সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অভিযোগ

এক বন্ধু আমার গতকালের পোষ্টে কমেন্টে অভিযোগ করেছেন যে, আমি সব সময় মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করে লিখি । এ ব্যাপারে আমার বক্তব্য এমন...
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ৪৫ বছর পরও যে এতো বাড়াবাড়ি করা হয় এটা আমার মোটেও পছন্দ নয় । স্বাধীন জাতি হিসেবে গর্ব করার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো অর্জন এখনো আমাদের নেই । বরং মুক্তিযোদ্ধে আমাদের ফ্যামিলির অবদান গর্ব করার মতো গৌরবোজ্জ্বল । মুক্তিযুদ্ধে আমার নিজেরও অবদান আছে । কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে যখন পাকিস্তানি মিলিটারিরা আমাদের গ্রামে আসতো তখন পশ্চিম দিকের বড় এলাকা নিয়ে ধান ক্ষেতের যে মাঠ ছিলো ওখানে তাদের দেখলে আমরা বালকরা দৌঁড়ে এসে বাড়িতে বড়দের খবর দিতাম যে 'পাইয়ারা আইতাছে'। তখন বড়রা পালিয়ে যেতো । যদি মুক্তিবাহিনী বলা হয় তবে অল্প কিছু রাজাকার, আল বদর ছাড়া ওই সময় সাড়ে সাত কোটি বাঙালীই মুক্তিবাহিনী । যেমন সেনাবাহিনী । সেনাবাহিনীর সকল সদস্য যুদ্ধ করে না । সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কোর বৃজ, কালভার্ট, পুল ইত্যাদি তৈরি করে । যুদ্ধ করে না । সেনা বাহিনীর মেডিক্যাল কোর ও সিগনাল কোরের সদস্যরাও যুদ্ধ করে না । মেডিক্যাল কোরের কাজ আহত সৈনিকদের চিকিৎসা করা । যুদ্ধ করা নয় । সিগনাল কোর যুদ্ধের তথ্য সরবরাহ করে । যুদ্ধ করে না । সেনাবাহিনীর সাপ্লাই কোরের সদস্যরাও যুদ্ধ করে না । কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে রসদ, গোলা-বারুদ, খাবারসহ প্রয়োজনীয় সকল কিছু সাপ্লাই বা সরবরাহ করে । সেনাবাহিনীর পদাতিক ও গোলন্দাজ বাহিনীই শুধু যুদ্ধ করে ।
এখন মেডিক্যাল কোর চিকিৎসা না দিলে আহত সৈনিক চিকিৎসা পাবে না । ইঞ্জিনিয়ার্স কোর বৃজ ঠিক না করলে সৈনিকরা নদী পার হতে পারবে না । সিগনাল কোর সিগনাল না দিলে না দিলে সৈনিকরা নির্দেশনা পাবে না । সাপ্লাই কোর সাপ্লাই না দিলে সৈনিকরা খাবারসহ গোলা বারুদ পাবে না । এসব মিলেই হয় যুদ্ধ । আমাদের মুক্তিযুদ্ধও তেমনি সকল কিছু মিলেই হয়েছিলো । নৌকার মাঝি মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পার করে দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের দায়িত্ব পালন করেছেন । গ্রাম্য ডাক্তার কিংবা ওষুদের দোকানদার মুক্তি যোদ্ধাদের চিকিৎসা দিয়ে মেডিক্যাল কোরের কাজ করেছেন । গ্রামের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিয়েছেন, অস্ত্র ও গুলির বোঝা মাথায় নিয়ে পৌঁছে দিয়ে সাপ্লাই কোরের কাজ করেছেন । মুক্তিযোদ্ধারা পদাতিক বাহিনীর কাজ করেছেন । অল্প কিছু রাজাকার, আলবদর ছাড়া সকল বাঙালীই মুক্তিযোদ্ধা । পাকিস্তানিরা তাই মনে করতো বলে নির্বিচারে বেসামরিক বাঙালী হত্যা করেছিলো ।
এখন শীর্ষস্থানীয় জামায়াত নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে । বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডেরও বিচার হয়ে গেছে । ফারুক, হুদা, শাহরিয়ারদের ফাঁসি হয়েছে । এতো বছর পরও জাতিকে বিভক্ত করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষের শক্তি হিসেবে । শুধু হীন রাজনৈতিক স্বার্থে । আমি মুক্তিবাহিনীতে সিগনাল কোরে কাজ করেছি । খবর আদানপ্রদান করেছি । আমিও একজন সাহসী বীর বালক মুক্তিযোদ্ধা । মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করার প্রশ্নই উঠে না । আমার মা নয়টি মাস কেঁদেছেন বড় ভাইয়ের জন্য । যদিও আমাদের বড় ভাই মারা গেলে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে ।
কিন্তু আমি দেখি,মুক্তিযুদ্ধে যাদের কোনোই অবদান নেই শুধু তারাই আজ মুক্তিযুদ্ধ,স্বাধীনতা, চেতনা এসব নিয়ে বেশি বলে এবং তারা সবাই আজ আওয়ামী লীগ! হাছান মাহমুদ,মাহবুবুল হক হানিফ,কামরুল ইসলাম, এমনকি মো: নাসিম যে ভাষায় কথা বলে তা ভদ্রজনোচিত ভাষা নয় । নাসিম ক্যাপ্টেন মনসুর আলির ছেলে বলে তার কথা শুনতে হবে ? কেউ যদি বলে আমরা একজন ক্যাপ্টেনের ছেলের কথা না শুনে বরং একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেলের ছেলের কথা শুনবো।
শাহবাগে কেন চেতনার মঞ্চ ? এদের কাজ কী ? কে এই ইমরান এইচ সরকার ? লাকী এলো কোত্থেকে ? কে এই মেয়ে ? আজ অনেক বীরউত্তম, সেক্টর কমান্ডার রাজাকার! তোমরা বললেই আমরা মানবো ? ২০০৯ সালের নির্বাচন কেন্দ্রে আমি বিএনপির হাজি ইয়াসিনের পোলিং এজেন্ট ছিলাম স্বেচ্ছায় । নিজের পকেট থেকে ১০০০ টাকা খরচ হয়েছিলো । দেখছি, ওইটাও কেমন নির্বাচন হইছে ? ইচ্ছা করে বিএনপিকে হারিয়ে দিয়েছে কেয়ার টেকার সরকার ।

 January 1, 2017

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর