সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মেয়েদের ষোল কলা

মেয়েদের ষোল কলা 
 
আমাদের এলাকায় মেয়েদের নিয়ে একটা বহুল প্রচলিত কথা আছে...
“মেয়েদের ষোল কলা”।
ছোটবেলা থেকেই তা শুনে আসছি । অবাক হয়ে ভাবতাম, একটা না দুইটা না, ষোলটা কলা আছে মেয়েদের ! কিন্তু কখনো এই কলা দেখিনি । ছোটবেলা বড়দের মুখে এই কলার কথা শুনে মনে হতো ইশ, একটা কলা যদি দেখতে পেতাম বা খেতে পারতাম ! ভালো বলুন আর খারাপ বলুন ছোট বেলা থেকেই আমি কৌতূহলী । নতুন কিছু শুনলেই ওটার প্রতি আকর্ষণবোধ করতাম ।
আমাদের এলাকার এক সিনিয়র ভাই যিনি সবার কমন ফ্রেন্ড । তিনি আমার বড় ভাইদের বন্ধু আবার আমারো বন্ধু । নাম জহিরুল ইসলাম । লেখাপড়া খুব কম হলেও তিনি খুবই ফানি । আজো ।

নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, আচ্ছা জহির ভাই, মেয়েদের নাকি ষোলটা কলা আছে ? আমি যদি দেখতে বা খেতে চাই তবে কি করতে হবে ? তিনি বললেন, এই কলা দেখা যায় না, খাওয়াও যায় না । কিন্তু যে একবার দেখেছে সে জীবনেও আর দেখতে চাইবে না । আমি অনুনয় বিনয় করে বললাম, আমার যে দেখতে ইচ্ছা করে জহির ভাই । তিনি বললেন, তুইতো এখনো ছোট । অনেক বড় বড় মানুষ যেমন ধর শিক্ষক, হুজুররা এই কলা দেখেছে । তারা আর দেখতে চায় না । আমি অবাক হয়ে বললাম, কেনো ?
জহির ভাই বললেন তাহলে শোন,
“ নাইনে পড়ুয়া একটা মেয়ে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তো । মনে কর, মেয়েটার নাম জুলেখা । তো শিক্ষক একদিন মেয়েটাকে বললো, জুলেখা, তোমাদের নাকি ষোল কলা আছে ? আমাকে একটা কলা দেখাও না প্লিজ । ছাত্রীটি তখন স্যারকে বললো, স্যার, দেইখেন না, ভালো না । আপনার বিপদ হবে । শিক্ষক অনুরোধ করে বললো, এখানে তো তুমি-আমি ছাড়া কেউ নেই । দেখাও না । কি আর বিপদ হবে ? আমি কাউকে বলবো না । ছাত্রীটি আবারো বললো, স্যার, আপনার ক্ষতি হবে দেখলে । কিন্তু শিক্ষক নাছোড়বান্দা । তিনি বললো, বিপদ হলে হবে । তুমি দেখাও ।
মেয়েটি তখন চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে স্যারের বিছানায় বসে দুই কানে হাত দিয়ে খুব জোরে একটা চিৎকার দিয়েই শিক্ষকের বিছানায় শুয়ে অজ্ঞানের মতো হয়ে গেলো । মেয়েটির চিৎকার শুনে আশেপাশের বাড়ির লোকজন স্যারের বাসায় ঢুকে দেখে মেয়েটি বিছানায় অজ্ঞান হয়ে আছে । আর স্যার তার মাথায় হাত বুলাচ্ছে । এই দৃশ্য দেখে সবাই মিলে শিক্ষককে এমন মার মারলো যে প্রায় আধ মরা করে ফেললো ।
এরপর মেয়েটির মুখে হালকা পানির ছিটা দিলে মেয়েটি ভান ধরা অজ্ঞান থেকে উঠে বসলো । সবাই তখন মেয়েটির কাছে জানতে চাইলো, শিক্ষক কি করেছে ? মেয়েটি খুব বিনয়ের সঙ্গে বললো, স্যারতো কিছু করে নি । আমাকে পড়াচ্ছিলো । হঠাৎ আমার মাথা ঘুরতে লাগলো । আর কিছু বলতে পারবো না । লোকজন জানতে চাইলো,শিক্ষক কোনো খারাপ আচরণ করেছে কিনা ? মেয়েটি বললো, না না । স্যার অনেক ভালো । আমাকে অনেক যত্ন করে পড়ান । স্যারের মতো মানুষই হয় না । স্যার কোনো দিন কোনো খারাপ আচরণ করেন নি ।
তখন সবাই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইলো । কিন্তু ততক্ষণে লোকজনের ঘুষিতে স্যারের এক চোখে রক্ত জমে কালো হয়ে গেছে । নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে ।
সবাই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে যাওয়ার পর মেয়েটি শিক্ষককে বললো, বলছিলাম না স্যার দেইখেন না । দেখলে আপনের বিপদ হইবো । আমিতো শুধু একটা কলা দেখাইছি । আরো ১৫টা কলা আছে । দেখবেন না স্যার ?”
জহির ভাই বললেন,এই হলো মেয়েদের ষোল কলার একটা । এখন তুই বল, মেয়েদের কলা তুই দেখবি কিনা ? আমি আমতা আমতা করে বললাম, এইটা কেমন কলা ? দেখলে মাইর খেতে হয় ? বড় হয়ে মাইর না খেয়েও অনেক কলা দেখেছি । আমার মাঝে মাঝে ছোট বেলার কথা মনে পড়ে । আজ ‘ষোল কলা’র কথা মনে পড়লো ।
© Karim Chowdhury
২০ জুন ২০১৬
কুমিল্লা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর