা




ল ভাস্কর্য তৈরি করা হয় । শুনেছি, মধ্যপ্রাচ্যের রাজপরিবারের কোনো এক ধনকুবের অনেক টাকা দিয়ে নিলামে এ জুতা দুটো কিনে নিয়েছেন ।
কম্পিউটার প্রোগ্রামাররাও এ ক্ষেত্রে বসে নেই। শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য তাঁরা জুতা নিয়ে বেশ কিছু চমৎকার গেম তৈরি করেছেন। প্রতিটি গেমের টার্গেট মোটামুটি একই রকম। যদি আপনি বুশের গালে জুতা মারতে সমর্থ হন, তবেই আপনি পয়েন্ট পাবেন ।
গুলিস্তানের মলম-বিক্রেতারাও কিছুদিনের জন্য মলম বিক্রি বন্ধ করে জুতা মারার কাহিনী নিয়ে পুস্তিকা ছাপিয়ে মাইকিং করে বিক্রি করেছিলেন । তাঁদের বিনিয়োগ বৃথা যায়নি । তাঁদের ক্যানভাসিংয়ের ভাষা ছিল অনেকটা এ রকম: এই বইটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন—
কে বুশকে জুতা মেরেছিলো ?
কয়টি জুতা মেরেছি্লো ?
কত নম্বর জুতা মেরেছিল ?
কোন রঙের জুতা মেরেছিলো ?
এই বইটি পড়লে আপনি আরও জানতে পারবেন...। জুতার অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত নিয়ে বিশেষ টক শো’তে কথা বলা যেতে পারে ।
On December 14, 2008, al-Zaidi shouted, "This is a farewell kiss from the Iraqi people, you dog", and threw his shoes at then-U.S. president, George W. Bush, during a Baghdad press conference.
 February 26, 2017

মন্তব্যসমূহ

  1. Fraps Cracked 2020 Complete VersionFraps Cracked 2019 Keygen Entire Version


    Fraps Download Cracked is ultra powerful and solid software which allows you to capture video clips, require screenshots, record audio voices and plus benchmarking. It the planet most widely used and solid software that will be utilised with games employing OpenGL graphics and DirectX. With this program you might be able to preview FPS; it displays how a good number of Frames for each Next you could be obtaining inside a corner of your laptop or computer display screen. One can determine the frame price in between any two details of the display screen and also accomplish customized benchmarks. Fraps Torrent will work properly with all windows operating system like 32 and 64 little bit. This software is compatible for Windows 10, 8.1, 8, 7 and XP or

    উত্তরমুছুন
  2. If you're considering your daughter, a more touching and sweet desire is expected certainly on the beloved “dad”. Question how are you able to fit your treatment and tenderness inside a few of sentences? Permit us enable you do this with some glorious phrases.Take a look at out our great selection of 40 Extraordinary Wish For My Daughter Quotes.

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর