আমার আমি এবং আমরা
প্রিয় বন্ধুরা,
ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা । কেমন আছেন সবাই ? আজ এমন এক প্রসঙ্গে লিখবো যা হয়তো আপনাদের বিরক্তির কারন হতে পারে । তবু আমার মতো অভাজনের এই চিঠি পড়লে খুশি হবো । কৃতজ্ঞ থাকবো । আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন, মাঝে মাঝে কিছু ফেইক আইডি থেকে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চরিত্রহনন করার চেষ্টা করা হয় । যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন । চারদিন আগে Samima Nasrin নামে একটা ফেইক আইডি থেকে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা হয় । অনেক বাজে কথা বলা হয় । মেয়েদের প্রসঙ্গ টেনে আনা হয়। আমি মেয়েদের নিয়ে গল্প লিখি তা নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হয়। আমি একাধিক একাউন্ট চালাই এমন অভিযোগ করা হয় । ওই আইডি টা আমার এলাকার একটা ছেলের হতে পারে । বা আমার নির্দিষ্ট কোনো ফেসবুক বন্ধুর হতে পারে। এক সময় যাদের সঙ্গে আমার বেশ আন্তরিকতা ছিলো। এখন নেই। তাদের কারনেই। আমি সেই একাউন্ট ডিসএবল্ড করে দিয়েছি ।
বন্ধুরা দেখে থাকবেন আমি ফেবুতে অনেক লিখি । শেয়ার করি । এতো কিছু করে একজন লোকের পক্ষে কি একাধিক একাউন্ট চালানো সম্ভব ? গত বছরও নাদিয়া ফেরদৌস নামে একটা ফেইক আইডি থেকে অনেক বাজে মন্তব্য করা হয় আমার বিরুদ্ধে । ফেসবুকেও অনেকের সঙ্গে আমার খুব ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো এক সময় । পরে তারা কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে দুঃখ দিয়ে চলে যায় । সে অভিমানে আমি ইন্ডাইরেক্টলি তাদের কিছু ত্রুটির কথা লিখেছিলাম । কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য নয় । অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায় না তা ছাত্র জীবনেই জানতাম । কিন্তু কেউ অন্যায় করলে, দুর্নীতি করলে আমি তা ফেবুতে লিখি । এটি ব্যক্তিগত আক্রমণ নয় । অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ । সে জন্য আমি জীবনে অনেক হারিয়েছি । অনেক প্রিয়জন দূরে সরে গেছেন । কিন্তু আমি আমার অবস্থান থেকে সরে যাই নি । যাবো না ।
আমি কে ? কি? কেমন ? তা জানাতে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য ।
আমার নামঃ করিম চৌধুরী । পিতার নামঃ গনি চৌধুরী । মাতার নামঃ জামিলা খাতুন । বাড়িঃ ঘোড়ামারা চৌধুরী বাড়ি । ডাকঘরঃ দুর্গাপুর। উপজেলাঃ কুমিল্লা সদর । জেলাঃ কুমিল্লা-৩৫০০।
কুমিল্লা শহর থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিমে আমাদের বাড়ি । ঢাকা চট্রগ্রাম হাইওয়ের পাশে । হাইওয়ে থেকে আমার বড় ভাইয়ের চারতলা বিল্ডিং দেখা যায় । আমার তিনতলাও দেখা যায় । কুমিল্লা ব্র্যাক আঞ্চলিক অফিসের ঠিক উলটো দিকের বাড়িটিই আমাদের । যদিও আমি ব্যক্তিগত কারনে বাড়িটি বিক্রি করে দিই এবং আমার বড় ভাই কিনে রাখেন ।
আমার বাবা মারা যান ১৯৮৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর । ৯৩ বছর বয়সে । আমি তখন দেশে । মা মারা যান ২০ আগস্ট ১৯৯৭ সালে । প্রায় ৮৮ বছর বয়সে । আমি তখন নিউ ইয়র্কে ।
আমি বাড়িতে থাকি না কারন গ্রামের মানুষের সঙ্গে আমার এডজাস্ট হয় না । আমরা চার ভাই ও চার বোন । বর্তমানে তিন ভাই, তিন বোন । এক ভাই, এক বোন কম বয়সে মারা যান । আমি সবার ছোট ।
আমাদের সবার বড় বোন । নামঃ নুরজাহান বেগম । বড় বোনকে আমরা বুবু ডাকি । বুবু ৭০ বছর ধরে কুমিল্লা শহরের অভিজাত এলাকা রেইস কোর্সের স্থায়ী অধিবাসি । মুক্তি হসপিটালের উল্টো দিকে মফিজ উদ্দিন রোডে বাসা। বাসার নাম: মোকামে আকবর। প্রয়াত দুলাভাইয়ের নাম আলী আকবর। সেই মতেই বাসার নাম। বুবুর ছয় সন্তান । চার ছেলে । দুই মেয়ে । যথাক্রমে, তোফাজ্জল,পলি,ইশরাত,রাশেদ,কামাল, টুটুল । ভাগিনা তোফাজ্জল আমার সাত বছরের বড় । ভাগ্নী পলি আমার দুই বছরের বড় । বুবুর ছয় সন্তানই মাস্টার্স করে দেশে বিদেশে ভালো আছে । সবাই বিয়ে করেছে । ভাগিনা তোফাজ্জল জেলার খুব ভালো হকি খেলোয়ার ছিলো । সে এখন রেইস কোর্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ক্রীড়া সম্পাদক । তোফাজ্জলের বড় ছেলে মানে আমার নাতি ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স অনেক বছর জাতিয় ক্রিকেট দলের খেলোয়ার ছিলো । বিদেশে অনেক টুর্নামেটে অংশ গ্রহন করেছিলো দেশের হয়ে । ছোট ছেলে রুভেন্সও ভালো ক্রিকেট খেলে । এখন অস্ট্রেলিয়া আছে । পলির একমাত্র ছেলে বাপ্পি এমবিএ করে এখন আমেরিকায় আছে । ভালো নাম Fahadur Rahman। পলিকেও নিয়ে গেছে। পলি আমার লিস্টে আছে Anjuman Ara Poly। পলির হাসব্যান্ড আমার বন্ধুস্থানীয় ছিলো। অল্প বয়সে মারা গেছে। ২০১২ সালে। পলির দু'জায়গাতেই বাসা আছে। রেইসকোর্স একটা। ধর্মপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স ও মাস্টার্স ক্যাম্পাসের পাশে কাজি নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাসের উল্টো দিকে আরেকটা । বাসার নাম: দেওয়ান ভিলা। ইশরাতের হাসব্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার । অনেক বছর কুয়েতে আছে ইশরাতকে নিয়ে । তার দুই ছেলে । রাফি,সামি। সেখানেই লেখাপড়া করে । রাশেদ, কামাল দেশেই আছে । টুটুল চট্রগ্রাম ভার্সিটি থেকে ইকনোমিক্সে মাস্টার্স করে এখন দুবাই ম্যারিয়ট হোটেলে ভালো পজিশনে জব করে । টুটুল আমার লিস্টে আছে। তার ভালো নাম Jubayer Hossain. ভয়ে আমার পোস্টে কমেন্ট করে না। বানান ভুল হলে যদি আমি রেগে যাই। শিল্পিও ভয়ে কমেন্ট করে না।
প্রিয় বন্ধুরা,
ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা । কেমন আছেন সবাই ? আজ এমন এক প্রসঙ্গে লিখবো যা হয়তো আপনাদের বিরক্তির কারন হতে পারে । তবু আমার মতো অভাজনের এই চিঠি পড়লে খুশি হবো । কৃতজ্ঞ থাকবো । আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন, মাঝে মাঝে কিছু ফেইক আইডি থেকে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চরিত্রহনন করার চেষ্টা করা হয় । যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন । চারদিন আগে Samima Nasrin নামে একটা ফেইক আইডি থেকে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা হয় । অনেক বাজে কথা বলা হয় । মেয়েদের প্রসঙ্গ টেনে আনা হয়। আমি মেয়েদের নিয়ে গল্প লিখি তা নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হয়। আমি একাধিক একাউন্ট চালাই এমন অভিযোগ করা হয় । ওই আইডি টা আমার এলাকার একটা ছেলের হতে পারে । বা আমার নির্দিষ্ট কোনো ফেসবুক বন্ধুর হতে পারে। এক সময় যাদের সঙ্গে আমার বেশ আন্তরিকতা ছিলো। এখন নেই। তাদের কারনেই। আমি সেই একাউন্ট ডিসএবল্ড করে দিয়েছি ।
বন্ধুরা দেখে থাকবেন আমি ফেবুতে অনেক লিখি । শেয়ার করি । এতো কিছু করে একজন লোকের পক্ষে কি একাধিক একাউন্ট চালানো সম্ভব ? গত বছরও নাদিয়া ফেরদৌস নামে একটা ফেইক আইডি থেকে অনেক বাজে মন্তব্য করা হয় আমার বিরুদ্ধে । ফেসবুকেও অনেকের সঙ্গে আমার খুব ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো এক সময় । পরে তারা কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে দুঃখ দিয়ে চলে যায় । সে অভিমানে আমি ইন্ডাইরেক্টলি তাদের কিছু ত্রুটির কথা লিখেছিলাম । কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য নয় । অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায় না তা ছাত্র জীবনেই জানতাম । কিন্তু কেউ অন্যায় করলে, দুর্নীতি করলে আমি তা ফেবুতে লিখি । এটি ব্যক্তিগত আক্রমণ নয় । অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ । সে জন্য আমি জীবনে অনেক হারিয়েছি । অনেক প্রিয়জন দূরে সরে গেছেন । কিন্তু আমি আমার অবস্থান থেকে সরে যাই নি । যাবো না ।
আমি কে ? কি? কেমন ? তা জানাতে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য ।
আমার নামঃ করিম চৌধুরী । পিতার নামঃ গনি চৌধুরী । মাতার নামঃ জামিলা খাতুন । বাড়িঃ ঘোড়ামারা চৌধুরী বাড়ি । ডাকঘরঃ দুর্গাপুর। উপজেলাঃ কুমিল্লা সদর । জেলাঃ কুমিল্লা-৩৫০০।
কুমিল্লা শহর থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিমে আমাদের বাড়ি । ঢাকা চট্রগ্রাম হাইওয়ের পাশে । হাইওয়ে থেকে আমার বড় ভাইয়ের চারতলা বিল্ডিং দেখা যায় । আমার তিনতলাও দেখা যায় । কুমিল্লা ব্র্যাক আঞ্চলিক অফিসের ঠিক উলটো দিকের বাড়িটিই আমাদের । যদিও আমি ব্যক্তিগত কারনে বাড়িটি বিক্রি করে দিই এবং আমার বড় ভাই কিনে রাখেন ।
আমার বাবা মারা যান ১৯৮৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর । ৯৩ বছর বয়সে । আমি তখন দেশে । মা মারা যান ২০ আগস্ট ১৯৯৭ সালে । প্রায় ৮৮ বছর বয়সে । আমি তখন নিউ ইয়র্কে ।
আমি বাড়িতে থাকি না কারন গ্রামের মানুষের সঙ্গে আমার এডজাস্ট হয় না । আমরা চার ভাই ও চার বোন । বর্তমানে তিন ভাই, তিন বোন । এক ভাই, এক বোন কম বয়সে মারা যান । আমি সবার ছোট ।
আমাদের সবার বড় বোন । নামঃ নুরজাহান বেগম । বড় বোনকে আমরা বুবু ডাকি । বুবু ৭০ বছর ধরে কুমিল্লা শহরের অভিজাত এলাকা রেইস কোর্সের স্থায়ী অধিবাসি । মুক্তি হসপিটালের উল্টো দিকে মফিজ উদ্দিন রোডে বাসা। বাসার নাম: মোকামে আকবর। প্রয়াত দুলাভাইয়ের নাম আলী আকবর। সেই মতেই বাসার নাম। বুবুর ছয় সন্তান । চার ছেলে । দুই মেয়ে । যথাক্রমে, তোফাজ্জল,পলি,ইশরাত,রাশেদ,কামাল, টুটুল । ভাগিনা তোফাজ্জল আমার সাত বছরের বড় । ভাগ্নী পলি আমার দুই বছরের বড় । বুবুর ছয় সন্তানই মাস্টার্স করে দেশে বিদেশে ভালো আছে । সবাই বিয়ে করেছে । ভাগিনা তোফাজ্জল জেলার খুব ভালো হকি খেলোয়ার ছিলো । সে এখন রেইস কোর্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ক্রীড়া সম্পাদক । তোফাজ্জলের বড় ছেলে মানে আমার নাতি ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স অনেক বছর জাতিয় ক্রিকেট দলের খেলোয়ার ছিলো । বিদেশে অনেক টুর্নামেটে অংশ গ্রহন করেছিলো দেশের হয়ে । ছোট ছেলে রুভেন্সও ভালো ক্রিকেট খেলে । এখন অস্ট্রেলিয়া আছে । পলির একমাত্র ছেলে বাপ্পি এমবিএ করে এখন আমেরিকায় আছে । ভালো নাম Fahadur Rahman। পলিকেও নিয়ে গেছে। পলি আমার লিস্টে আছে Anjuman Ara Poly। পলির হাসব্যান্ড আমার বন্ধুস্থানীয় ছিলো। অল্প বয়সে মারা গেছে। ২০১২ সালে। পলির দু'জায়গাতেই বাসা আছে। রেইসকোর্স একটা। ধর্মপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স ও মাস্টার্স ক্যাম্পাসের পাশে কাজি নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাসের উল্টো দিকে আরেকটা । বাসার নাম: দেওয়ান ভিলা। ইশরাতের হাসব্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার । অনেক বছর কুয়েতে আছে ইশরাতকে নিয়ে । তার দুই ছেলে । রাফি,সামি। সেখানেই লেখাপড়া করে । রাশেদ, কামাল দেশেই আছে । টুটুল চট্রগ্রাম ভার্সিটি থেকে ইকনোমিক্সে মাস্টার্স করে এখন দুবাই ম্যারিয়ট হোটেলে ভালো পজিশনে জব করে । টুটুল আমার লিস্টে আছে। তার ভালো নাম Jubayer Hossain. ভয়ে আমার পোস্টে কমেন্ট করে না। বানান ভুল হলে যদি আমি রেগে যাই। শিল্পিও ভয়ে কমেন্ট করে না।
এরপর আমাদের বড় ভাই । নামঃ মালেক চৌধুরী । তিনি মিলিটারি পার্সোনেল ছিলেন ।
১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মি থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধ করেন । এখন
বাড়িতেই আছেন । বয়স হয়েছে। নরম হয়ে গেছেন । তাঁর ছয় সন্তান । তিন ছেলে, তিন
মেয়ে । আজাদ চৌধুরী, আলম চৌধুরী, কোহিনূর চৌধুরী, শিউলি চৌধুরী, সালমা
চৌধুরী, আরিফ চৌধুরী । আজাদ আমি প্রায় সমান । আজাদ বাড়িতেই থাকে । সহায়
সম্পত্তি দেখাশোনা করে । আলম মাস্টার্স করে ১১৮ ডিআইটি এক্সটেনশন রোডে একটা
ট্র্যাভেল এজেন্সি চালায় । নিজেরই । নাম কুশিয়ারা ট্র্যাভেলস এন্ড ট্যুরস ।
ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে নিজের বাসায় থাকে । কোহিনূর চবি থেকে মাস্টার্স
করে এখন কোটবাড়ি ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে সহকারি প্রধান শিক্ষক । শিউলি
গ্র্যাজুয়েট । হাউজ ওয়াইফ । কুমিল্লা শহরে আদালত পাড়ায় স্বামীর বাড়িতে আছে ।
সালমা জাবি থেকে মাস্টার্স করে কুমিল্লার নাম করা ফয়জুন্নেসা গার্লস
স্কুলে শিক্ষক । সালমা মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলো । আরিফ কুমিল্লা
জিলা স্কুল থেকে স্টার মার্কস পেয়ে এসএসসি পাস করে নটরডেম কলেজ থেকে প্রথম
বিভাগে উত্তীর্ন হয়ে স্কলারশিপ নিয়ে চায়নার সাংহাইতে টঞ্জি ইউনিভার্সিটি
(Tonji University) থেকে কম্পিউটার সাইন্সে মাস্টার্স করে হংকংয়ে স্যাটলড ।
হংকং হারবারেই নিজের বাড়ি । বউ নিয়ে সেখানেই থাকে। চায়নার একটা নামজাদা
মোবাইল কোম্পানিতে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কাজ করে ।
এরপর আমাদের এক বোন । নামঃ ফিরোজা বেগম । বাসা কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে । কান্দিরপাড় । কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পাশেই । এই বোনটিই এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের চার তারিখ মারা গেছেন । দুলাভাই দেলোয়ার হোসেন সরকার খুব ফানি আর ফ্রেন্ডলি। তিনি টঙ্গির অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলে পারচেজ অফিসার ছিলেন। এখন রিটায়ার্ড। এই বোনের পাঁচ মেয়ে এক ছেলে । যথাক্রমে নাজমা, ঝর্ণা, পান্না, শিল্পি, লাভলি, শাহীন । সকলেই গ্র্যাজুয়েট । কুমিল্লা শহরে বিয়ে হয়েছে । এবং শহরের স্থায়ী অধিবাসি এবং সবাই কোটিপতি । নাজমার হাসব্যান্ড মি. শামসুক হক কুমিল্লা শহরের একজন নামকরা বিজনেসম্যান। বাসা শহরের মনোহরপুর । নাজমার চার মেয়ে । ইভা, ইফেল, ইমতি ইরেন। ইভা ডাক্তার । ইফেল, ইমতি নর্থ সাউথে পড়ে । ইরেন আগামিতে এইচএসসি দেবে । ইফেল আমার লিস্টে আছে। Sabiha Efel নামে। ঝর্ণার হাসব্যান্ড মি. মিজান একাউন্টিং এ চবি থেকে মাস্টার্স। অনেক বছর চাকরি করে এখন কুমিল্লা শহরে বিজনেস করে। আমরা বন্ধুস্থানীয়। খুব ধার্মিক জীবন যাপন করে। আমার লিস্টে আছে Mizanur Rahman . ঝর্ণার দুই মেয়ে । প্রমি, প্রিতু । প্রমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে গাইনির ডাক্তার । স্বামীও ডাক্তার । প্রিতু নর্থ সাউথে পড়ে । আমার লিস্টে আছে Farhana Pritu।
ঝর্ণার বাসা ঠিক ভিক্টোরিয়া কলেজের গেইটে। কান্দিরপাড় ক্যাম্পাসে।
পান্নার দুই মেয়ে । সাবাহ, সারাহ । দু'জনই আমেরিকায় পড়াশোনা করে । পান্নার বাসা আমাদের রেলমন্ত্রী মুজিব ভাইয়ের বাসার কাছে। নজরুল এভিনিউতে। পান্নাকে বিয়ে করেছে আমারই আরেক বোনের ছেলে অপু । আমেরিকায় আছে ।
শিল্পি নিউ ইয়র্কে আছে স্বামীর সঙ্গে । একমাত্র মেয়ে সামিহা । সেখানেই সেভেন গ্রেডে পড়ে । শিল্পি আমার লিস্টে আছে Shirin Shilpyনামে । লাভলি বিয়ে করেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সহকারি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ছেলেকে । নামঃ স্বপন । ভালো নাম জানি না । স্বপন বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানিতে উচু পদে চাকরি করে। লাভলীর এক মেয়ে । সিমিকা । এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে । বাসা শহরের ঠাকুর পাড়া । একমাত্র ভাগিনা শাহীন কান্দিরপাড় হক টাওয়ারে মোবাইল বিজনেস করে । তার একমাত্র মেয়ে ফয়জুন্নেসা গার্লস হাই স্কুলে সেভেনে পড়ে । ফার্স্ট গার্ল । নাম ভিয়েনা।
এরপর আমাদের এক বোন । নামঃ হাজেরা বেগম । এই বোনকে বাবা মা বিয়ে দিয়েছেন বরুরা থানার মহেশপুর গ্রামে । দুলাভাই স্কুল শিক্ষিক ছিলেন। ২০১০ সালে মারা গেছেন। শুধু এই বোনেরই ডাক নাম আছে । মণি । আর ভাইদের মধ্যে আমার ডাক নাম আছে। এই বোনের চার ছেলে । তিন মেয়ে । মেয়েরা গ্র্যাজুয়েশন করে গ্রামেই বিয়ে করেছে । সবাই হাউজ ওয়াইফ । বড় ভাগিনা বাবুল মাস্টার্স করে গ্রামের এক হাইস্কুলের হেড টিচার । মেজো ভাগিনা জাহাঙ্গীর ইঞ্জিনিয়ার । নরসিংদী জব করে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে । এর ছোট জন সেলিম। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এনথ্রোপোলোজিতে মাস্টার্স করে আইসিডিডিআরবি (ICDDR,B)তে সিনিয়র রিচার্স এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছে । সবচেয়ে ছোটজন আলমগীর মাস্টার্স করে ব্র্যাক ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার ।
এরপর আমাদের এক ভাই । নামঃ কাশেম চৌধুরী । ১৯৯৬ সালে মারা যান । মাত্র ৪৭ বছর বয়সে। উনার দুই ছেলে । বাবলু, পারভেজ । বাবলু গ্র্যাজুয়েশন করে এখন আমেরিকায় আছে ভাবী, বউ বাচ্চা নিয়ে । বাবলুর ভালো নাম Shamim Chowdhury। আমার লিস্টে আছে। আর পারভেজ চায়নার সেনজেন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে এখন হংকংয়ে সেটেল্ড । বিয়ে করেনি ।
এরপর আমাদের এক ভাই । নামঃ সহিদ চৌধুরী । এখন খুব অসুস্থ । উনার তিন মেয়ে এক ছেলে । নার্গিস, বিলকিস, হ্যাপি আর সোহাগ । মেয়ে তিনজনই গ্র্যাজুয়েশন করেছে । নার্গিসের বিয়ে হয়েছে শহরের ধর্মপুর । স্বামী শামসুল হক বিজনেস করে। প্রভাবশালী পরিবার। নার্গিস হাউজ ওয়াইফ । আর বিলকিস প্রেম করে চাচাতো ভাইকে বিয়ে করে আমাদের বাড়িতেই আছে । হ্যাপি ঢাকায় । তার স্বামী এস্কোয়ারের (Esquare) মার্কেটিং অফিসার । সোহাগ মাস্টার্স করে ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে । আমি ওই কোম্পানীর নাম জানি না ।
এরপর আমার ছোট আপা । নামঃ ফরিদা বেগম । বাসা কোতোয়ালি থানার পাশে গাংচর । বাসার নামঃ আনোয়ারা লজ । মাউই আম্মার নাম আনোয়ারা বেগম। সেই হিসেবেই বাসার নাম। আপা N.O.R.P ( Nationala Oral Rehydration Project) তে জব করতেন । এখন রিটায়ার্ড। এক ছেলে । এক মেয়ে । অপু আমেরিকায় আছে । রুমা চবি থেকে মার্কেটিংয়ে মাস্টার্স করে কিছুদিন জব করেছে । এখন হাউজ ওয়াইফ । শহরেই বিয়ে হয়েছে । বাসা ঠাকুরপাড়া । বাসার নামঃ আজমীর মঞ্জিল । তার স্বামী আহমেদুল হক মিঠু M.H English Home নামে কান্দিরপাড় একটা ইংরেজি স্কুলের মালিক । রুমার ভালো নাম Rumena Karim
আমার ছোট দুলাভাইয়ের নাম রেজাউল করিম। তাই রুমার নাম রোমেনা করিম। আমার লিস্টে আছে। রুমার স্বামীর পরিবার খুবই অভিজাত। রুমার হাসব্যন্ডও আমার লিস্টে আছে Syed Ahmedul Hoq।
সবশেষে আমি । ১৯৭৬ সালে আমি যখন সেভেনে উঠি তখন গ্রামের পরিবেশ ভালো ছিলো না । অবশ্য এখনো ভালো না । খুব একটা লেখাপড়া ছিলো না গ্রামে । ওই সময়েই আমার সব বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো । আপারা মাকে বললেন, গ্রামে থাকলে মন্টুর( আমার ডাক নাম) লেখাপড়া হবে না । তাকে আমাদের কাছে দিয়ে দেন মা । আমি ভালো ছাত্র ছিলাম । ক্লাশে ফার্স্ট বয় ছিলাম । সেই থেকে আমি শহরে বসবাস করি । এসএসসি , এইচএসসিতে ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছিলাম । স্টুডেন্ট ভিসায় সুযোগ পেয়ে জাপান যাই ১৯৮৬ সালে । কিন্তু ভালো লাগেনি বলে এক বছর পর চলে আসি । আমার ব্র্যাক অফ স্টাডি হয়ে যায় । তারপর চবি থেকে সেকেন্ড ক্লাশে গ্র্যাজুয়েশন করে ঢাবিতে আই আরে ভর্তি হই । সেখানের পাঠ চুকিয়ে চলে যাই ইউরোপ । ছয় বছর ছিলাম ইউরোপে ।
এরপর ১৯৯৫ সালে যাই আমেরিকা । ফিরে আসি ২০০৪ সালে । ভ্রমণ করেছি ২৬টি দেশ। এর মাঝেই আমার মাথায় লেখালেখির ভুত চাপে । যায়যায়দিন, নিউ ইয়র্কের ঠিকানা, প্রবাসী, বাংলাপত্রিকায় নিয়মিত লেখা শুরু করি । দেশে এসে ভোরের কাগজ, মৌচাকে ঢিল, অগ্রজ, কুমিল্লার কাগজ, রূপসী বাংলায় লিখতে থাকি । ১৯৭৬ সালের পর আমি স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়িতে আসি ২০০৪ সালে। ২৮ বছর পর ! এই শুরু হলো আমার এডজাস্টমেন্ট সমস্যা । আহারে যন্ত্রণা ! গ্রামের লোকজন আমাকে বলে পাগল। আর আমি দেখি ওরা সবাই পাগল।
জাপানে জাপানি ভাষার কোর্স করেছিলাম । অস্টৃয়ায় জার্মান ভাষার কোর্স করেছিলাম, নিউ ইয়র্কে ক্যাপলানে (Kaplan) ইংরেজির উপর কোর্স করেছিলাম। দেশে এসে জার্নালিজমে পোস্ট গ্র্যজুয়েশন কোর্স করেছিলাম, বৃটিশ কাউন্সিলে জেনারেল ইংলিশের উপর কোর্স করেছিলাম। IELTS কোর্সও করেছি।
২০০৬ সালে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় কয়েকজন মিলে একটা স্কুল করেছিলাম । নামঃ কুমিল্লা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ । ডাইরেক্টর ছিলাম । ভালো ইংরেজি শিক্ষক না পেয়ে সবার অনুরোধে তিন বছর আমিই ইংরেজি পড়িয়েছিলাম । স্কুলের অন্যান্য ডাইরেক্টর তথা মালিকদের দুর্নীতি আর অনিয়মের প্রতিবাদ করে এক পর্যায়ে নিজেই সে স্থান ছেড়ে দিই । এই কারনে সেখানেও কিছু শত্রু তৈরি হয় । আমার এলাকায় একটা স্কুলে আড়াই বছর ইংরেজি পড়িয়েছিলাম । সেখানেও অনেকের দুর্নীতির প্রতিবাদ করে বেরিয়ে আসি । গভর্নিং বডির সবাই আন্ডার মেক্ট্রিক । যোগ্যতা শুধু আওয়ামী লীগ করে । এসব নিয়েও প্রতিবাদ করি । এখানেও কিছু শত্রু তৈরি হয় । তাছাড়া আমি তীব্রভাবেই আওয়ামী লীগ বিরোধী। বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বই দেয়ার নামে রাজনৈতিক বক্তব্য রেখে ছাত্রছাত্রীদের মগজ ধোলাই করা হয় আর শুধু হাসিনা আর শেখ মুজিবের গুনগান করা হয়। আমি এসব ফেসবুকে লিখি । শত্রু সৃষ্টি হয় এ কারনেও।
ফেসবুকে বেশিরভাগই আমার জীবনের কথা লিখি । যাদের সঙ্গে আমার এক সময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো সে সব কথাও আমি ফেবুতে লিখি। অনেক মেয়ে বন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও লিখি। আমার কাছে এসব আমার জীবনের গল্প। কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য লিখি না।
নোয়াখালীর এক দম্পতির সঙ্গেও আমার খুব ঘনিষ্ঠতা ছিলো। সম্পর্ক তারাই আমার সঙ্গে করেছিলেন। তার স্ত্রী আমার লেখা খুব পছন্দ করতেন। ঘনিষ্ঠতার এক পর্যায়ে ওই ভদ্রলোক আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় এবং আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। ওই দম্পতি আমার বাসায়ও এসেছিলেন। ফেসবুকেই আমার সঙ্গে তাদের পরিচয়। তাদের নিয়ে আমি তিন চারটি পোষ্টও লিখেছিলাম, তাদের ছবিসহ। । তারাও নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য আমার বিরুদ্ধে এসব লিখতে পারেন অথবা আমার এলাকার অনেক এইট নাইন পাশ মসজিদ কমিটির আর স্কুলের গভর্নিং বডির “ভদ্রলোক”রাও এই কাজ করতে পারেন। আমার সন্দেহের আঙুল দু'দিকেই।
এলাকার অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়েও লিখতে আমি ভয় পাই না । এসব কারনে কিছু লোক ফেইক একাউন্ট খোলে নিজের ছবি না দিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানান রকম নোংরা কথা বলছে । আমার বন্ধুদের সে সব নিকৃষ্ট শ্রেণির লোকদের কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আন্তরিক অনুরোধ করছি । আমি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমি আমার সারা জীবনে কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলাম না । আজো নেই । ভবিষ্যতেও থাকবো না ইনশাল্লাহ । কেউ আমার কোনো অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি, অনৈতিক কাজের প্রমাণ দিতে পারলে আমি স্বেচ্ছায় আত্নহুতি দেবো। সত্য আর ন্যায়ের পক্ষে থাকলে শত্রু সৃষ্টি হবেই। এটা মেনে নিয়েই সত্য ও ন্যায় আকড়ে ধরে থাকবো।
কোকাকোলাতে চাকরি করে আমার ছাত্র ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা প্রায় প্রতিদিন আমার বাসায় আসে । আমার খোঁজ খবর নেয় । কখনোবা শরীর খারাপ থাকলে টিপে দেয় । ছেলেটি এক বাচ্চার বাবা। আমাকে খুব শ্রদ্ধা করে ও ভালোবাসে।
সে আজ আমাকে বললো, "স্যার , আপনার অবস্থা হইছে সক্রেটিসের মতো । সক্রেটিসকে তো অন্যায় অপবাদ দিয়ে মেরেই ফেললো। ফালতু আর অশিক্ষিত লোকেরা অনেক কিছু বলবে । এতে মন খারাপ করবেন না । আমাদের নবীজিকেও তো মক্কার লোকেরা কম অপবাদ দেয়নি । শেষ পর্যন্ত তাদের অত্যাচারে নবীজি মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে যান । ঈশা নবীকে তো ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যাই করা হলো।
আপনি এতো দেশ ঘুরেছেন । এতো অভিজ্ঞতা । এতো লেখালেখি করেন । আর আপনার এলাকার লোকগুলোকে দেখেন । আপনার ইউনিয়ন পরিষদে কি এমন কেউ আছে যে ২৬টি দেশ ভ্রমণ করেছে? আপনার ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের সঙ্গে কারো মিলে? এরা আপনাকে হিংসা করে।"
আমি আবারো বন্ধুদের সবিনয়ে অনুরোধ করবো, কোনো ফেসবুক একাউন্ট থেকে আমার বিরুদ্ধে কোনো বাজে কথা বলা হলে তা যেন আপনারা কাইন্ডলি ডিসরিগার্ড করেন । থ্যাংক ইউ অল ।
(ইঞ্জিনিয়ার রানার ছবি । আমার লিস্টে আছে Masud Rana)।
,2018
কুমিল্লা ।
এরপর আমাদের এক বোন । নামঃ ফিরোজা বেগম । বাসা কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে । কান্দিরপাড় । কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পাশেই । এই বোনটিই এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের চার তারিখ মারা গেছেন । দুলাভাই দেলোয়ার হোসেন সরকার খুব ফানি আর ফ্রেন্ডলি। তিনি টঙ্গির অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলে পারচেজ অফিসার ছিলেন। এখন রিটায়ার্ড। এই বোনের পাঁচ মেয়ে এক ছেলে । যথাক্রমে নাজমা, ঝর্ণা, পান্না, শিল্পি, লাভলি, শাহীন । সকলেই গ্র্যাজুয়েট । কুমিল্লা শহরে বিয়ে হয়েছে । এবং শহরের স্থায়ী অধিবাসি এবং সবাই কোটিপতি । নাজমার হাসব্যান্ড মি. শামসুক হক কুমিল্লা শহরের একজন নামকরা বিজনেসম্যান। বাসা শহরের মনোহরপুর । নাজমার চার মেয়ে । ইভা, ইফেল, ইমতি ইরেন। ইভা ডাক্তার । ইফেল, ইমতি নর্থ সাউথে পড়ে । ইরেন আগামিতে এইচএসসি দেবে । ইফেল আমার লিস্টে আছে। Sabiha Efel নামে। ঝর্ণার হাসব্যান্ড মি. মিজান একাউন্টিং এ চবি থেকে মাস্টার্স। অনেক বছর চাকরি করে এখন কুমিল্লা শহরে বিজনেস করে। আমরা বন্ধুস্থানীয়। খুব ধার্মিক জীবন যাপন করে। আমার লিস্টে আছে Mizanur Rahman . ঝর্ণার দুই মেয়ে । প্রমি, প্রিতু । প্রমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে গাইনির ডাক্তার । স্বামীও ডাক্তার । প্রিতু নর্থ সাউথে পড়ে । আমার লিস্টে আছে Farhana Pritu।
ঝর্ণার বাসা ঠিক ভিক্টোরিয়া কলেজের গেইটে। কান্দিরপাড় ক্যাম্পাসে।
পান্নার দুই মেয়ে । সাবাহ, সারাহ । দু'জনই আমেরিকায় পড়াশোনা করে । পান্নার বাসা আমাদের রেলমন্ত্রী মুজিব ভাইয়ের বাসার কাছে। নজরুল এভিনিউতে। পান্নাকে বিয়ে করেছে আমারই আরেক বোনের ছেলে অপু । আমেরিকায় আছে ।
শিল্পি নিউ ইয়র্কে আছে স্বামীর সঙ্গে । একমাত্র মেয়ে সামিহা । সেখানেই সেভেন গ্রেডে পড়ে । শিল্পি আমার লিস্টে আছে Shirin Shilpyনামে । লাভলি বিয়ে করেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সহকারি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ছেলেকে । নামঃ স্বপন । ভালো নাম জানি না । স্বপন বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানিতে উচু পদে চাকরি করে। লাভলীর এক মেয়ে । সিমিকা । এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে । বাসা শহরের ঠাকুর পাড়া । একমাত্র ভাগিনা শাহীন কান্দিরপাড় হক টাওয়ারে মোবাইল বিজনেস করে । তার একমাত্র মেয়ে ফয়জুন্নেসা গার্লস হাই স্কুলে সেভেনে পড়ে । ফার্স্ট গার্ল । নাম ভিয়েনা।
এরপর আমাদের এক বোন । নামঃ হাজেরা বেগম । এই বোনকে বাবা মা বিয়ে দিয়েছেন বরুরা থানার মহেশপুর গ্রামে । দুলাভাই স্কুল শিক্ষিক ছিলেন। ২০১০ সালে মারা গেছেন। শুধু এই বোনেরই ডাক নাম আছে । মণি । আর ভাইদের মধ্যে আমার ডাক নাম আছে। এই বোনের চার ছেলে । তিন মেয়ে । মেয়েরা গ্র্যাজুয়েশন করে গ্রামেই বিয়ে করেছে । সবাই হাউজ ওয়াইফ । বড় ভাগিনা বাবুল মাস্টার্স করে গ্রামের এক হাইস্কুলের হেড টিচার । মেজো ভাগিনা জাহাঙ্গীর ইঞ্জিনিয়ার । নরসিংদী জব করে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে । এর ছোট জন সেলিম। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এনথ্রোপোলোজিতে মাস্টার্স করে আইসিডিডিআরবি (ICDDR,B)তে সিনিয়র রিচার্স এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছে । সবচেয়ে ছোটজন আলমগীর মাস্টার্স করে ব্র্যাক ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার ।
এরপর আমাদের এক ভাই । নামঃ কাশেম চৌধুরী । ১৯৯৬ সালে মারা যান । মাত্র ৪৭ বছর বয়সে। উনার দুই ছেলে । বাবলু, পারভেজ । বাবলু গ্র্যাজুয়েশন করে এখন আমেরিকায় আছে ভাবী, বউ বাচ্চা নিয়ে । বাবলুর ভালো নাম Shamim Chowdhury। আমার লিস্টে আছে। আর পারভেজ চায়নার সেনজেন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে এখন হংকংয়ে সেটেল্ড । বিয়ে করেনি ।
এরপর আমাদের এক ভাই । নামঃ সহিদ চৌধুরী । এখন খুব অসুস্থ । উনার তিন মেয়ে এক ছেলে । নার্গিস, বিলকিস, হ্যাপি আর সোহাগ । মেয়ে তিনজনই গ্র্যাজুয়েশন করেছে । নার্গিসের বিয়ে হয়েছে শহরের ধর্মপুর । স্বামী শামসুল হক বিজনেস করে। প্রভাবশালী পরিবার। নার্গিস হাউজ ওয়াইফ । আর বিলকিস প্রেম করে চাচাতো ভাইকে বিয়ে করে আমাদের বাড়িতেই আছে । হ্যাপি ঢাকায় । তার স্বামী এস্কোয়ারের (Esquare) মার্কেটিং অফিসার । সোহাগ মাস্টার্স করে ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে । আমি ওই কোম্পানীর নাম জানি না ।
এরপর আমার ছোট আপা । নামঃ ফরিদা বেগম । বাসা কোতোয়ালি থানার পাশে গাংচর । বাসার নামঃ আনোয়ারা লজ । মাউই আম্মার নাম আনোয়ারা বেগম। সেই হিসেবেই বাসার নাম। আপা N.O.R.P ( Nationala Oral Rehydration Project) তে জব করতেন । এখন রিটায়ার্ড। এক ছেলে । এক মেয়ে । অপু আমেরিকায় আছে । রুমা চবি থেকে মার্কেটিংয়ে মাস্টার্স করে কিছুদিন জব করেছে । এখন হাউজ ওয়াইফ । শহরেই বিয়ে হয়েছে । বাসা ঠাকুরপাড়া । বাসার নামঃ আজমীর মঞ্জিল । তার স্বামী আহমেদুল হক মিঠু M.H English Home নামে কান্দিরপাড় একটা ইংরেজি স্কুলের মালিক । রুমার ভালো নাম Rumena Karim
আমার ছোট দুলাভাইয়ের নাম রেজাউল করিম। তাই রুমার নাম রোমেনা করিম। আমার লিস্টে আছে। রুমার স্বামীর পরিবার খুবই অভিজাত। রুমার হাসব্যন্ডও আমার লিস্টে আছে Syed Ahmedul Hoq।
সবশেষে আমি । ১৯৭৬ সালে আমি যখন সেভেনে উঠি তখন গ্রামের পরিবেশ ভালো ছিলো না । অবশ্য এখনো ভালো না । খুব একটা লেখাপড়া ছিলো না গ্রামে । ওই সময়েই আমার সব বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো । আপারা মাকে বললেন, গ্রামে থাকলে মন্টুর( আমার ডাক নাম) লেখাপড়া হবে না । তাকে আমাদের কাছে দিয়ে দেন মা । আমি ভালো ছাত্র ছিলাম । ক্লাশে ফার্স্ট বয় ছিলাম । সেই থেকে আমি শহরে বসবাস করি । এসএসসি , এইচএসসিতে ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছিলাম । স্টুডেন্ট ভিসায় সুযোগ পেয়ে জাপান যাই ১৯৮৬ সালে । কিন্তু ভালো লাগেনি বলে এক বছর পর চলে আসি । আমার ব্র্যাক অফ স্টাডি হয়ে যায় । তারপর চবি থেকে সেকেন্ড ক্লাশে গ্র্যাজুয়েশন করে ঢাবিতে আই আরে ভর্তি হই । সেখানের পাঠ চুকিয়ে চলে যাই ইউরোপ । ছয় বছর ছিলাম ইউরোপে ।
এরপর ১৯৯৫ সালে যাই আমেরিকা । ফিরে আসি ২০০৪ সালে । ভ্রমণ করেছি ২৬টি দেশ। এর মাঝেই আমার মাথায় লেখালেখির ভুত চাপে । যায়যায়দিন, নিউ ইয়র্কের ঠিকানা, প্রবাসী, বাংলাপত্রিকায় নিয়মিত লেখা শুরু করি । দেশে এসে ভোরের কাগজ, মৌচাকে ঢিল, অগ্রজ, কুমিল্লার কাগজ, রূপসী বাংলায় লিখতে থাকি । ১৯৭৬ সালের পর আমি স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়িতে আসি ২০০৪ সালে। ২৮ বছর পর ! এই শুরু হলো আমার এডজাস্টমেন্ট সমস্যা । আহারে যন্ত্রণা ! গ্রামের লোকজন আমাকে বলে পাগল। আর আমি দেখি ওরা সবাই পাগল।
জাপানে জাপানি ভাষার কোর্স করেছিলাম । অস্টৃয়ায় জার্মান ভাষার কোর্স করেছিলাম, নিউ ইয়র্কে ক্যাপলানে (Kaplan) ইংরেজির উপর কোর্স করেছিলাম। দেশে এসে জার্নালিজমে পোস্ট গ্র্যজুয়েশন কোর্স করেছিলাম, বৃটিশ কাউন্সিলে জেনারেল ইংলিশের উপর কোর্স করেছিলাম। IELTS কোর্সও করেছি।
২০০৬ সালে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় কয়েকজন মিলে একটা স্কুল করেছিলাম । নামঃ কুমিল্লা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ । ডাইরেক্টর ছিলাম । ভালো ইংরেজি শিক্ষক না পেয়ে সবার অনুরোধে তিন বছর আমিই ইংরেজি পড়িয়েছিলাম । স্কুলের অন্যান্য ডাইরেক্টর তথা মালিকদের দুর্নীতি আর অনিয়মের প্রতিবাদ করে এক পর্যায়ে নিজেই সে স্থান ছেড়ে দিই । এই কারনে সেখানেও কিছু শত্রু তৈরি হয় । আমার এলাকায় একটা স্কুলে আড়াই বছর ইংরেজি পড়িয়েছিলাম । সেখানেও অনেকের দুর্নীতির প্রতিবাদ করে বেরিয়ে আসি । গভর্নিং বডির সবাই আন্ডার মেক্ট্রিক । যোগ্যতা শুধু আওয়ামী লীগ করে । এসব নিয়েও প্রতিবাদ করি । এখানেও কিছু শত্রু তৈরি হয় । তাছাড়া আমি তীব্রভাবেই আওয়ামী লীগ বিরোধী। বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বই দেয়ার নামে রাজনৈতিক বক্তব্য রেখে ছাত্রছাত্রীদের মগজ ধোলাই করা হয় আর শুধু হাসিনা আর শেখ মুজিবের গুনগান করা হয়। আমি এসব ফেসবুকে লিখি । শত্রু সৃষ্টি হয় এ কারনেও।
ফেসবুকে বেশিরভাগই আমার জীবনের কথা লিখি । যাদের সঙ্গে আমার এক সময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো সে সব কথাও আমি ফেবুতে লিখি। অনেক মেয়ে বন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও লিখি। আমার কাছে এসব আমার জীবনের গল্প। কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য লিখি না।
নোয়াখালীর এক দম্পতির সঙ্গেও আমার খুব ঘনিষ্ঠতা ছিলো। সম্পর্ক তারাই আমার সঙ্গে করেছিলেন। তার স্ত্রী আমার লেখা খুব পছন্দ করতেন। ঘনিষ্ঠতার এক পর্যায়ে ওই ভদ্রলোক আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় এবং আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। ওই দম্পতি আমার বাসায়ও এসেছিলেন। ফেসবুকেই আমার সঙ্গে তাদের পরিচয়। তাদের নিয়ে আমি তিন চারটি পোষ্টও লিখেছিলাম, তাদের ছবিসহ। । তারাও নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য আমার বিরুদ্ধে এসব লিখতে পারেন অথবা আমার এলাকার অনেক এইট নাইন পাশ মসজিদ কমিটির আর স্কুলের গভর্নিং বডির “ভদ্রলোক”রাও এই কাজ করতে পারেন। আমার সন্দেহের আঙুল দু'দিকেই।
এলাকার অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়েও লিখতে আমি ভয় পাই না । এসব কারনে কিছু লোক ফেইক একাউন্ট খোলে নিজের ছবি না দিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানান রকম নোংরা কথা বলছে । আমার বন্ধুদের সে সব নিকৃষ্ট শ্রেণির লোকদের কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আন্তরিক অনুরোধ করছি । আমি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমি আমার সারা জীবনে কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলাম না । আজো নেই । ভবিষ্যতেও থাকবো না ইনশাল্লাহ । কেউ আমার কোনো অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি, অনৈতিক কাজের প্রমাণ দিতে পারলে আমি স্বেচ্ছায় আত্নহুতি দেবো। সত্য আর ন্যায়ের পক্ষে থাকলে শত্রু সৃষ্টি হবেই। এটা মেনে নিয়েই সত্য ও ন্যায় আকড়ে ধরে থাকবো।
কোকাকোলাতে চাকরি করে আমার ছাত্র ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা প্রায় প্রতিদিন আমার বাসায় আসে । আমার খোঁজ খবর নেয় । কখনোবা শরীর খারাপ থাকলে টিপে দেয় । ছেলেটি এক বাচ্চার বাবা। আমাকে খুব শ্রদ্ধা করে ও ভালোবাসে।
সে আজ আমাকে বললো, "স্যার , আপনার অবস্থা হইছে সক্রেটিসের মতো । সক্রেটিসকে তো অন্যায় অপবাদ দিয়ে মেরেই ফেললো। ফালতু আর অশিক্ষিত লোকেরা অনেক কিছু বলবে । এতে মন খারাপ করবেন না । আমাদের নবীজিকেও তো মক্কার লোকেরা কম অপবাদ দেয়নি । শেষ পর্যন্ত তাদের অত্যাচারে নবীজি মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে যান । ঈশা নবীকে তো ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যাই করা হলো।
আপনি এতো দেশ ঘুরেছেন । এতো অভিজ্ঞতা । এতো লেখালেখি করেন । আর আপনার এলাকার লোকগুলোকে দেখেন । আপনার ইউনিয়ন পরিষদে কি এমন কেউ আছে যে ২৬টি দেশ ভ্রমণ করেছে? আপনার ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের সঙ্গে কারো মিলে? এরা আপনাকে হিংসা করে।"
আমি আবারো বন্ধুদের সবিনয়ে অনুরোধ করবো, কোনো ফেসবুক একাউন্ট থেকে আমার বিরুদ্ধে কোনো বাজে কথা বলা হলে তা যেন আপনারা কাইন্ডলি ডিসরিগার্ড করেন । থ্যাংক ইউ অল ।
(ইঞ্জিনিয়ার রানার ছবি । আমার লিস্টে আছে Masud Rana)।
,2018
কুমিল্লা ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন