সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লেখালেখির ভালোবাসা


লেখালেখির ভালোবাসা


অনেক পোষ্টেই আমি প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করি যে, আমার বেশিরভাগ পাঠক বন্ধুই আমাকে চেনেন পত্রিকায় লেখার কারনে । প্রায় দশ বছর সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে এবং পরে ‘যায়যায়দিন’ দৈনিক হয়ে যাওয়ায় এবং মি.শফিক রেহমানের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় তিনি ‘মৌচাকে ঢিল’ নামে একটা মাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশ করতেন । এখন মৌচাকে ঢিলও বন্ধ । তাই আমার পত্রিকায় লেখাও বন্ধ । আমি যে স্টাইল বা বিষয় বস্তু নিয়ে লিখি তার প্রায় বেশির ভাগই ইউরোপ- আমেরিকা নিয়ে । ওই পত্রিকা দুটোর পাঠক শ্রেণিও আলাদা ছিলো । শিক্ষিত ও আধুনিকমনস্ক ।
লেখালেখির অভ্যাসবশত ফেবুতে এসে ছোট করে একটু আধটু লিখি । অনেকটা দুধের স্বাধ ঘোলে মেটানোর মতোই । ওই দুটো পত্রিকায় লিখে আমি অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিলাম বা এখনো পাই । ২০১২ এবং ২০১৩ এই দুই বছরে আমার অল্প কিছু লেখা মৌচাকে ঢিল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিলো । ওই পত্রিকা দুটোর সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুযায়ি লেখার শেষে লেখকের ফোন নাম্বার, ইমেইল অ্যাড্রেস এবং কোথা থেকে লিখেছেন তা উল্লেখ থাকতো । তবে মেয়েরা চাইলে তাদের ফোন নাম্বার গোপন রাখতে পারতেন । আমার গোপন রাখার প্রয়োজন হয়নি । এ বিষয়ে একদিন আমি সম্পাদক মি.শফিক রেহমানকে তার ১৫ ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেছিলেন, লেখা প্রকাশিত হলে অনেক পাঠক চিঠি লিখে তার প্রতিক্রিয়া জানায় । এতো চিঠি ছাপা সম্ভব নয় । তাই লেখকের ফোন নাম্বার উল্লেখ করে দিই । ফলে পাঠক তার প্রতিক্রিয়া সরাসরি লেখককে জানাতে পারে । এতে পাঠক-লেখকের মধ্যে একটা সেতু বন্ধনও তৈরি হয়, তিনি যোগ করেন ।
বাংলাদেশের সব জেলায় আমার পাঠক বন্ধু আছেন । বিতর্ক যতোই থাক, যায়যায়দিন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা ছিলো । আমেরিকা থেকে দেশে ফেরার অনেকদিন পর আমি মৌচাকে ঢিল ম্যাগাজিনে লিখতে শুরু করি । ফলে এখনকার শিক্ষিত ও আধুনিক জেনারেশনও আমার লেখা পছন্দ করতেন । সৎভাবে বলছি, আমার লেখা বেশি পছন্দ করতেন মেয়েরা । পত্রিকা বাজারে গেলেই আমি অসংখ্য ফোন পেতাম দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে । সন্দ্বীপ থেকে যেমন ফোন পেতাম তেমনি পেতাম ভোলা থেকেও । দুটোই বাংলাদেশের দ্বীপ জেলা । ২০১৩ সালের পর আমি আর পত্রিকায় লিখি না । ফেবুতেই ছোট করে কিছু লিখি । গতকাল রাতে আমার ম্যাসেঞ্জারে একটা ম্যাসেজ এলো । কাঁকন নামের এই মেয়েটি ২০১২ ও ২০১৩ সালে আমার লেখা প্রকাশিত হলেই সে আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানাতো । ভালো মন্দ খোঁজ খবর নিতো । আমার অনেক ছোট সে । তাই তাকে ভদ্র মহিলা না লিখে “কাঁকন নামের একটি মেয়ে লিখেছি”। এক বাচ্চার মা ছিলো তখন । বাড়ি রাজশাহী ।
২০১৩ সালের পর আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই । গতরাত তার ম্যাসেজ পেয়ে তাকে চিনতে আমার একটুও অসুবিধা হয় নি । কারন ম্যাসেজের সঙ্গে সে তার একটা ছবিও দিয়েছে । অল্প একটু খোঁজ নেয়ার পর আমি জানতে চাইলাম, তোমার এই ম্যাসেজের একটা স্কৃনশট দিয়ে আমি যদি কিছু লিখি ফেবুতে, তোমার কি কোনো আপত্তি আছে ? প্রথমে মৃদু বাধা দিলেও পরে আমাকে অনুমতি দিয়েছে লেখার । তাই এই পোষ্ট ।
আমি একা থাকি বলে ছোট ছোট কিছু ভালোবাসা নিজের কাছে অনেক বড় মনে হয় । অন্যের কাছে তা যতোই অকিঞ্চিৎকর হোক না কেন । আমার খুব অবাক লেগেছে কাঁকনের ম্যাসেজের ভাষা দেখে । অনেকদিন থেকেই আমার মনটা ভালো যাচ্ছে না । কিন্তু আমার সেই চার বছর আগের রাজশাহীর পাঠক বন্ধু কি করে জানলো যে, আমার মনটা ভালো নেই ? তার সঙ্গে আমার চার বছর কোনো যোগাযোগ নেই । এটি আমার কাছে এক বিস্ময় । সেজন্য এই ছোট নোট । Thank you Kakon. I thank you from the bottom of my heart . Take Care . Wishing you a very happy life.
(সে ফেসবুক চালালেও আমার বন্ধু তালিকায় নেই । তবু তো আমাকে মনে রেখেছে ! আরো কিছু কথা লিখেছে যেমন “করিম, আপনি খুব আবেগপ্রবণ । তাই কষ্ট পান বেশি।” এখানে এও উল্লেখ্য যে, আমার কাছে শত শত মেয়ে পাঠক বন্ধুর ফোন নাম্বার থাকলেও আমি কখনোই কাউকে ফোন করিনি বা করি না । এটাও আমার একটা নীতি । আমাদের সমাজটা মোটেও ভালো না । বিশেষ করে মেয়েদের জন্য । আমি হয়তো কার্টেসী করেই ফোন করলাম, কিন্তু আমিতো জানি না মেয়েটা এখন কি অবস্থায় আছে । হয়তো বাসায় বাবা মার সঙ্গে এক রুমে আছে বা স্বামী সন্তান নিয়ে আছে । সে মুহুর্তে কোনো ফোন গেলে সে হয়তো নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হবে । কে ফোন করেছে ? কেন করেছে ? তোমার সঙ্গে কি সম্পর্ক? কিভাবে পরিচয় ? ইত্যাদি । সে কারনে আমি কোনো মেয়ে পাঠক বন্ধুকেই ফোন করে বিব্রত করি না ।)

 December 28, 2017
কুমিল্লা ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর