সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গোল্ডেন জিপিএ বলতে কিছু নেই



গোল্ডেন জিপিএ বলতে কিছু নেই

জেমিমা পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ ( A+) পেয়েছে। দুপুরে ফোনে আমাকে জানালো জিমুর মা। কিছুক্ষণ পর জেমিমাও ফোন করে জানালো। বললাম,রাখো তোমার জিপিএ- ৫ । এখন জাল মারলে বিভিন্ন এলাকায় অনেক জিপিএ-৫ পাওয়া যায়।
" I am GPA- 5" পেয়ে কোনো লাভ নেই । ইংরেজিতে কতো পেয়েছো সেটা বলো ? মেয়ে জানালো ৯৯ ।
আমি এতেই খুশি । মেয়েকে কনগ্র‍্যাচুলেশন জানালাম ।
বললাম, মার্কস সার্টিফিকেট পাঠাও ৷ ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ইমেইলে তার মার্ক সার্টিফিকেট পাঠিয়েছে pdf ফরমেটে । শুধু অংকে পেয়েছে ৯২ । আর সব সাবজেক্টে ৯৪,৯৬ । তবে হাইয়েস্ট মার্ক ইংরেজিতেই পেয়েছে । ৬০০ নাম্বারে ৫৭১ পেয়েছে জেমিমা । ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিও নাকি পাবে । মার্কস সার্টিফিকেটে পিতার নাম 'করিম চৌধুরী' দেখে আমার কেমন যেন এক অনুভূতি হলো ! যা একেবারেই নতুন । মেয়ের কোনো একাডেমিক ডকুমেন্টে এই প্রথম আমার নাম দেখলাম !
অংকে কম পাওয়ার কারন জেনেটিক । ছাত্র জীবনে আমিও অংকে দুর্বল ছিলাম আর ইংরেজিতে ভালো ছিলাম । এক দেড় বছর বয়স থেকে সাড়ে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত আমি সব সময় তাকে ইংরেজি শেখাতাম । সারাক্ষণ আমার সঙ্গেই থাকতো । তবে এই রেজাল্টে তার মা,মামা,খালাদের অবদান অবশ্যই স্বীকার্য । Credit will go to them. I like to take the opportunity to thank them. অবশ্যই বলা দরকার, জেমিমা কোনো প্রাইভেট টিউটরের কাছে এক ঘন্টাও প্রাইভেট পড়েনি এবং কোনো কোচিং করেনি।
রেজাল্ট আউটের পাঁচ দিন আগেই গত ২০ তারিখে মনিপুর স্কুলে ইংরেজি ভার্সানে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েও সে টিকে গেছে । এখন হারমান মেইনার আর হলিক্রসের আশায় আছে । মনিপুরও খারাপ স্কুল নয়। এটাতে ইন্টারমেডিয়েট পর্যন্ত আছে । এখানেই কলেজ জীবন শেষ করতে পারবে । এই স্কুল ও কলেজের চারটি ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি ক্যাম্পাস বাসার কাছেই । স্কুলের নিজস্ব গাড়ি ।
এখন সেনানিবাস মার্কেটে এসে এম.আর কম্পিউটারে বন্ধু রবিউলের কাছে জানতে চাইলাম গোল্ডেন জিপিএ কি ? আমিতো শুধু জিপিএ বুঝি । আমরাতো পুরনো দিনের মানুষ । আমরা জানি, স্ট্যান্ড করা, স্টার মার্কস, লেটার মার্কস, ফার্স্ট ডিভিশন, সেকন্ড ডিভিশন ইত্যাদি । রবিউল বললো, গোল্ডেন জিপিএ বলতে কিছু নেই ৷ প্রতি সাবজেক্টে যদি ৮০ বা ৮০ এর উপরে মার্কস পায় তবে আমরা বুঝার জন্য গোল্ডেন জিপিএ বলি । অফিসিয়ালি গোল্ডেন জিপিএ বলতে কিছু নেই । GPA মানে Grade Point Average. মেয়ের মার্কস সার্টিফিকেটও দেখলাম । লেখা আছে, প্রাপ্ত গ্রেড A+। প্রাপ্ত জিপিএ ৫ ।
আমিতো এখনো পোলাপানের মতোই কথা বলি । তাই এই কয়েক লাইনঃ
সিদ্ধান্ত ছিলো, জীবনে বিয়ে করবো না । তাই ইউরোপ - আমেরিকায় অনেক বছর থেকেও বিয়ে করিনি ৷ অনেক প্রস্তাব পেয়েও না । আমার বয়সী অনেকেই মেয়ে বিয়ে দিয়ে ফেলেছে । আর আমার মেয়ে এবার সিক্সে পড়ে !
হাহাহা। হিহিহি ৷
তবে একদিকে ভালোই হয়েছে । জীবন আর অসম্পূর্ণ নেই । সন্তান ভালো রেজাল্ট করলে পিতার কি আনন্দ তাও অনুভব করলাম । মন্দ কি ?
নোটঃ দুপুরে ফোনে আমাকে বলার পর জেমিমার মা বললেন, তুমি আবার ফেসবুকে লিখে টিখে রাস্ট্র করবা না । এমনিতেই আমাদের একটাই সন্তান । দোয়া চাইতে পারো বন্ধু বান্ধবের কাছে । আমি বললাম, ফেসবুক কোনো ধর্মীয় তীর্থস্থান নয় । ফেসবুক বন্ধুরা পীর কামেলও নয় । তাই নয় বছর ফেসবুক জীবনে কারো কাছে দোয়া চাইনি ।

 December 24, 2018 at 7:30 PM

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...