সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

বাংলা সাহিত্যে আমার প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় । সেই কলেজ জীবন থেকে শুরু তাঁর ভালোবাসা প্রেম নয় দিয়ে । তারপর তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনি
আরো পর দুই খন্ডের সেই সময় । তারপর বৃহৎ পরিসরের পূর্ব পশ্চিম । এরপর প্রথম আলো । সুনীলের যে কোন লেখাই আমার ভালো লাগে ।
এখনো । নীল লোহিত ছদ্মনামে তার সব লেখা আমার পড়া । বলতে গেলে সুনীলের প্রায় সব বই ই আমি পড়েছি । শীর্ষেন্দু ,সমরেশ, নিমাই, বুদ্ধদেব, মৈত্রীয় দেবী, আবুল বাশার, অরুন্ধতি, শর্মিলা বোসসহ বলতে গেলে পশ্চিম বঙ্গের সবার বই আমি পড়েছি ।
১৯৯৫ সালে কলকাতায় দেশ পত্রিকা অফিসে প্রয়াত প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে অনেক গল্প করেছিলাম ।
তিনি অসংখ্যবার আমেরিকায় গিয়েছেন । আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু দিন পড়ে ফরাসি মেয়ে মার্গারিটার প্রেমে পড়ে যান । সেই পড়া বাদ দিয়ে তিনি কলকাতায় চলে আসেন ।
একবার নিউ ইয়র্কে সুনীল গেলেন ১৯৯৮ সালে । জ্যাকসন হাইটসের মুক্তধারা লাইব্রেরিতে বিশ্বজিৎ দাস আয়োজন করলেন বই মেলার । নিউ ইয়র্কের কয়েকটি বাংলা পত্রিকা থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হলো । নিউ ইয়র্ক প্রবাসী সব লেখক সাংবাদিকই আমার বন্ধু । মনে আছে ডিসেম্বর মাস ছিলো । তীব্র শীত । আমি নিউ ইয়র্ক সিটিতে থাকতাম । যার স্থানীয় নাম ম্যানহাটান । সন্ধ্যার পর F ট্রেন ধরে গেলাম রুজভেল্ট এভিনিউ । রুজভেল্ট এভিনিউ
নামলেই জ্যাকসন হাইটস।
মুক্তধারায় অনেক পাঠক । বই কিনছে আর অটোগ্রাফ নিচ্ছে । আমি সুনীল দা’র কাছেই বসেছিলাম । হঠাৎ আমি বললাম, সুনীল দা, আমি বাংলাদেশের একটু

পাগল টাইপ পাঠক । আপনার ‘পূর্ব পশ্চিম’ উপন্যাসটা আমি ছয়বার পড়েছি ।
তিনি বললেন, তোমার নাম তো গিনিস বুকে উঠা দরকার । ভিড় কমলে আমি আমার ডায়েরিটা বাড়িয়ে দিলাম অটোগ্রাফের জন্য । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখলেন....
সুন্দর লুকিয়ে থাকে মানুষের নিজেরই আড়ালে । করিম চৌধুরীকে শুভেচ্ছাসহ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
আর আমাকে বললেন, সুন্দর করে লিখে 'দেশ' পত্রিকায় আমাকে অ্যাড্রেস করে পাঠিয়ে দিও । আমি দেখে দেবো । যারা বেশি পড়ে তারা লিখতে পারে "। অর্থাৎ দেশ পত্রিকায় আমার লেখা তিনি ছেপে দেবেন। বাসার ঠিকানা ও ফোন নাম্বারও দিলেন । আমি নিউ ইয়র্ক থেকে ফোন করে কয়েকদিন কথা বলেছি । স্বাথী ভাবীর(সুনীল দা'র পত্নী) সঙ্গেও কথা বলেছিলাম ।
বিদায়ের সময় আমাকে অবাক করে দিয়ে সুনীল দা বললেন, সবাই ছবি তুলেছে আমার সঙ্গে, তুমি তুলো নি । এসো আমার সঙ্গে । আমি দুষ্টুমি করে বললাম, ‘তাহলে পোজটা হবে- আপনি এমনভাবে দাঁড়াবেন যে, আমি আপনাকে ফলো করছি । আপনি আমার দিকে তাঁকাবেন না । আমি আপনার দিকে তাঁকিয়ে থাকবো ।’
তিনি বললেন,তোমার যে ভাবে খুশি । এভাবেই দাঁড়িয়েছিলাম দু’জন । ছবিটা তুলেছিলেন নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলাপত্রিকা র বর্তমান সম্পাদক মি. আবু তাহের । প্রিয় লেখক সুনীলও আজ আর নেই । একদিন আমিও থাকবো না । এটাই জীবন ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর