সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টাকা ও নারী

টাকা ও নারী

রহিম রংপুরের । আমার সঙ্গে তার পরিচয় নিউ ইয়র্কে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম,এ করেছিলো । আমরা মাঝে মাঝে সময় কাটাতাম এক সঙ্গে । এক বিকেলে আমরা জাতিসংঘ সদর দপ্তরের লাগোয়া ইস্ট রিভারের (পূর্ব নদী) সিঁড়িতে বসে গল্প করছিলাম । অনেকগুলো ছোট বিমান নদীতে । পানি থেকে উড়ে যায় । নিউ ইয়র্কের এরিয়াল ভিউ(Aerial View) দেখে আবার পানিতে এসেই ল্যান্ড করে । ধনী দেশের নাগরিকদের তো আর আনন্দের সীমা নেই । যেভাবে খুশি সময় কাটায় ।
আমি দেশে ফিরে আসবো বলায়, রহিম বললো,কি করতে যাবেন ? কি আছে বাংলাদেশে ? আমিতো মরবোও আমেরিকায় । রহিম বিবাহিত ছিলো । স্ত্রী দেশে । আমি জানতে চাইলাম, স্ত্রীর জন্য খারাপ লাগেনা ? রহিম বললো, না । মোটেও না । এখন স্ত্রীও খুব ভালোবাসে । অনেক কদর করে । আমেরিকা থেকে ডলার যায় তো । টাকা থাকলে বউও বেশি ভালোবাসে । আপনিতো বিয়ে করেননি তাই টের পান না ।
আমি রহিমের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, টাকা থাকলেই কি মেয়েরা ভালোবাসে ? রহিম বলেছিলো, আলবৎ । আপনি দেখি এ ব্যাপারে এখনো শিশু । আমি বললাম , কই নাতো । আমাকে তো অনেক মেয়েরাই ভালোবাসে । অনেকের সঙ্গে প্রেমও আছে । রহিম বলেছিলো, আপনি ভালো ছাত্র । লেখালেখি করেন জনপ্রিয় পত্রিকায় । একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো । থাকেন আমেরিকায় । আপনাকে ভালোবাসবে না তো কাকে ভালোবাসবে ? আমি রহিমকে বলেছিলাম, আপনার সঙ্গে আমি একমত হতে পারলাম না । রহিম বলেছিলো, একমত হওয়ার দরকার নেই । তবে আমি অনেক শিক্ষিত ফ্যামিলির শিক্ষিত মেয়েকে জানি, যারা টাকা ছাড়া আর কোন বিষয়কেই বড় করে দেখে না । এই আমেরিকাতেও ওপি ওয়ান, ডিবি লটারি পেয়ে আসা অনেক মূর্খ্য ছেলে দেশে গিয়ে এম,এ পাশ মেয়ে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে । নিউ ইয়র্কেও অনেক আছে । খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন । ওদের যোগ্যতা শুধু আমেরিকায় থাকে ।
অনেক বছর পর এখন রহিমের সঙ্গে আমিও একমত । টাকা থাকলে আর কিছু না হোক অন্তত যে কোন মেয়েকেই পাওয়া যায় । দেশে যে এতো দুর্নীতিবাজ তা শুধু মেয়েদের কারণে । স্ত্রী যদি সৎ হতো তবে দেশে এতো দুর্নীতিবাজের সৃষ্টি হতো না । বস্তা বস্তা টাকা যখন বাসায় নিয়ে যায় তখন যদি স্ত্রীরা স্বামীকে প্রশ্ন করতো যে, তুমি বেতন পাও এতো টাকা । অতিরিক্ত টাকা কোত্থেকে এলো ?
আমরা দেখি ,দুর্নীতিবাজ স্বামীরা বউয়ের নামে ফ্ল্যাট কেনে । শ্যালক, শ্যালিকার নামেও কেনে । অনেকে শ্বশুর শাশুড়ির নামেও টাকা রাখে, ফ্ল্যাট কিনে । কোটি কোটি টাকা বউয়ের একাউন্টে রাখে । এতে তারা খুশি । আমি মনে করি, দেশে যতো দুর্নীতিবাজ আছে তার জন্য তাদের স্ত্রীরাই প্রধানত দায়ী । স্ত্রীর কাছে আস্কারা না পেলে স্বামীরা দুর্নীতি করতো না । এর জন্য মেয়েরা দায়ী । তাদের কারণেই পুরুষ বিপথে যায় । ওই যে যুবক ছেলেরা ফেসবুকে লিখে-
‘ যদি মেয়েরা আজ ঘোষণা দেয় যে, যে সব পুরুষ সিগারেট খায় তাদেরকে ঠোঁটে চুমু খেতে দেয়া হবে না । তবে সব পুরুষই সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিতো ’ ।
দুর্নীতিবাজ পুরুষ সৃষ্টি হয় স্ত্রীর কারণে ।

৩১ জানুয়ারি, ২০১৬
কুমিল্লা ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...