সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বই

বই



গত মাসে (নভেম্বর, ২০১৯) বেনজীর ভুট্টোর লেখা ' Daughter of the East '- ডটার অব দ্য ইস্ট ও হুমায়ুন আহমেদের 'দেয়াল ' উপন্যাস দু'টো শেষ করলাম পড়ে। বেনজিরের বইটি বেশ বড়। আগে ইংরেজিটা পড়েছিলাম আমেরিকায় । এবার বাংলাটা পড়লাম। বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেছে 'চারদিক' প্রকাশনী। দাম ১০০০ টাকা। ডিসকাউন্ট দিয়ে ৮০০ টাকা। ৪২৪ পৃষ্ঠার বই। আমাদের দেশের বইয়ের যে ফর্মা বেনজিরের বইয়ের ফর্মা সে রকম নয়। আমাদের দেশের গল্প,উপন্যাস, আত্নজীবনীমূলক বইয়ের চেয়ে দৈর্ঘে এক ইঞ্চি ও প্রস্থে এক ইঞ্চি বড়। বেনজীরের আত্নজীবনীমূলক বই ' ডটার অব দ্য ইস্ট '। বেনজীরের মতো উচ্চ শিক্ষিত লোকদের বইয়ের কভার পৃষ্ঠায় তাদের নাম উপরে বড় করে লেখা থাকে। নামের নিচে বইয়ের নাম ছোট করে লেখা।
পাকিস্তানের অনেক অজানা তথ্যে ভরপুর বইটি। কি অত্যাচার জেনারেল জিয়াউল হক করেছিলো ভুট্টো পরিবারের উপর তা জানলে গা শিউরে উঠে।
তার ছোটবেলা থেকে পারভেজ মোশররফ পর্যন্ত বিস্তারিত আছে বইটিতে। ১৯৭৭ সালে জিয়াউল হকের অভ্যুত্থান। তাদের গ্রেফতার। কারাজীবন। ১৯৭৯ সালের ৪ এপৃল জুলফিকার আলী ভুট্টোর ফাঁসি। মৃতদেহ কাউকে না দেখিয়ে, কোনো সংবাদ মাধ্যমকে না জানিয়ে খুব ভোরে রাওয়ালপিন্ডির শুক্কুর কারাগার থেকে হেলিকপ্টারে ভুট্টোর নিজ বাড়ি লারকানায় নিয়ে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে ভুট্টোর দাফন করে গোপনে।
১৯৮৮ সালের আগস্ট মাসে রাওয়ালপিন্ডির ভাওয়ালপুরে জিয়াসহ আরো বেশ কিছু উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাকে( যাদের বেশিরভাগ পদবীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল) বহনকারী সি- ১৩০ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে জিয়া যুগের অবসান হয়। ওই বিমান দুর্ঘটনায় পাকিস্তানে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত আরনল্ড রাফেলও (Arnold Raphel) নিহত হন। এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারন আজো উম্মোচিত হয়নি। তবে বেনজির এই দুর্ঘটনাকে স্যাবোটাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ সামরিক বাহিনীর কেউ আমের জুড়িতে বোমা পেতে রেখেছিলেন।
জিয়াউল হকের মৃত্যুর কয়েক মাস পর পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে পিপিপি বেশি আসন পেয়ে মুসলিম বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হোন বেনজির ভুট্টো ১৯৮৯ সালে।
আমি এখানে বই রিভিও লিখতে বসিনি। বেনজীর যখন সিক্স গ্রেডের ছাত্রী তখনি ভুট্টো তাকে নিয়ে জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে যান তখন তিনি প্রাইম মিনিস্টার ছিলেন।
ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে 'সিমলা চুক্তি' করার সময়ও ভুট্টো বেনজিরকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলে ।
বেনজীর প্রথমে হার্ভার্ড ও পরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে 'কমপারেটিভ পলিটিক্স' উপর পড়াশোনা করেছেন। তিনি অক্সফোর্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। ইউরোপ, আমেরিকান সরকারের অনেক নীতি নির্ধারক বেনজীরের বন্ধু ও ক্লাসমেট ছিলেন। বইতে তাদের নাম ও পদ মর্যাদা উল্লেখ আছে।
হুমায়ুন আহমেদের বিতর্কিত 'দেয়াল' উপন্যাসও ১৯৮ পৃষ্ঠার। হুমায়ুনের শেষ উপন্যাস যা তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়।
গতকাল থেকে শুরু করেছি মোহিত কামাল এর উপন্যাস 'মরুঝড়'। এটিও ১৯৯ পৃষ্ঠার উপন্যাস। ৫২ পাতা পর্যন্ত পড়েছি। মোহিত কামালকে দেশের সবাই চেনেন মনোচিকিৎসক, মনোরোগ ও মাদকাসক্তি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, সাইকিয়াট্রিস্ট ও সাইকোথেরাপিস্ট হিসেবে। তিনি যে এতো ভালো লিখেন আগে জানা ছিলো না।
০৪ ডিসেম্বর ২০১৯
কুমিল্লা ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর