সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জাপানে পড়াশোনা







জাপানে পড়াশোনা
জাপানে গিয়েছিলাম সেই কবে ! অনেক বছর আগে । স্টুডেন্ট ভিসা নিয়েই গিয়েছিলাম । কিন্তু ইন্টারমেডিয়েট পাসের পর জাপানে পড়াশোনা করতে হলে আগে জাপানি ভাষার কোর্স শেষ করতে হয় । কমপক্ষে চার বছর লাগে । ইংরেজি ভাষায় পড়ার সুযোগ নেই । যা দেশে থাকতে জানতাম না । ইনফরমেশন গ্যাপ থাকলে অনেক সমস্যা । তিন চার মাস পর পাগলের মতো হয়ে গেলাম । কয়েক মাস জাপানি ভাষার কোর্স করলাম । জাপানি ভাষা শ্রুতি মধুর হলেও আমার কাছে ভালো লাগেনি । ভাতকে-গোহান, পানিকে-মিজু,-মাছকে-সাকানা, আলুকে-জাগাইমো, বন্ধুকে-তোমোদাচি, ধন্যবাদকে-দমো, স্কুলকে-গাক্কু, ছাত্রকে-গাকছেই, মানুষকে-জিন,দেশকে- কুনি, মেয়েকে(নারী)-ওন্না, পুরুষকে-ওতোকো, টাকাকে-ওকানে,ট্রেনকে-দেইংসা, পুলিশকে-ওমাওয়ারিসান, কফিকে-কহি,গুড মর্নিংকে- ওহাইয়ো গুজাইমাছ ।
তো আমার কাছে প্রতিদিন সকালে এই গুজাইমাছগিরি ভালো লাগেনি । প্রয়োজনীয় কিছু জরুরী ভাষা শিখে দেখলাম আমি তোতলা হয়ে যাচ্ছি ।
অনেক চেস্টা করলাম ইংরেজিতে পড়ার । আমি আর কাউসার মিলে কয়েকটি ইউনিভার্সিটিতে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম । ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি, কেও ইউনিভার্সিটি, জসি সোফিয়া ইউনিভার্সিটি । নাহ । কাজ হলো না ।
শেষমেশ গেলাম এশিয়ার শিক্ষা জগতে নক্ষত্র বলে বিবেচিত ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও তে । কিন্তু টিউশন ফি এতোই বেশি যে পার্ট টাইম কাজ করে এই ভার্সিটিতে পড়া মোটেও সম্ভব নয় । কাজ করবো না পড়বো ? তবে মাস্টার্সের পর খরচ কম ।
এটি একটি গবেষণামূলক বিশ্ববিদ্যালয় । যা ব্যাংকো,টোকিও জাপানে, ১৮৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । এই ভার্সিটিতে ১০টি ফ্যাকাল্টি আছে । ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১০০ জন বিদেশী । আছে পাঁচটি সুবিশাল ক্যাম্পাস । এগুলো হলো- হনগো,কোমাবা,ক্যাশিওয়া,শিরক্যানি এবং নাকাও জাপানে অবস্থিত । এশিয়ার মধ্যে এটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ইউনিভার্সিটি বলে জনশ্রুতি আছে । ১৮৮৬ সালে নাম পরিবর্তন করে ইম্পেরিয়েল ইউনিভার্সিটি করা হয় । তবে ১৯৪৫ সালে জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হলে ১৯৪৭ সালে আবার বর্তমান নামে ফিরে আসে । এই ভার্সিটির শিক্ষাবর্ষ এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত । জাপানের বিখ্যাত ইংরেজি দৈনিক জাপান টাইমসের মতে, ইউনিভার্সিটিতে ১২৮২ জন প্রফেসর আছেন যার মধ্যে ৫৮ জন নারী । ১০টি অনুষদের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় । আইন,মেডিসিন, প্রকৌশল, লেটারস, বিজ্ঞান, কৃষি, অর্থনীতি,কলা,শিক্ষা ও ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স । এই ইউনিভার্সিটিকে সারা বিশ্বে পরিচিতি এনে দিয়েছে তার গবেষণা ইন্সটিটিউটগুলো,যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স , আর্থকুয়েক রিসার্চ ইন্সটিটিউট, ইন্সটিটিউট অফ কসমিক রিসার্চ, ইন্সটিটিউট অফ সলিড টেস্ট ফিজিক্স ইত্যাদি । এই ইউনিভার্সিটি জন্ম দিয়েছে অনেক বিখ্যাত মানুষদের । জাপানের ১৫ জন প্রধানমন্ত্রী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন । এ প্রতিষ্ঠানের ৭ জন অ্যালামনি নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেছেন । দুই বছর আগে ল্যাপটপটা চুরি হয়ে গেলো জানালা দিয়ে । সেই সঙ্গে গেলো আমার জাপানের সব ছবি ।( আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা টোকিও ইউনিভার্সিটিতে চেষ্টা করতে পারো । জাপান খুব সুন্দর আর খুবই উন্নত দেশ । এশিয়ায় বলে হেলেফেলা করো না ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর