সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ডায়েরীর পাতায় ১৬ মে, ১৯৭৩, বুধবার

ডায়েরীর পাতায় ১৬ মে, ১৯৭৩, বুধবার ...সারা দিনই রাষ্ট্র প্রধানের ( বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ) মন খুব খারাপ । আমাকে ডেকে বললেন, আমি সর্বদা স্বাধীনভাবে কাজ করেছি। আজ পারছি না । ভাসানী সাহেব আমার পিতৃবন্ধু হওয়া সত্ত্বেও তাকে দেখতে যাওয়ার অধিকার আমার নেই । এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে? বঙ্গবন্ধুর প্রতি এমন বিরূপতা আর কখনও প্রকাশ করেন নি তিনি । আমাকে বিশ্বস্ততার সঙ্গে বললেন, দেশে গণতন্ত্রের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ন া । বঙ্গবন্ধু সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রেখেছেন । তিনি ডিক্টেটরের মতো কাজ করছেন । তার চিন্তার বাইরে অন্য কারো চিন্তার দাম নেই, এভাবে কি চলে ? আমি চুপ করে রইলাম । তিনি বললেন, গণতন্ত্র ব্যক্তির চেয়ে বড় । স্যার আবার বললেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে বলছিলেন, আপনারা আমাকে জাতির পিতা করেছেন । নিজের সম্পর্কে কেউ কি এমন করে বলে ? না, এভাবে কাজ করা আর সম্ভব নয় । ....স্যার বললেন, বঙ্গবন্ধু গাজী গোলাম মোস্তফার একটি নথি পাঠিয়েছেন । সেটিতে সই করার চেয়ে পদত্যাগ করাই মঙ্গল । ২৪ডিসেম্বর ১৯৭৩ সনে পদত্যাগ করলেন রাষ্ট্রপ্রধান আবু সাঈদ চৌধুরী ।" বঙ্গভবনে পাচ বছর, মাহবুব তালুকদার, ইউ...

বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড নিয়ে মিথ্যাচার এবং কয়েকটি প্রশ্ন

বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড নিয়ে মিথ্যাচার এবং কয়েকটি প্রশ্ন আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস। প্রতি বছরের ন্যা য় আজও হয়ত রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে গণহারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে। রায়েরবাজারের আজকের পরিবেশটা দেখলে মনে হবে, কতো না যত্ন করে এই জায়গাটাকে সুরক্ষিত এবং পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অবস্থা থেকে ভিন্ন কিছু নয়। সন্ধ্যা হলে কেন্দ্রীয় শহীদি মিনারে বসে গাজার আসর। এক দল বাউন্ডুলে গিটার গাধে নিয়ে গান ধরে, “গাজার নৌকা পাহাড় তলি যায়, ও মিরা ভাই! গাজার নৌকা পাহাড় তলি যায়! গাজা খাব আটি আটি, মদ খাব বাটি বাটি”। সেখানকার অবস্থাটা এমন যে, সম্ভব হলে শহীদ মিনারের বুকেই গাজার চাষ শুরু করে দিবে কিংবা মদের বার খুলে বসবে! গাজার চাষ সম্ভব না হলেও মধ্যরাতে শহীদ মিনার হয়ে ওঠে অস্থায়ী মদের বার। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের মাস আসলেই এই স্থানগুলো হয়ে ওঠে দেশের সর্বোচ্চ তির্থস্থান। তেমনি রাত হলেই রায়েরবাজার বধ্যভূমি হয়ে ওঠে নেশাখোরদের আশ্রয়স্থল। লোক মুখে শোনা যায় সেটি নাকি হিরোইনচিদের অভয়্যারন্য । প্রতি বছর এই গর্বের এই মাসগুলো আসলে প্রশাসনের ...

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ ১৪ ই ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে বলে আমরা জানি । তাই আজকের এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তানদের জন্য দোয়া ও আত্নার মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের প্রশ্ন : ৯ মাস যুদ্ধের সময় তারা কেন মুক্তিযুদ্ধ করলেন না? কেন তারা ঢাকাতে অবস্থান করলেন ? তাদের এতো মেধা কেন বাংলাদেশের যুদ্ধে সহায়তা করলো না? কেন তারা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে কোন সংবাদ প্রচার করলেন না? কেন ৯ মাস পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করে পাকিদের দেওয়া বেতন- ভাতায় নিজে খেলেন,ছেলে মেয়েদের খাওয়ালেন? যুদ্ধের শেষ সময়ে অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমরাও গ্রামের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আত্নীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। তারা কেন যান নি ? তারা সবাই পাকিস্তান সরকার থেকে সুবিধা নিয়েছেন। তারা পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষায় বিবৃতি দিয়েছিলেন। তারা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। অনেকেই বলেন, আত্নসমর্পনের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি বাহিনী প্রাণ বাঁচাতে এবং আত্নসমর্পন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। ওই সংকটময় মূহুর্...

যুগোস্লাভিয়া

যুগোস্লাভিয়া প্রথম ইউরোপের মাটিতে পা রেখেছিলাম সাবেক যুগোস্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে। ১৯৮৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর । এখনকার ছেলেমেয়েরা যুগোস্লাভিয়া র নামও জানে না । জানবার কথাও নয় । জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম নেতা মার্শাল জোসেফ ব্রুজ টিটোর দেশ । সমাজতান্ত্রিক দেশ হলেও সাবেক সভিয়েট ইউনিয়নের বলয়ভুক্ত ছিলো না যুগোস্লাভিয়া যেমন ছিলো অন্যান্য দেশগুলো । যুগোস্লাভিয়া কমনওয়লেথভুক্ত একটি প্রভাবশালী দেশ ছিলো । যুগোস্লাভিয়ার ইংরেজি বানান Yugoslavia । তখনো যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে টুকরো হয়নি । আমি অস্টৃয়া থাকতেই ১৯৯২ সালে চোখের সামনে প্রতিবেশি যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে সাতটি দেশ হয়েছিলো । ১। বসনিয়া এন্ড হার্জেগোভিনা ২। ক্রোয়েশিয়া ৩। মেসিডোনিয়া ৪। মন্টিনিগ্রো ৫। স্লোভেনিয়া ৬। সারভিয়া এবং ৭। কসোভো । রাজধানী যথাক্রমে-সারাজেবো, জাগরেব, স্কপজি, পোডগোরিকা, লুবজানা,(যুগোস্লাভ উচ্চারণে লুবলিয়ানা), বেলগ্রেড এবং প্রিস্টিনা । তখন যুগোস্লোভিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য পোর্ট অফ এন্টৃ বা ভিসা অন অ্যারাইভেল ছিল । বেলগ্রেড এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে দেখেছিলাম সারা শহর তুষারে ঢাকা । ডিসেম্বরের তীব্র শীত । বেলগ্রেডে...