Swissair Flight 111 tragedy
Sept. 2, 1998 Swissair Flight 111 crashed into the Atlantic, killing all 229 on board.
আজ সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ড নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়ে একটা দুঃখজনক স্মৃ
তি মনে পড়লো । তখন নিউ ইয়র্ক ছিলাম ।
১৯৯৮ সাল । সুইস এয়ারের(Swissair) একটা ফ্লাইট, ফ্লাইট নং ১১১ নিউ ইয়র্কের জন,এফ,কেনেডি(JFK)ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ফ্লাই করেছিলো । এটি প্রতিদিনের ফ্লাইট । এই ফ্লাইটটিকে অনেকে ইউএন ফ্লাইট বলে । অনেকেই জানেন, জাতিসংঘের ইউরোপিয়ার সদর দফতর জেনিভায় । ওই ফ্লাইটে বেশিরভাগ যাত্রী থাকে জাতিসংঘে কর্মরত কর্মকর্তারা । সুইস এয়ার ইউরোপ-আমেরিকায় বেশ অভিজাত এয়ারলাইন্স । টিকেটের দামও বেশি ।
নিউ ইয়র্ক থাকতে আমি নিয়মিত নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা পড়তাম । মাঝে মাঝে ওয়াশিংটন পোষ্ট পড়তাম । সবাই জানেন, সারা বিশ্বে এই দু’টি পত্রিকাই সবচেয়ে প্রভাবশালী । দাম ছিলো মাত্র ৫০ সেন্ট । আর রোববারের টাইমস এর দাম ২ ডলার । রোববারের নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ওজন ১ কেজিতো হবেই । একটুও বাড়িয়ে বলছি না । মুল পত্রিকা ছাড়া বাকী সব পাতা বিজ্ঞাপনের ।
এসব খবর নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় জেনেছিলাম । আর টিভিতে তো লাইভ কভারেজ আছেই । তো নিউ ইয়র্ক থেকে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে দশটায় ফ্লাই করে সুইজারল্যান্ড সময় সকাল ৭টায় বিমানটি জেনিভায় পৌঁছার কথা । নিউ ইয়র্ক-জেনিভা ৬ ঘন্টার ব্যবধান । নিউ ইয়র্ক থেকে ফ্লাই করার ১ ঘন্টা পর ক্রুরা বিমানে ধুয়া দেখতে পায় । পাইলট তা কন্ট্রোল টাওয়ারে জানালে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে বিমানের তেল ফেলে দিয়ে কানাডার হেলিফ্যাক্স বিমান বন্দরে জরুরী অবতরনের নির্দেশ দেয়া হয় । পাইলট বিমানটির তেল ফেলে দেয়ার জন্য কানাডার নোভা স্কোটিয়ার (Nova Scotia)কাছে আটলান্টিক মহাগরের উপর চক্কর দিতে থাকে । কারন অন্য কোথাও তেল তিনি ফেলতে পারবেন না । আর ১০ মিনিট সময় পেলে বিমানটি অবতরণ করতে পারতো ।
কিন্তু ভাগ্য বিড়ম্বিত ২২৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি আটলান্টিকে বিধ্বস্ত হয় এবং সকলেই মারা যায় ।
ওই বিমানে জাতিসংঘের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কিছু ভিআইপি ছিলেন । এই মর্মান্তিক খবর সঙ্গে সঙ্গে জানলেও পত্র পত্রিকা ও আমেরিকার সব মিডিয়া সুইস এয়ার কর্তৃপক্ষের অনুরোধে পরদিন তা কোনো পত্রিকায়ই প্রকাশ করে নি । কেউ জানে না এতো বড় ঘটনা !
এর পরদিন সব পত্রিকায় প্রধান শিরোনাম...
Swiss Air Flight 111 bound for Geneva Crashed into the Atlantic Killing all 229 passengers.
নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছিলো, সুইস এয়ার তাদের অনুরোধ করেছিলো যে, ওই বিমানের যাত্রীদের রিসিভ করতে যারা জেনিভা এয়ারপোর্টে এসেছে তাদের জন্য কাউন্সিলর যোগাড় করতে কিছু সময় তাদের দরকার । তাই খবরটি আজ না ছেপে কাল ছাপতে । আমারিকার সব মিডিয়া সুইস এয়ারের অনুরোধ রেখেছিলো ।
সকাল ৭ টায় জেনিভা ল্যান্ড করার কথা থাকলেও সুইস এয়ার তাদের ইলেকট্রনিক এরাইভেল বোর্ডে লেখা দিয়েছিলো Swiss Air- Flight 111 Delayed. অর্থাৎ সুইস এয়ার দুর্ঘটনার খবর জানলেও তা যাত্রীদের আত্মীয় স্বজনদের তাৎক্ষণিক না জানিয়ে বিমানটি অবতরনে দেরি হবে বলে বিল বোর্ডে লেখা দিয়েছিলো ।
আর এই সময়ে সুইস এয়ার, এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে আসা যাত্রীদের স্বজনদের একটি বড় হল রোমে অপেক্ষা করতে বলেন এবং তারা সংখ্যায় কতোজন তা গোপনে গননা করে প্রত্যেক অভ্যাগতের জন্য তিন জন করে কাউন্সিলর যোগাড় করে সাধারনের মতো ওই রুমে পাঠিয়ে দেন যাতে ওরা মনে করে তারাও হয়তো কাউকে না কাউকে রিসিভ করতে এসেছেন । আসলে ওই কাউন্সিলরদের কাজ হবে বিমান দুর্ঘটনার খবরটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে যখন সবাই কান্নাকাটি শুরু করবে তখন ওই কাউন্সিলররাও (শান্তনাদানকারী) এদের জড়িয়ে ধরে কাঁদবে আর শান্তনা দেবে । যাতে দুঃখবোধ কিছুটা লাঘব হয় । প্রতিজনের জন্য তিনজন শান্তনাদানকারী । ইতিমধ্যে সুইস এয়ার আরেকটি ৭৪৭ বোয়িং বিমান রেডি করে রেখেছে, যাদের রিলেটিভ/বন্ধু দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তাদের সুইজারল্যান্ড থেকে কানাডার নোভা স্কোটিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য । প্রিয়জন যেখানে মারা গেছেন ওই স্থানটি দেখানোর জন্য । জেনিভা সময় সকাল ১১ টায় সুইস এয়ার ঘোষণা করলো,
“আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে,নিউ ইয়র্ক থেকে ছেড়ে আসা সুইস এয়ার, ফ্লাইট ১১১ কানাডার নোভা স্কোটিয়ার কাছে আটলান্টিকে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং যাত্রীদের কেউ বেঁচে নেই । আমরা স্বজনদের এখনি নোভা স্কোটিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বিমান রেডি করে রেখেছি”।
শুরু হলো স্বজনদের বুক ফাটা আর্তনাদ । কাউন্সিলররা তো আছেই শান্তনা দেয়ার জন্য । এরপর সবাইকে নোভা স্কোটিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিনা খরচে । উল্লেখ্য যে, ওই বিমানের কোনো যাত্রীর মৃতদেহ পাওয়া যায় নি । আমি খবরটির ডিটেইলস পড়ে ও টিভিতে লাইভ দেখে খুব কষ্ট পেলেও সুইস এয়ারের পরিকল্পনা জেনে অবাক হয়েছিলাম । একেই বলে দায়িত্ববোধ । মানুষের জন্য সহমর্মিতা । প্রতি যাত্রীকে ইনসিউরেন্স হিসেবে ২ লাখ ডলার দেয়া হয়।
দুর্ঘটনাস্থলে স্বজনদের নিয়ে যাওয়া হলে সেখানের কিছু ছবি ।
(আমি যে ইউরোপ-আমেরিকাকে খুব পছন্দ করি এবং তাদের প্রশংসা করি, আশা করি আমার কিছু ইসলামিক মাইন্ডেড বন্ধু এই পোষ্ট পড়লে বুঝবেন । কেন করি । যারা নিয়মিত ইউরোপ –আমেরিকাকে গালাগালি করেন । ইহুদী, খৃস্টান, নাসারা বলে তাচ্ছিল্য করেন । একজন অন্য ধর্মের লোকও যদি ভালো কাজ করে আমি তার প্রশংসা করবো। )
Sept. 2, 1998 Swissair Flight 111 crashed into the Atlantic, killing all 229 on board.
