সৌদিদের কুকীর্তি
বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো সৌদি আরবে কথিত দূর্নীতির নামে রাজ পরিবারের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করে পাঁচ তারকা হোটেল রিৎজ কার্লটন (Ritz Carlton) এ রাখা হয়েছে । একজন প্রিন্সের হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে প্রিন্সসহ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে । এসব করা হয়েছে মূলত বর্তমান বাদশাহ-র ৩২ বছর বয়সি পুত্র ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সিংহাসনে বসার পথ সুগম করার জন্য । ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি সফরের পরই এসব করা হয়েছে । কয়েকটি নিউজ পোর্টালে পড়লাম, সৌদি আরবকে চার ভাগে বিভক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে আমেরিকান প্রশাসন । তাতে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী রাজীও হয়েছে । মক্কা মদিনাকে ভ্যাটিকানের মতো ছোট করে আলাদা করা হবে । কয়েকদিন আগে মিডল ইস্ট মনিটরে পড়লাম, গ্রেফতারকৃতদের ৭০% টাকা রাজকীয় কোষাগারে জমা দিলে তাদের মুক্তি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে । গ্রেফতারকৃতরা সবাই রাজ পরিবাদের সদস্য । এ যেন মুক্তিপন আদায় করার মতো ! অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, রাজ পরিবারের সদস্য হলে তাদের কেন গ্রেফতার করা হবে ? সৌদি আরব রাজতন্ত্রে শাসিত এক দেশ । ৫০/১০০/২০০ বছর আগেও যিনি বাদশাহ ছিলেন তার নাতিপুতিরাও রাজ পরিবারের সদস্য । সেই হিসেবে সৌদি আরবে কয়েক হাজার রাজ পরিবারের সদস্য আছে । এক প্রিন্সেস সৌদি আরবের আসল মুখোশ উম্মোচন করে সাক্ষাতকারে বলেছেন, সৌদি আরবে এখনো দাস প্রথা বিদ্যমান আছে । জেদ্দা নগরীতে প্রাচীন কালের মতোই দাস বিক্রি হয় । এইতো কিছুদিন আগে সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি ফতোয়া দিয়েছেন, “ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হারাম !”
অনেকদিন আগে আমি সৌদি আরব নিয়ে একটা নোট লিখেছিলাম । এতে আমার কিছু বন্ধু মনঃক্ষুন্ন হয়ে কমেন্ট করেছিলেন । মক্কা মদিনা সৌদি আরবে বলে অনেকের সৌদি আরবের প্রতি বেশি দূর্বলতা আছে । আমাদের দেশের অনেক সাধারণ মানুষ সৌদিদের কুকীর্তি সম্পর্কে জানেনও না । সৌদি আরবের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বলা যে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা নয় তা অনেকেই বুঝতে চান না । অথবা বুঝেন না । সৌদি আরবের লোকেরা প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না বলেও আমি ওই নোটে উল্লেখ করেছিলাম । সৌদি আরবে যেমন আমাদের নবীজি জন্ম গ্রহন করেছিলেন তেমনি জন্ম গ্রহন করেছিলেন আবু জাহেল, আবু তালেবের মতো অসংখ্য নাফরমান ও কাফের ।
কয়েকদিন আগে আমি বলেছিলাম, টাইমলাইন চেক করছি । আজ টাইমলাইন চেক করতে গিয়ে আমার ওই নোটটি পেলাম । নবীজির মৃত্যুর পর থেকেই ক্ষমতা দখল নিয়ে সৌদি আরবের লোকেরা মারামারি কাটাকাটিতে লিপ্ত । তাই সৌদি আরবের লোকেরা ভালো তা মনে করার কোনো কারন নেই । সেই নোটটি আবার আজ দিলাম ...
অষ্টাদশ শতাব্দীর দার্শনিক ও ধর্মীয় নেতা মোহাম্মদ আবদ আল ওয়াহাব (১৭০৩-১৭৯২) এর সময় থেকেই সৌদিরা প্রকৃত ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছে । ওরা ওয়াহাবি সম্প্রদায়ের লোক । প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না । আজ আবার কতোগুলো বই ও নেটে চেক করে এখানে একটিও ভুল পাই নি । তাছাড়া যার বই কনসাল্ট করে আমি লিখেছিলাম তার শিক্ষা ও জ্ঞানের উপর আমার অগাধ আস্থা আছে । তিনি হার্ভার্ড-অক্সফোর্ড শিক্ষিত ভদ্র মহিলা । তিনি এতোই মেধাবী ছিলেন যে, তিনি অক্সফোর্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন ।
তাছাড়া বইটি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা নয় । বইটিতে ইসলাম ধর্মের প্রতি তার ভালোবাসা ও বিশ্বাস স্পষ্ট করেছেন । তিনি মুসলিম বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী । দুবাইতে ৮ বছর নির্বাসিত জীবনে তিনি প্রচুর লেখাপড়া ও গবেষণা করে বইটি লিখেছেন । ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকতবাগে বিশাল জনসমুদ্রে ভাষণ দেয়ার পর । ওইদিন সকালে এই বইটি চুড়ান্তভাবে এডিট করা পাণ্ডুলিপিটি ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্ক এ,সিয়েগেলের হাতে পৌঁছে । সেদিন বিকেলেই তিনি নিহত হন । বইটি তার মৃত্যুর পর প্রথম প্রকাশ করে প্রকাশনা সংস্থা হারপার কলিন্স ২০০৮ সালে ।
এই লেখায় সে সময় অনেকেই কমেন্ট করেছিলেন যে, আমার সূত্র অথেনটিক নয় । যারা এমন কমেন্ট করেছেন, তাদের আগেই বলে দিই, পারলে অথেনটিক সূত্র উল্লেখ করবেন । ভাসা ভাসা জ্ঞান নিয়ে মন্তব্য করা থাকে বিরত থাকুন । কষ্ট করে পড়বো, লিখবো আর আপনি উড়ে এসে না জেনে কমেন্ট করবেন তা হয় না ।
এখানে এক চুল পরিমাণ মিথ্যা নেই । বইটিতে পবিত্র কোরানের শত শত উদ্বৃতি আছে । মূলত: এটি একটি গবেষণামূলক বই । তাছাড়া তার বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টো সুন্নী মুসলিম আর মা নুসরাত ভুট্টো শিয়া মুসলিম । ওই পরিবারে বেড়ে উঠা এই মেধাবী মহিলার বইয়ের লেখা আমি অবশ্যই বিশ্বাস করবো । বিশ্ববিদ্যালয় লেবেলে গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে আমারো ৩০০ নাম্বারের ইসলামের ইতিহাস ছিলো । ওইসব বইতেও আমি তাই পড়েছি । তবে আমি অবশ্যই অন্যকে তা বিশ্বাস করার জন্য বলবো না । এটা যার যার নিজস্ব অধিকার । আমি পড়ে যে তথ্য পেয়েছি তা জানানোই লেখার উদ্দেশ্য ।
গোড়ার দিকে ইসলামে কিভাবে গোষ্ঠী সৃস্টি হলো তা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আলোচনা করলে আজকের আধুনিক মুসলিম সমাজকে বুঝতে সুবিধা হবে । এই বিভক্তি ১৩শ’বছর ধরে মুসলমানদের কাছ থেকে মুসলমানদেরকে পৃথক করে রেখেছে ।
রাসুলুল্লাহ(সঃ)-এর মৃত্যুর পর মুসলমানদের যারা শাসন করেছেন তাদের খলিফা বলা হয় । শিয়ারা বিশ্বাস করে যে প্রথম খলিফা ছিলেন হজরত আলী । আলী ছিলেন রাসুল (সঃ)এর চাচাতো ভাই এবং নবীজির কন্যা ফাতিমাকে বিয়ে করেছিলেন । হজরত আলী হলেন রাসুলের দৌহিত্রদের পিতা । কিন্তু সুন্নীরা আবু বকরকেই প্রথম খলিফা বলে মনে করে । শিয়া এবং সুন্নীরা হলো ইসলামের সবচেয়ে বড় দুটি গোষ্ঠী । তাদের ধর্মীয় মতবাদ এবং ইতিহাস জানা ও বোঝা জরুরী । শিয়া এবং সুন্নীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মতপার্থক্য দেখা দেয় নবী মোহাম্মদের প্রতিষ্ঠিত মুসলমান সমাজের কে হবেন পরবর্তী নেতা তা নিয়ে । শিয়ারা দাবি করে, নবী মোহাম্মদ শেষবার হিজরতকালে পথিমধ্যে দাঁড়িয়ে পড়েন এবং তার সহযাত্রীদের সম্মুখে ঘোষণা করেন হজরত আলী হবেন পরবর্তী উত্তরাধিকারী । কিন্তু সুন্নীরা বিশ্বাস করে, মৃত্যু শয্যায় শায়িত নবী তার আরেক স্ত্রীর পিতা আবু বকরকে উত্তরাধিকার নির্বাচন করেন । শিয়াদের বক্তব্য হলো, আলী যখন নবী মোহাম্মদকে কবর দিতে ব্যস্ত তখন হজরত উমর (পরবর্তীতে ২য় খলিফা নির্বাচিত হন)সাহাবাদেরকে ডাকেন এবং আবু বকরকে নেতা নির্বাচিত করেন । সুন্নী মুসলমানরা বলে, আবু বকরের নির্বাচনই সঠিক । শিয়ারা বলে প্রকৃতপক্ষে আলী প্রথম খলিফা এবং ইমাম ।
আবু বকরের পর উমর এবং উসমান খলিফা নির্বাচিত হোন । উসমানের হত্যাকাণ্ডের পর আলী চতুর্থ খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হোন এবং সকলেই তা মেনে নেয় । শুধু বর্তমান সিরিয়ায় তখন যারা বাস করতো তারা ব্যতীত । ৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দে উসমানের ভাগ্নে মোয়াবিয়া আলীর ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করেন । যদিও সেই যুদ্ধ ছিলো অমীমাংসিত, কিন্তু আলীর প্রশাসন ভেঙে পড়তে থাকে । অবশেষে আলী ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে আততায়ীর হাতে নিহত হন এবং তার পুত্র ও নবীর দৌহিত্র হোসেন ক্ষমতারোহন করেন ।
কিন্তু মুসলিম বিশ্বের নেতা হয়ে উঠা মোয়াবিয়া তাকে অস্বীকার করেন । মোয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার পুত্র ইয়াজিদ ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেন । কিন্তু তৎকালীন ইরাকিরা আলীর দ্বিতীয় পুত্র হুসেনকে সমর্থন করেন । হুসেন ইরাকের নগরী কুফায় গমন করেন । তিনি সেখান থেকে খিলাফতের দাবিতে রাজধানী দামাস্কাস অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করেন এবং দামাস্কাস অভিমুখে রওয়ানা হন । পথিমধ্যে কারবালা নামক স্থানে তিনি ইয়াজিদ বাহিনীর হামলার শিকার হন । ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হুসেনের পরিবারসহ শিশুদের খাবার পানি সরবরাহ করতে অস্বীকার করেন । তাদেরকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করা হয় এবং নবী মোহাম্মদের দৌহিত্র হুসেনের শিরচ্ছেদ করা হয় । তার সেই বিচ্ছিন্ন মুণ্ড এবং হোসেনের বোন জয়নাবকে ইয়াজিদের দরবারে নিয়ে যাওয়া হয় । কারবালার ধ্বংসযজ্ঞে জয়নাবই ছিলেন একমাত্র জীবিত । শিয়ারা এই ঘটনাকে তাদের ইতিহাসের উৎস মনে করে । তারা আলী এবং হুসেনসহ নবী পরিবারের যারা নিহত হয়েছেন তাদের জীবন্ত প্রতীক বলে মনে করে । এখান থেকেই তারা একটি গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয় । তাদের চিন্তায় থেকে যায় অত্যাচার, করুণ ঘটনা, এবং শহীদ হওয়ার কাহিনী ।
সুন্নী ইসলামে আইন বিষয়ক চারটি তরিকা রয়েছে । এগুলো হলো হানাফি, সাফি, মালিকি, এবং হানবালি । অন্য একটি উঠে আসা গোষ্ঠী হলো ওয়াহাবি গোষ্ঠী । এই ওয়াহাবিরাই আজকের সৌদি আরবে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাশীন ।
এই সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা অষ্টাদশ শতাব্দীর দার্শনিক ও ধর্মীয় নেতা মোহাম্মদ আবদ আল ওয়াহাব (১৭০৩-১৭৯২) । তিনি মুলত হানবালি মতাদর্শের অনুসারী । ওয়াহাব আরব প্রধান ইবনে সৌদের সঙ্গে হাত মেলান এবং তারা দু’জনে মিলে আরব উপদ্বীপ দখল করে নেন । যদিও এই অঞ্চল অটোম্যান সাম্রাজের অধীনে ছিলো, কিন্তু পরে সৌদের পরিবার এই এলাকা পুনর্দখল করে নেয় এবং আধুনিক সৌদি আরব প্রতিষ্ঠা করে । সউদের পরিবারই রাজপরিবারের মর্যাদা লাভ করে এবং রাজ্যের ইসলাম চর্চা শুরু হয় ওয়াহাবি মতবাদ অনুসারে ।
তারা জামাতে উপস্থিত হওয়াকে বাধ্যতামুলক করে । ওয়াবিরা শিয়াদের সহ্য করতে পারেনি । ১৮০২ সালে আধুনিক ইরাকের কারবালাকে ওয়াবিরা ধ্বংস করে এবং যতো শিয়া পুরুষ , নারী ও শিশু পাওয়া যায় তাদেরকে হত্যা করে । শিয়া সম্প্রদায়ের নিকট কারবালা একটি পবিত্রতম শহর । ইরান আর সৌদি আরবের মধ্যে যে তীব্র বিরোধ তার উৎপত্তি সেখান থেকেই । এটা ইতিহাসের কথা । আমার কথা নয় ।
ওয়াহাবি মতবাদের অনুসারীরা একটি কট্টর ও উগ্র সম্প্রদায় । তারা মুসলমানদের কিছু সম্প্রদায়কে স্বধর্মত্যাগী মনে করে । ওয়াহাবিরা মনে করে শিয়াদের হত্যা করা তাদের ধর্মীয় দায়িত্ব । যে কারনে ইসলামের প্রানকেন্দ্র রক্তাক্ত হয়েছে এবং গৃহযুদ্ধ বেঁধেছে । অধিকাংশ সুন্নী মনে করে, বিরোধীতার সবচেয়ে বড় কারন হলো, ওয়াহাবিরা তাদের চিন্তা ও কর্মকাণ্ডকে গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সহিংস হয়ে উঠেছে ।
তথ্যসূত্রঃReconciliation: Islam, Democracy and The West.
Benazir Bhutto
Former Prime Minister of Pakistan.
Benazir Bhutto was the 11th Prime Minister of Pakistan and the leader of the centre-left Pakistan Peoples Party. She was the first woman to head a Muslim majority nation.
Born: June 21, 1953, Karachi, Pakistan
Assassinated: December 27, 2007, Rawalpindi, Pakistan
Spouse: Asif Ali Zardari (m. 1987–2007)
Parents: Zulfikar Ali Bhutto, Nusrat Bhutto
Children: Bilawal Bhutto Zardari, Bakhtawar Bhutto Zardari, Asifa Bhutto Zardari
Quotes
*Democracy is necessary to peace and to undermining the forces of terrorism.
*The government I led gave ordinary people peace, security, dignity, and opportunity to progress.
*Military hardliners called me a 'security threat' for promoting peace in South Asia and for supporting a broad-based government in Afghanistan.
বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো সৌদি আরবে কথিত দূর্নীতির নামে রাজ পরিবারের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করে পাঁচ তারকা হোটেল রিৎজ কার্লটন (Ritz Carlton) এ রাখা হয়েছে । একজন প্রিন্সের হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে প্রিন্সসহ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে । এসব করা হয়েছে মূলত বর্তমান বাদশাহ-র ৩২ বছর বয়সি পুত্র ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সিংহাসনে বসার পথ সুগম করার জন্য । ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি সফরের পরই এসব করা হয়েছে । কয়েকটি নিউজ পোর্টালে পড়লাম, সৌদি আরবকে চার ভাগে বিভক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে আমেরিকান প্রশাসন । তাতে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী রাজীও হয়েছে । মক্কা মদিনাকে ভ্যাটিকানের মতো ছোট করে আলাদা করা হবে । কয়েকদিন আগে মিডল ইস্ট মনিটরে পড়লাম, গ্রেফতারকৃতদের ৭০% টাকা রাজকীয় কোষাগারে জমা দিলে তাদের মুক্তি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে । গ্রেফতারকৃতরা সবাই রাজ পরিবাদের সদস্য । এ যেন মুক্তিপন আদায় করার মতো ! অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, রাজ পরিবারের সদস্য হলে তাদের কেন গ্রেফতার করা হবে ? সৌদি আরব রাজতন্ত্রে শাসিত এক দেশ । ৫০/১০০/২০০ বছর আগেও যিনি বাদশাহ ছিলেন তার নাতিপুতিরাও রাজ পরিবারের সদস্য । সেই হিসেবে সৌদি আরবে কয়েক হাজার রাজ পরিবারের সদস্য আছে । এক প্রিন্সেস সৌদি আরবের আসল মুখোশ উম্মোচন করে সাক্ষাতকারে বলেছেন, সৌদি আরবে এখনো দাস প্রথা বিদ্যমান আছে । জেদ্দা নগরীতে প্রাচীন কালের মতোই দাস বিক্রি হয় । এইতো কিছুদিন আগে সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি ফতোয়া দিয়েছেন, “ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হারাম !”
অনেকদিন আগে আমি সৌদি আরব নিয়ে একটা নোট লিখেছিলাম । এতে আমার কিছু বন্ধু মনঃক্ষুন্ন হয়ে কমেন্ট করেছিলেন । মক্কা মদিনা সৌদি আরবে বলে অনেকের সৌদি আরবের প্রতি বেশি দূর্বলতা আছে । আমাদের দেশের অনেক সাধারণ মানুষ সৌদিদের কুকীর্তি সম্পর্কে জানেনও না । সৌদি আরবের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বলা যে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা নয় তা অনেকেই বুঝতে চান না । অথবা বুঝেন না । সৌদি আরবের লোকেরা প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না বলেও আমি ওই নোটে উল্লেখ করেছিলাম । সৌদি আরবে যেমন আমাদের নবীজি জন্ম গ্রহন করেছিলেন তেমনি জন্ম গ্রহন করেছিলেন আবু জাহেল, আবু তালেবের মতো অসংখ্য নাফরমান ও কাফের ।
কয়েকদিন আগে আমি বলেছিলাম, টাইমলাইন চেক করছি । আজ টাইমলাইন চেক করতে গিয়ে আমার ওই নোটটি পেলাম । নবীজির মৃত্যুর পর থেকেই ক্ষমতা দখল নিয়ে সৌদি আরবের লোকেরা মারামারি কাটাকাটিতে লিপ্ত । তাই সৌদি আরবের লোকেরা ভালো তা মনে করার কোনো কারন নেই । সেই নোটটি আবার আজ দিলাম ...
অষ্টাদশ শতাব্দীর দার্শনিক ও ধর্মীয় নেতা মোহাম্মদ আবদ আল ওয়াহাব (১৭০৩-১৭৯২) এর সময় থেকেই সৌদিরা প্রকৃত ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছে । ওরা ওয়াহাবি সম্প্রদায়ের লোক । প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না । আজ আবার কতোগুলো বই ও নেটে চেক করে এখানে একটিও ভুল পাই নি । তাছাড়া যার বই কনসাল্ট করে আমি লিখেছিলাম তার শিক্ষা ও জ্ঞানের উপর আমার অগাধ আস্থা আছে । তিনি হার্ভার্ড-অক্সফোর্ড শিক্ষিত ভদ্র মহিলা । তিনি এতোই মেধাবী ছিলেন যে, তিনি অক্সফোর্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন ।
তাছাড়া বইটি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা নয় । বইটিতে ইসলাম ধর্মের প্রতি তার ভালোবাসা ও বিশ্বাস স্পষ্ট করেছেন । তিনি মুসলিম বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী । দুবাইতে ৮ বছর নির্বাসিত জীবনে তিনি প্রচুর লেখাপড়া ও গবেষণা করে বইটি লিখেছেন । ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকতবাগে বিশাল জনসমুদ্রে ভাষণ দেয়ার পর । ওইদিন সকালে এই বইটি চুড়ান্তভাবে এডিট করা পাণ্ডুলিপিটি ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্ক এ,সিয়েগেলের হাতে পৌঁছে । সেদিন বিকেলেই তিনি নিহত হন । বইটি তার মৃত্যুর পর প্রথম প্রকাশ করে প্রকাশনা সংস্থা হারপার কলিন্স ২০০৮ সালে ।
এই লেখায় সে সময় অনেকেই কমেন্ট করেছিলেন যে, আমার সূত্র অথেনটিক নয় । যারা এমন কমেন্ট করেছেন, তাদের আগেই বলে দিই, পারলে অথেনটিক সূত্র উল্লেখ করবেন । ভাসা ভাসা জ্ঞান নিয়ে মন্তব্য করা থাকে বিরত থাকুন । কষ্ট করে পড়বো, লিখবো আর আপনি উড়ে এসে না জেনে কমেন্ট করবেন তা হয় না ।
এখানে এক চুল পরিমাণ মিথ্যা নেই । বইটিতে পবিত্র কোরানের শত শত উদ্বৃতি আছে । মূলত: এটি একটি গবেষণামূলক বই । তাছাড়া তার বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টো সুন্নী মুসলিম আর মা নুসরাত ভুট্টো শিয়া মুসলিম । ওই পরিবারে বেড়ে উঠা এই মেধাবী মহিলার বইয়ের লেখা আমি অবশ্যই বিশ্বাস করবো । বিশ্ববিদ্যালয় লেবেলে গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে আমারো ৩০০ নাম্বারের ইসলামের ইতিহাস ছিলো । ওইসব বইতেও আমি তাই পড়েছি । তবে আমি অবশ্যই অন্যকে তা বিশ্বাস করার জন্য বলবো না । এটা যার যার নিজস্ব অধিকার । আমি পড়ে যে তথ্য পেয়েছি তা জানানোই লেখার উদ্দেশ্য ।
গোড়ার দিকে ইসলামে কিভাবে গোষ্ঠী সৃস্টি হলো তা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আলোচনা করলে আজকের আধুনিক মুসলিম সমাজকে বুঝতে সুবিধা হবে । এই বিভক্তি ১৩শ’বছর ধরে মুসলমানদের কাছ থেকে মুসলমানদেরকে পৃথক করে রেখেছে ।
রাসুলুল্লাহ(সঃ)-এর মৃত্যুর পর মুসলমানদের যারা শাসন করেছেন তাদের খলিফা বলা হয় । শিয়ারা বিশ্বাস করে যে প্রথম খলিফা ছিলেন হজরত আলী । আলী ছিলেন রাসুল (সঃ)এর চাচাতো ভাই এবং নবীজির কন্যা ফাতিমাকে বিয়ে করেছিলেন । হজরত আলী হলেন রাসুলের দৌহিত্রদের পিতা । কিন্তু সুন্নীরা আবু বকরকেই প্রথম খলিফা বলে মনে করে । শিয়া এবং সুন্নীরা হলো ইসলামের সবচেয়ে বড় দুটি গোষ্ঠী । তাদের ধর্মীয় মতবাদ এবং ইতিহাস জানা ও বোঝা জরুরী । শিয়া এবং সুন্নীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মতপার্থক্য দেখা দেয় নবী মোহাম্মদের প্রতিষ্ঠিত মুসলমান সমাজের কে হবেন পরবর্তী নেতা তা নিয়ে । শিয়ারা দাবি করে, নবী মোহাম্মদ শেষবার হিজরতকালে পথিমধ্যে দাঁড়িয়ে পড়েন এবং তার সহযাত্রীদের সম্মুখে ঘোষণা করেন হজরত আলী হবেন পরবর্তী উত্তরাধিকারী । কিন্তু সুন্নীরা বিশ্বাস করে, মৃত্যু শয্যায় শায়িত নবী তার আরেক স্ত্রীর পিতা আবু বকরকে উত্তরাধিকার নির্বাচন করেন । শিয়াদের বক্তব্য হলো, আলী যখন নবী মোহাম্মদকে কবর দিতে ব্যস্ত তখন হজরত উমর (পরবর্তীতে ২য় খলিফা নির্বাচিত হন)সাহাবাদেরকে ডাকেন এবং আবু বকরকে নেতা নির্বাচিত করেন । সুন্নী মুসলমানরা বলে, আবু বকরের নির্বাচনই সঠিক । শিয়ারা বলে প্রকৃতপক্ষে আলী প্রথম খলিফা এবং ইমাম ।
আবু বকরের পর উমর এবং উসমান খলিফা নির্বাচিত হোন । উসমানের হত্যাকাণ্ডের পর আলী চতুর্থ খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হোন এবং সকলেই তা মেনে নেয় । শুধু বর্তমান সিরিয়ায় তখন যারা বাস করতো তারা ব্যতীত । ৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দে উসমানের ভাগ্নে মোয়াবিয়া আলীর ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করেন । যদিও সেই যুদ্ধ ছিলো অমীমাংসিত, কিন্তু আলীর প্রশাসন ভেঙে পড়তে থাকে । অবশেষে আলী ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে আততায়ীর হাতে নিহত হন এবং তার পুত্র ও নবীর দৌহিত্র হোসেন ক্ষমতারোহন করেন ।
কিন্তু মুসলিম বিশ্বের নেতা হয়ে উঠা মোয়াবিয়া তাকে অস্বীকার করেন । মোয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার পুত্র ইয়াজিদ ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেন । কিন্তু তৎকালীন ইরাকিরা আলীর দ্বিতীয় পুত্র হুসেনকে সমর্থন করেন । হুসেন ইরাকের নগরী কুফায় গমন করেন । তিনি সেখান থেকে খিলাফতের দাবিতে রাজধানী দামাস্কাস অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করেন এবং দামাস্কাস অভিমুখে রওয়ানা হন । পথিমধ্যে কারবালা নামক স্থানে তিনি ইয়াজিদ বাহিনীর হামলার শিকার হন । ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হুসেনের পরিবারসহ শিশুদের খাবার পানি সরবরাহ করতে অস্বীকার করেন । তাদেরকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করা হয় এবং নবী মোহাম্মদের দৌহিত্র হুসেনের শিরচ্ছেদ করা হয় । তার সেই বিচ্ছিন্ন মুণ্ড এবং হোসেনের বোন জয়নাবকে ইয়াজিদের দরবারে নিয়ে যাওয়া হয় । কারবালার ধ্বংসযজ্ঞে জয়নাবই ছিলেন একমাত্র জীবিত । শিয়ারা এই ঘটনাকে তাদের ইতিহাসের উৎস মনে করে । তারা আলী এবং হুসেনসহ নবী পরিবারের যারা নিহত হয়েছেন তাদের জীবন্ত প্রতীক বলে মনে করে । এখান থেকেই তারা একটি গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয় । তাদের চিন্তায় থেকে যায় অত্যাচার, করুণ ঘটনা, এবং শহীদ হওয়ার কাহিনী ।
সুন্নী ইসলামে আইন বিষয়ক চারটি তরিকা রয়েছে । এগুলো হলো হানাফি, সাফি, মালিকি, এবং হানবালি । অন্য একটি উঠে আসা গোষ্ঠী হলো ওয়াহাবি গোষ্ঠী । এই ওয়াহাবিরাই আজকের সৌদি আরবে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাশীন ।
এই সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা অষ্টাদশ শতাব্দীর দার্শনিক ও ধর্মীয় নেতা মোহাম্মদ আবদ আল ওয়াহাব (১৭০৩-১৭৯২) । তিনি মুলত হানবালি মতাদর্শের অনুসারী । ওয়াহাব আরব প্রধান ইবনে সৌদের সঙ্গে হাত মেলান এবং তারা দু’জনে মিলে আরব উপদ্বীপ দখল করে নেন । যদিও এই অঞ্চল অটোম্যান সাম্রাজের অধীনে ছিলো, কিন্তু পরে সৌদের পরিবার এই এলাকা পুনর্দখল করে নেয় এবং আধুনিক সৌদি আরব প্রতিষ্ঠা করে । সউদের পরিবারই রাজপরিবারের মর্যাদা লাভ করে এবং রাজ্যের ইসলাম চর্চা শুরু হয় ওয়াহাবি মতবাদ অনুসারে ।
তারা জামাতে উপস্থিত হওয়াকে বাধ্যতামুলক করে । ওয়াবিরা শিয়াদের সহ্য করতে পারেনি । ১৮০২ সালে আধুনিক ইরাকের কারবালাকে ওয়াবিরা ধ্বংস করে এবং যতো শিয়া পুরুষ , নারী ও শিশু পাওয়া যায় তাদেরকে হত্যা করে । শিয়া সম্প্রদায়ের নিকট কারবালা একটি পবিত্রতম শহর । ইরান আর সৌদি আরবের মধ্যে যে তীব্র বিরোধ তার উৎপত্তি সেখান থেকেই । এটা ইতিহাসের কথা । আমার কথা নয় ।
ওয়াহাবি মতবাদের অনুসারীরা একটি কট্টর ও উগ্র সম্প্রদায় । তারা মুসলমানদের কিছু সম্প্রদায়কে স্বধর্মত্যাগী মনে করে । ওয়াহাবিরা মনে করে শিয়াদের হত্যা করা তাদের ধর্মীয় দায়িত্ব । যে কারনে ইসলামের প্রানকেন্দ্র রক্তাক্ত হয়েছে এবং গৃহযুদ্ধ বেঁধেছে । অধিকাংশ সুন্নী মনে করে, বিরোধীতার সবচেয়ে বড় কারন হলো, ওয়াহাবিরা তাদের চিন্তা ও কর্মকাণ্ডকে গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সহিংস হয়ে উঠেছে ।
তথ্যসূত্রঃReconciliation: Islam, Democracy and The West.
Benazir Bhutto
Former Prime Minister of Pakistan.
Benazir Bhutto was the 11th Prime Minister of Pakistan and the leader of the centre-left Pakistan Peoples Party. She was the first woman to head a Muslim majority nation.
Born: June 21, 1953, Karachi, Pakistan
Assassinated: December 27, 2007, Rawalpindi, Pakistan
Spouse: Asif Ali Zardari (m. 1987–2007)
Parents: Zulfikar Ali Bhutto, Nusrat Bhutto
Children: Bilawal Bhutto Zardari, Bakhtawar Bhutto Zardari, Asifa Bhutto Zardari
Quotes
*Democracy is necessary to peace and to undermining the forces of terrorism.
*The government I led gave ordinary people peace, security, dignity, and opportunity to progress.
*Military hardliners called me a 'security threat' for promoting peace in South Asia and for supporting a broad-based government in Afghanistan.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন