সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি

বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি

বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি নিয়ে অনেক লেখা যায়। দীর্ঘ রচনা। ছোট্ট করে লিখছি। কয়েক লাইন। ১৯৯৪ সালে খালেদা জিয়া গেলেন জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে ভাষণ দিতে। আমি তখন নিউ ইয়র্কে। চাকরি করতাম রকফেলার সেন্টারে। সেখান থেকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে হেঁটে যেতে সময় লাগে মাত্র দশ মিনিট। ইষ্ট রিভারের পাড়ে জাতিসংঘ নামের ওই ক্লাবটি অবস্থিত। আমি ম্যানেজারকে বুঝিয়ে ২ ঘন্টার জন্য ছুটি নিয়ে হেঁটে হেঁটে গেলাম ইউনাইটেড নেশানস হেড কোয়ার্টারে।
দেখলাম, ভবনের সামনের রাস্তায় শত শত বাংলাদেশির এক হাতে খালেদা বিরোধী প্ল্যাকার্ড আরেক হাতে জুতা। আওয়ামী লীগসহ সমমনা দলগুলোর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
NYPD এর কি ব্যস্ততা বাংলাদেশিদের সামাল দিতে!
পৃথিবীর প্রায় সবগুলো দেশের সরকার প্রধান তখন নিউ ইয়র্কে। এক আমেরিকান ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো, পৃথিবীর অনেক দেশের নেতা এখানে আছেন। কেউ তো তাদের দেশের নেতাকে এভাবে অপমান করছে না। তোমরা করছো কেনো? আমি তাকে স্পষ্ট বলেছি, We are uncivilized Nation. Don’t you know that?
১৯৯৬ তে প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা গেলেন আমেরিকায়। গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে আমেরিকা আওয়ামী লীগের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে আমাকে নিয়ে গেলেন চট্রগ্রামের মাহমুদ ভাই। আওয়ামী লীগের কোনো অনুষ্ঠানে আমি যাই না। তিনি ঘোর আওয়ামী লীগ। আমি তখন জনপ্রিয় সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে লিখতাম বলে গায়ে বিএনপির ছাপ পরে গিয়েছিলো। তিনি আমাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিয়ে গেলেন।
অনুষ্ঠান শুরুর পর বক্তব্য দেয়া নিয়ে শুরু হলো দলের নেতা কর্মীদের তর্কাতর্কি। এক পর্যায়ে মারামারি। চেয়ার ছোড়াছুড়ি। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে!
আবার NYPD এর হস্তক্ষেপ। এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এম এ সালাম মাইক নিয়ে সবার কাছে হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে বললেন, দেশের মান ইজ্জত রক্ষার্থে সবাই যেন আল্লাহর দিকে চেয়ে শান্ত থাকেন।
NYPD মানে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এর লোকেরা পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের কর্মকাণ্ড দেখছিলেন। এই হলো বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি। গর্বিত বাঙালী জাতি !!!
©Karim Chowdhury
13 June,2020
Cumilla

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...