সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছাত্রীদের ভালোবাসা



ছাত্রীদের ভালোবাসা

নিজের কথাই লিখি বেশি । অনেকের মনে হতে পারে ফেবুতে এতোসব কথা বলা দরকার কি ? আমার মনে হয় একটু ভিন্ন । ছোট ছোট অনেক ব্যক্তিগত ঘটনাও তো একটা গল্প ।
মনে অপরাধবোধ না থাকলে সব কথাই স্পষ্ট করে বলা যায় । বেশ কিছুদিন হয় অসুস্থতা জড়িয়ে ধরেছে । যদিও অন্যদের মতো ফেবুতে লিখে বন্ধুদের দোয়া চাইনি । খারাপ বা দু:সংবাদের কথা লিখতে ভালো লাগে না । সুখের কথা, আনন্দের কথাই লিখতে ভালো লাগে । সুখ ভাগাভাগি করে নেয়া যায় । দু:খ ভাগাভাগি করা যায় না । ওটা শুধুই নিজস্ব । মাঝে মাঝে ভাবি, জীবনে কোনটা বেশি ? সুখ না দুঃখ ?
সকাল সোয়া দশটায় ডোর বেল বাজলো । ঘুম থেকে উঠে দরজা খোলতেই দেখি আমার দুই সাবেক ছাত্রী । ছাত্রী কি কখনো সাবেক হয় ? জানি না । ওরা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে । প্রায় সব ছাত্রছাত্রীর সঙ্গেই আমার বেশ বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক ছিলো । এখনো আছে ।
দরজা খোলতেই নিপা বললো, দিলাম তো স্যার আপনার মেজাজটা খারাপ করে । আমি স্নেহ করে বললাম, আয় । বস । বলেই আমি এসে শুয়ে পড়ি আবার ।
সুমি বললো, নিপা দেখছোস, আগে স্যারের রুমগুলো কতো পরিস্কার থাকতো । এখন কি ময়লা ? আমাকে কিছু না বলেই ওরা আমার ঘর পরিস্কার করতে লাগলো । আমি বিছানা থেকে ডেকে বললাম, আমাকে এক কাপ চা বানিয়ে দে । টেবিলে টি ব্যাগ আছে । পানি গরম করলেই হবে । বিছানা থেকেই আমি চা খেতে খেতে বললাম, এই, তোরা কষ্ট করিস না । আমি গুছিয়ে নেবো । গত কয়েকদিন শরীরটা ভালো যাচ্ছে না । ওরা একে একে আমার দুই রুম ও কিচেন পরিস্কার করে দিলো । ঝাড়ু দেয়া থেকে শুরু করে । আজ অনেক দিনই বাসায় রান্না করি না । তাই সব কিছু অপরিষ্কার ।
এক সময় সুমি এসে বললো, স্যার, উঠেন । বিছানা গুছাবো । আমি উঠে বেসিনে গিয়ে দাঁত ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হলাম । কাজ করতে করতে দুই বন্ধুর খুনসুটি লেগেই আছে । আমার সামনেই ওরা একজন আরেক জনকে বলছে, তুই বেশি কাজ করে স্যারের দোয়া নেস ভালো জামাই পাওয়ার আশায় । নিপা আমাকে বলে, স্যার, আমার বিয়ের সময় দাওয়াত দিলে কিন্তু আপনের যাইতেই হইবো । আমি এই মধ্য বয়সে কিশোরীদের চপলতা অনূভব করছি ।
সুমি বলে, স্যার, বিছানা চাদর দেন । আমি ওয়্যারড্রোব থেকে ধোয়া বেড কভার সুমিকে দিলাম । প্রায় দুই ঘন্টা ধরে ওরা সব পরিস্কার করলো আমার নিষেধ সত্তেও । আমি এক সময় বললাম, তোমাদের ছবি তুলে রাখি স্মৃতি হিসেবে ? নিপা বললো, স্যার, আপনি তো ফেবুতে লিখেন । আমরার কথা লিখলেও নাম লেইখেন না । স্কুলের নামও লেইখেন না । বুঝেন তো স্যার । আমি বললাম, আচ্ছা । ছবি দিলেও পেছন দিকের ছবি দেবো যেন তোদের চিনতে না পারে । দু’জনই খুশি হলো । তাদের বাসায় যেতে আমন্ত্রণ জানালো । উল্লেখ্য, এই দুই ছাত্রীর বাসায় আমি আগেও গিয়েছি । তাদের বাসায় খেয়েছি । তাদের বাবা মাও আমাকে চেনেন ।
যাওয়ার সময় আমি দু’জনকে ডেকে বললাম, দেখেছিস, আমাদের সমাজ কতো নোংরা হয়ে গেছে ? তোরা আমার বাসায় এসেছিস এটাও গোপন রাখতে চাস ? কেউ কেউ ভালোভাবে নেবে না । কি অদ্ভুত ! অথচ তোদের বাবা মা যদি জানে আমার বাসায় এসেছিস তারা কিছুই মনে করবে না । দু’জনই সমস্বরে বললো, স্যার, মাইনসে আপনেরে চিনে না ।
কাজ করা অবস্থায় আমার দুই ছাত্রীর ছবি ।

 December 26, 2017

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর