সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কয়েকটি ''শহীদ !! চৌধুরী'' পরিবারের ইতিকথা

কয়েকটি ''শহীদ !! চৌধুরী'' পরিবারের ইতিকথা

আসুন এক শহীদ ''চৌধুরী'' পরিবারের সাথে পরিচয় হই ।
এ এমন এক পরিবার যার প্রতিটি সদস্যই ছিল রাজাকার, কিন্তু মহামতি মুক্তিযোদ্ধা ফিল্টারের আশির্বাদে আজ তারা সবাই আজ মুক্তিযোদ্ধা আর আমাদের জিয়াউর রহমান হয়ে গেছেন পাকিস্থানি এজেন্ট ।
.
কবির চৌধুরীঃ এক নামে পরিচিত ব্যাক্তি। আওয়ামীদের অন্যতম থিংকট্যাংক ছিলেন। গত আওয়ামী সরকার কবির চৌধুরীকে জাতীয় অধ্যাপক বানিয়েছিল। আগে ছিলেন ঘাদানিক (ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি) সভাপতি। অথচ এই কবির চৌধুরীর পুরো পরিবার ছিল রাজাকার ও পাকিস্তানপন্থী।
.
১৯৬৯-৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় কবীর চৌধুরী পাক হানাদার সরকারের বিশ্বস্ত অনুচর হিসেবে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিল। পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার কথা বলে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় দালাল আখ্যায়িত করে ১৯৭১ সালের ১৭ মে দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছিলো কবীর চৌধুরী।
.
কাইয়ুম চৌধুরীঃ কবির চৌধুরীর বড় ভাই কাইয়ুম চৌধুরী পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর একজন কর্নেল হিসেবে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। পাকিস্তানের প্রতি তার আনুগত্য এত বেশী ছিল যে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও পাকিস্তানেই তিনি থেকে গেছেন। পরে ব্রিগেডিয়ার হিসেবে অবসর নিয়ে এখনও পাকিস্তানেই অবস্থান করছেন।
.
মুনির চৌধুরীঃ কবির চৌধুরীর আরেক ভাই মুনির চৌধুরী যাকে শহীদ বুদ্ধিজীবি হিসেবে অভিহিত করা হয়। তার ব্যাপারে কাদের সিদ্দীকি বলেছেন এভাবে, পাকিস্তানের পক্ষে ১৯৭১ সালে ঢাকার ৩১জন বুদ্ধিজীবি বিবৃতি দিয়েছিল। তাতে একনম্বরে স্বাক্ষর করেছিল মুনির চৌধুরী।
.
মুনির পুরো যুদ্ধের সময় একদিনের জন্যও নিজের কর্মস্থলে যাওয়া বন্ধ করেনি। এমনকি নভেম্বর মাসের বেতনও তিনি তুলেছিলেন। ১৩ তারিখ পর্যন্ত যারা অবলীলায় ঢাকায় থেকে পাকিস্তানিদের সব হুকুম হাকাম পালন করেছে, ১৪ তারিখ সুবেহ সাদেকে নিহত হয়ে সবাই পূতঃপবিত্র হয়ে গেল? আর যারা বেঁচে ছিল তাদের কেউ কেউ দালাল হলো? এটা কেমন বিচার?
.
সেই ৩১ জন বিবৃতি-দানকারীদের মধ্যে থেকে কবি তালিম হোসেনকে যখন ৭২ সালে দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয় তখন তিনি বলেছিলেন-
"...বেশ কিছুদিন ধরে কষ্ট হচ্ছে আমরা একসঙ্গে যারা পাকিস্তানের গোলামি করলাম, বেতন নিলাম তাদের কেউ কেউ মরে গিয়ে শহীদ হলো আমরা বেঁচে থেকে দালাল হলাম। এতে কেমন যেন স্বস্তি পাচ্ছি না। বাবা, অপরাধ যা কিছু করার আমরা একসঙ্গে করেছি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করিনি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চাইতে পাকিস্তান আমলে আমি মাত্র এক বা দু’দিন বেশি বেঁচেছি, চাকরি করেছি।
.
শহীদরা ১৩ তারিখ রাতে মারা গেছে। ১৪ আর ১৫ বলতে গেলে এই দু’দিন তো পাকিস্তানিদের দৌড়াদৌড়িই সার। ওই এক-দেড় দিন আমাদের কারোরই কিছু করার ছিল না। এখন মৃত্যু ভাগ্যে জোটে নাই তার জন্য কিইবা করতে পারি ?"
.
অর্থাৎ পাকিস্তানের পক্ষে একই কাজ করে মৃত্যু হওয়ার কারণে মুনির চৌধুরী হয়ে গেলে শহীদ বুদ্ধিজীবি, আর তালিম হোসেনরা হয়ে গিয়েছিল অপরাধী! আফসোস! ১৯৭১ এর ঘাতক দালাল কবীর চৌধুরী স্বাধীন বাংলাদেশের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা। সত্যি সেলুকাস, বড় বিচিত্র এদেশ। যে পরিবারের প্রতিটি সদস্য পাকিস্তানের পক্ষে দালালি করেছিল তারা আজ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের?
.
কবির চৌধুরী , মুনির চৌধুরী ও কাইয়ুম চৌধুরীর ছোট বোন অভিনেত্রী ফেরদৌসি মজুমদার। উনি নিজে মুসলমান কিন্তু বিয়ে করেছে বাস্তব ও মঞ্চ অভিনেতা হিন্দু রামেন্দু মজুমদারকে। তাদের ব্যপারে আমার কিছু বলার নেই –আপনারা সবই জানেন।
.
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন একটি স্কলারশিপকে প্রাধান্য দিয়ে স্বামী-স্ত্রী দিল্লিতে বেশ আরামেই ছিলেন । স্বাধীন দেশে ফিরে এসে হয়ে গেলেন বিশাল মুক্তিযোদ্ধা । তবে ফেরদৌসি মজুমদার ভাল কোরআন তেলোয়াত করেন কিন্তু তাদের মেয়ে আরেক অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সে তার বাবার সাম্প্রদায়িকতাহীন ধর্মকে আলিঙ্গন করে জীবন ধারন করবেন ।
Courtesy : Ahmed Rafique Barki

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর