সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কিছু কথা

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কিছু কথা


বাংলাদেশ আগামী দিনের কোনো চিন্তা না করেই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করে দেশের সর্বনাশ করে আগামী দিনের সকল প্রজন্মকে শেষ করে দেবে না তো ?
বাংলাদেশের মতো ছোট,গরিব ও বিপুল জনসংখ্যা অধ্যুষিত একটি দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা কতোটা যৌক্তিক? এ প্রশ্ন অনেক আগে থেকেই অনেকেই তুলেছেন। প্রফেসর আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন আজো চলছে। এর তেজস্ক্রিয়তায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে মারাত্মকভাবে ।
আমাদের দেশে এমন একটি পারমাণবিক চুল্লি করা হচ্ছে সম্পূর্ণ বিদেশি বিশেষজ্ঞদের উপর নির্ভর করে। এই প্রকল্পের সব টাকা-ই রাশিয়া থেকে ঋন নেয়া। রাশিয়া তার পেছনে আছে ভারত। কোনো রকম দুর্ঘটনার পূর্ব প্রস্তুতি আমাদের সরকারগুলোর কখনোই থাকে না। রিখটার স্কেলে সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলেই কয়েক কোটি লোকের প্রাণহানি ঘটবে। ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজের কোনো অবকাঠামোই আমাদের নেই। যন্ত্রপাতি বলতে গেলে কিছুই নেই। এমন দুর্বল দেশে পারমাণবিক চুল্লির বিস্ফোরণ সরাসরি কেয়ামত।
মনে আছে চেরনোবিল দুর্ঘটনার কথা? ২৬ এপ্রিল ১৯৮৬ সালে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ৪ নাম্বার চুল্লিতে। প্রথমে ৪৯ হাজার ও পরে ৬৮ হাজার লোককে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো শক্তিশালী পরাশক্তিও এই দুর্ঘটনা সম্পূর্ণ সামাল দিতে পারেনি। ওই অঞ্চলের ৩০ বর্গ মাইলব্যাপী ওই দুর্ঘটনার তেজস্ক্রিয়তা আজো বিদ্যমান। কোনো বসতি তো নেই ই।
পারমাণবিক বর্জ্য নিয়ে বিপাকে জার্মানির মতো অত্যন্ত ধনী ও উন্নত টেকনোলজির দেশ।
২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমায় পারমানবিক চুল্লি বিস্ফোরণের পর জার্মানি তাদের সকল পারমাণবিক চুল্লিগুলো বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করে।
দেশটিতে চলা সাতটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লি ২০২২ সালের মধ্যে বন্ধ করে দেবে জার্মান সরকার। তবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করলেই পারমাণবিক সমস্যা থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশটি।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হলে তার তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নিয়ে নতুন ঝামেলার সম্মুখীন হবে দেশটি। বর্জ্য রাখার জন্য তারা সময় পাবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত।
এদিকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাখার জন্য জায়গা খুঁজছে দেশটি। এ বিষয়ে বর্জ্যের জায়গা অনুসন্ধান করা দলের প্রধান প্রফেসর মিরান্ডা শ্রেয়ার্স বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরে জার্মানি মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৪০০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লি রয়েছে। তবে অনেক সরকার এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বন্ধ করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে?
বর্তমানে জার্মানির বিশেষজ্ঞরা এমন একটি নিরাপদ অঞ্চল খুঁজছেন যেখানে ২ হাজার কন্টেইনার বর্জ্য পুঁতে রাখা যায়। কিন্তু জায়গাটি হতে হবে শক্ত পাথরের স্তর যেখানে কোন ভূগর্ভস্থ পানি ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকবে না।
তবে কিভাবে এ বর্জ্য পরিবহনে নিয়ে যাওয়া হবে তা নিয়েও রয়েছে ঝুঁকি। আর যেখানে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পুঁতে রাখা হবে সেইসব অঞ্চলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করতে হবে যেনো তারা এ ধরণের এলাকা এড়িয়ে চলে।
তবে বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন বিষয়টি হলো তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাখার জন্য উপযুক্ত স্থান পাওয়া।

০১ ডিসেম্বর, ২০১৯
কুমিল্লা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...