আজ সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ড নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়ে একটা দুঃখজনক স্মৃ
তি মনে পড়লো । তখন নিউ ইয়র্ক ছিলাম ।
১৯৯৮ সাল । সুইস এয়ারের(Swissair) একটা ফ্লাইট, ফ্লাইট নং ১১১ নিউ ইয়র্কের জন,এফ,কেনেডি(JFK)ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ফ্লাই করেছিলো । এটি প্রতিদিনের ফ্লাইট । এই ফ্লাইটটিকে অনেকে ইউএন ফ্লাইট বলে । অনেকেই জানেন, জাতিসংঘের ইউরোপিয়ার সদর দফতর জেনিভায় । ওই ফ্লাইটে বেশিরভাগ যাত্রী থাকে জাতিসংঘে কর্মরত কর্মকর্তারা । সুইস এয়ার ইউরোপ-আমেরিকায় বেশ অভিজাত এয়ারলাইন্স । টিকেটের দামও বেশি ।
নিউ ইয়র্ক থাকতে আমি নিয়মিত নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা পড়তাম । মাঝে মাঝে ওয়াশিংটন পোষ্ট পড়তাম । সবাই জানেন, সারা বিশ্বে এই দু’টি পত্রিকাই সবচেয়ে প্রভাবশালী । দাম ছিলো মাত্র ৫০ সেন্ট । আর রোববারের টাইমস এর দাম ২ ডলার । রোববারের নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ওজন ১ কেজিতো হবেই । একটুও বাড়িয়ে বলছি না । মুল পত্রিকা ছাড়া বাকী সব পাতা বিজ্ঞাপনের ।
এসব খবর নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় জেনেছিলাম । আর টিভিতে তো লাইভ কভারেজ আছেই । তো নিউ ইয়র্ক থেকে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে দশটায় ফ্লাই করে সুইজারল্যান্ড সময় সকাল ৭টায় বিমানটি জেনিভায় পৌঁছার কথা । নিউ ইয়র্ক-জেনিভা ৬ ঘন্টার ব্যবধান । নিউ ইয়র্ক থেকে ফ্লাই করার ১ ঘন্টা পর ক্রুরা বিমানে ধুয়া দেখতে পায় । পাইলট তা কন্ট্রোল টাওয়ারে জানালে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে বিমানের তেল ফেলে দিয়ে কানাডার হেলিফ্যাক্স বিমান বন্দরে জরুরী অবতরনের নির্দেশ দেয়া হয় । পাইলট বিমানটির তেল ফেলে দেয়ার জন্য কানাডার নোভা স্কোটিয়ার (Nova Scotia)কাছে আটলান্টিক মহাগরের উপর চক্কর দিতে থাকে । কারন অন্য কোথাও তেল তিনি ফেলতে পারবেন না । আর ১০ মিনিট সময় পেলে বিমানটি অবতরণ করতে পারতো ।
কিন্তু ভাগ্য বিড়ম্বিত ২২৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি আটলান্টিকে বিধ্বস্ত হয় এবং সকলেই মারা যায় ।
ওই বিমানে জাতিসংঘের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কিছু ভিআইপি ছিলেন । এই মর্মান্তিক খবর সঙ্গে সঙ্গে জানলেও পত্র পত্রিকা ও আমেরিকার সব মিডিয়া সুইস এয়ার কর্তৃপক্ষের অনুরোধে পরদিন তা কোনো পত্রিকায়ই প্রকাশ করে নি । কেউ জানে না এতো বড় ঘটনা !
এর পরদিন সব পত্রিকায় প্রধান শিরোনাম...
Swiss Air Flight 111 bound for Geneva Crashed into the Atlantic Killing all 229 passengers.
নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছিলো, সুইস এয়ার তাদের অনুরোধ করেছিলো যে, ওই বিমানের যাত্রীদের রিসিভ করতে যারা জেনিভা এয়ারপোর্টে এসেছে তাদের জন্য কাউন্সিলর যোগাড় করতে কিছু সময় তাদের দরকার । তাই খবরটি আজ না ছেপে কাল ছাপতে । আমারিকার সব মিডিয়া সুইস এয়ারের অনুরোধ রেখেছিলো ।
সকাল ৭ টায় জেনিভা ল্যান্ড করার কথা থাকলেও সুইস এয়ার তাদের ইলেকট্রনিক এরাইভেল বোর্ডে লেখা দিয়েছিলো Swiss Air- Flight 111 Delayed. অর্থাৎ সুইস এয়ার দুর্ঘটনার খবর জানলেও তা যাত্রীদের আত্মীয় স্বজনদের তাৎক্ষণিক না জানিয়ে বিমানটি অবতরনে দেরি হবে বলে বিল বোর্ডে লেখা দিয়েছিলো ।
আর এই সময়ে সুইস এয়ার, এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে আসা যাত্রীদের স্বজনদের একটি বড় হল রোমে অপেক্ষা করতে বলেন এবং তারা সংখ্যায় কতোজন তা গোপনে গননা করে প্রত্যেক অভ্যাগতের জন্য তিন জন করে কাউন্সিলর যোগাড় করে সাধারনের মতো ওই রুমে পাঠিয়ে দেন যাতে ওরা মনে করে তারাও হয়তো কাউকে না কাউকে রিসিভ করতে এসেছেন । আসলে ওই কাউন্সিলরদের কাজ হবে বিমান দুর্ঘটনার খবরটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে যখন সবাই কান্নাকাটি শুরু করবে তখন ওই কাউন্সিলররাও (শান্তনাদানকারী) এদের জড়িয়ে ধরে কাঁদবে আর শান্তনা দেবে । যাতে দুঃখবোধ কিছুটা লাঘব হয় । প্রতিজনের জন্য তিনজন শান্তনাদানকারী । ইতিমধ্যে সুইস এয়ার আরেকটি ৭৪৭ বোয়িং বিমান রেডি করে রেখেছে, যাদের রিলেটিভ/বন্ধু দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তাদের সুইজারল্যান্ড থেকে কানাডার নোভা স্কোটিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য । প্রিয়জন যেখানে মারা গেছেন ওই স্থানটি দেখানোর জন্য । জেনিভা সময় সকাল ১১ টায় সুইস এয়ার ঘোষণা করলো,
“আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে,নিউ ইয়র্ক থেকে ছেড়ে আসা সুইস এয়ার, ফ্লাইট ১১১ কানাডার নোভা স্কোটিয়ার কাছে আটলান্টিকে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং যাত্রীদের কেউ বেঁচে নেই । আমরা স্বজনদের এখনি নোভা স্কোটিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বিমান রেডি করে রেখেছি”।
শুরু হলো স্বজনদের বুক ফাটা আর্তনাদ । কাউন্সিলররা তো আছেই শান্তনা দেয়ার জন্য । এরপর সবাইকে নোভা স্কোটিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিনা খরচে । উল্লেখ্য যে, ওই বিমানের কোনো যাত্রীর মৃতদেহ পাওয়া যায় নি । আমি খবরটির ডিটেইলস পড়ে ও টিভিতে লাইভ দেখে খুব কষ্ট পেলেও সুইস এয়ারের পরিকল্পনা জেনে অবাক হয়েছিলাম । একেই বলে দায়িত্ববোধ । মানুষের জন্য সহমর্মিতা । প্রতি যাত্রীকে ইনসিউরেন্স হিসেবে ২ লাখ ডলার দেয়া হয়।
দুর্ঘটনাস্থলে স্বজনদের নিয়ে যাওয়া হলে সেখানের কিছু ছবি ।
(আমি যে ইউরোপ-আমেরিকাকে খুব পছন্দ করি এবং তাদের প্রশংসা করি, আশা করি আমার কিছু ইসলামিক মাইন্ডেড বন্ধু এই পোষ্ট পড়লে বুঝবেন । কেন করি । যারা নিয়মিত ইউরোপ –আমেরিকাকে গালাগালি করেন । ইহুদী, খৃস্টান, নাসারা বলে তাচ্ছিল্য করেন । একজন অন্য ধর্মের লোকও যদি ভালো কাজ করে আমি তার প্রশংসা করবো। )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন