লেখালেখি
অনেক দিন আগে, ঠিক অনেক দিন আগে না, অনেক বছর আগে ছাত্র জীবনে মিসেস তালেয়া রেহমানের লেখা একটা বই পড়েছিলাম। নাম ‘লেখালেখি’। ওই বইতে তিনি লিখেছিলেন-আপনি যদি লেখক হতে চান তবে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে কাগজ কলম নিয়ে টেবিলে বসে পড়ুন। কিছু না কিছু লেখার চেষ্টা করুন। কিছু না লিখতে পারলেও ওই নির্দিষ্ট সময়ে কাগজ কলম নিয়ে টেবিলে বসে পড়ুন। আর কিছু না পারলেও কি ভাবছেন তাই লেখার চেষ্টা করুন। পরে পড়ে ভালো না লাগলে লেখার কাগজটা ছিড়ে ফেলে দেবেন। এভাবে প্রতিদিনই কিছু না কিছু লিখবেন। তিনি আরো লিখেছেন-লেখক হওয়ার জন্য কোনো উচ্চতর ডিগ্রীর প্রয়োজন নেই। মেধাই যথেষ্ট।
তবে লেখক হতে হলে পাঠক হতে হবে আগে। পাঠক না হয়ে লেখক হওয়া যায় না। এটা লেখক হবার পূর্বশর্ত। সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের একটা শ্লোগান ছিলো ‘লেখকই যার পাঠক-পাঠকই যার লেখক’ ।
পরে আমাদের কাছে হয়ে গেলো’যায়যায়দিন এ এক নিষিদ্ধ নেশা’।
ধুর, এ মুহূর্তে মনে পড়ে গেলো ছাত্র জীবনের সেই মধুর চেয়েও মধুময় দিনগুলোর কথা। আমি লিখতে বসেছিলাম ইউরোপের একটা ঘটনা। মনে পড়ে গেলো ছাত্র জীবনের কথা। ম্যারাথন আড্ডা মারতাম কান্দিরপাড়। যায়যায়দিন প্রকাশিত হতো প্রতি মঙ্গলবার। ৩২ পৃষ্ঠার ওই জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের দাম ছিলো মাত্র ৩ টাকা। যায়যায়দিনের ভেতরের পাতায় লেখা থাকতো ‘যায়যায়দিন পড়ুন-সময়টা ভালো কাটবে’।
হ্যাঁ, অনেক ভালো সময় কাটতো আমাদের। যায়যায়দিন পড়ে আমরা আলোচনা করতাম। ‘দিনের পর দিন’ ছিলো আমার প্রিয় কলাম যা সম্পাদক শফিক রেহমান নিজে লিখতেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ দুইবার যায়যায়দিনকে নিষিদ্ধ করেন। সম্পাদককে দেশ থেকে বহিস্কার করেন। তাঁকে জোর করে লন্ডনে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পিতার মৃত্যুতে আমাদের প্রিয় সম্পাদক মি.শফিক রেহমান লন্ডন থেকে ঢাকায় এলে ঢাকা এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন তাকে দেশে ঢুকতে দেয়নি। তিনি ফিরতি ফ্লাইটে লন্ডন চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তার পিতা সাইদুর রহমান ছিলেন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। শেখ মুজিবুর রহমান তার সরাসরি ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইদুর রহমান ফাউন্ডেশন আজো আছে।
আমরা কতো উদ্বিগ্ন ছিলাম। যায়যায়দিন ছাড়া আমরা ছাত্ররা এতিম হয়ে গিয়েছিলাম। সময়ই কাটতো না। তখন বিটিভি ছাড়া আর কোনো টিভি চ্যানেলও ছিলো না। হুমায়ুন আহমেদের ‘এইসব দিনরাত্রি’, 'বহুব্রীহি', 'অয়ময়', ‘কোথাও কেউ নেই’, শহিদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’। আরেকটা ধারাবাহিক ছিলো।‘ঢাকায় থাকি’।
নাট্যকারের নাম মনে নেই। এসবই দেখা হতো।
দল বেধে কান্দিরপাড়( শহরের মুল কেন্দ্রস্থল)এরশাদকে গালাগালিও করতাম ইচ্ছা মতো। যায়যায়দিন নিষিদ্ধ করার কারনে। ইশ ! সেই দিনগুলো যদি আবার ফিরে আসতো। কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স এর লেখালেখির উপর একটা বই আছে, নাম 'কি লিখবেন-কেনো লিখবেন '। বিদেশে গিয়ে ‘The writer’s Guide’, ‘How to Write’, ' How to be a good writer 'এ জাতীয় কিছু বইও পড়েছিলাম ।
ছোটখাটো লেখক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতাম।
আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে 'কৃয়েটিভ রাইটিং' নামে একটা সাবজেক্ট আছে। যারা লেখক হতে চান,তারা ওই সাবজেক্টে পড়েন। বিদেশে লেখক বানায় ওরা। নিউইয়র্ক থাকতে আমি কিছুদিন অনলাইনে তাদের ক্লাস করেছিলাম।
তালেয়া রেহমানের বই পড়ে প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখতে বসতাম। তখন তো কাগজ কলমে লিখতাম। এখন আর কাগজ কলম নিয়ে না বসলেও চলে। কম্পিউটারের কী বোর্ড চাপলেই লেখা হয়ে যায়। প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখবো বলে রুমের এক কোণায় এই চেয়ার টেবিলে আমি বসি। যায়যায়দিনের মতো এতো বেশি জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বাংলাদেশের ইতিহাসে আর পাওয়া যাবে না। এটাই আপসোস। আমার একাকী সময়টা অন্তত ভালো কাটতো ।
একবার ভিয়েনা থেকে দেশে বেড়াতে এসে যায়যায়দিন অফিসে গিয়েছিলাম কিছু পুরনো ম্যাগাজিন ও বইয়ের জন্য । যায়যায়দিন প্রকাশনীর কিছু বই ছিলো। ওই ম্যাগাজিনে লেখাগুলো দিয়েই বই প্রকাশ করা হয়েছিলো। ‘খ্যাতির শিখরে প্রেমের গভীরে’, ‘ভালোবাসা', 'আই কিউ', ‘যায়যায়দিন’ বইগুলো ডিসকাউন্টে কিনে সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যখন অফিস থেকে বের হয়ে বেইলি রোডে গেইটের সামনে এলাম, তখন মিসেস তালেয়া রেহমান অফিসে ঢুকছিলেন। আমাকে দেখে তিনি কাছে ডেকে জানতে চাইলেন, কার কাছে এসেছিলাম। বললাম-আমি যায়যায়দিনের পাঠক। কিছু বই কিনতে অফিসে এসেছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন-‘তুমি কোথায় থাকো’? বিনয়ের সঙ্গে জানালাম, আমি ভিয়েনায় থাকি। হোম ডিসটৃক্ট কুমিল্লা। তিনি বন্ধুসুলভ হাসি দিয়ে বললেন-‘তোমাকে দেখেই বোঝা যায়। লাল গেঞ্জি পড়েছো তো’। সেদিন আমি কালো প্যান্ট,লাল পলো গেঞ্জি আর কালো শু পড়েছিলাম। সে সময় যায়যায়দিন অফিস ছিলো ১৫ নিউ বেইলি রোডে। আমাকে একটা কার্ড দিয়ে তিনি বলেছিলেন- হোটেল সোনারগাঁও এ আমাদের প্রোগ্রামে তুমি এসো। যায়যায়দিনের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই প্রোগ্রাম। আমি গিয়েছিলাম। অনেক ছবি তুলেছিলাম।
চিফ গেস্ট ছিলেন তৎকালীন ঢাকায় নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত মি. ডেভিড এন মেরিল। অনেক গুণীজন ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। এম আর আকতার মুকুল, নাট্যকার আতিকুল হক চৌধুরী, আবুল হায়াত, ডলি জোহর, দিলারা জামান, বিজরি বরকতউল্লাহ, হুমায়ুন ফরিদীসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো অনেকে। যায়যায়দিনের টিমতো ছিলোই।
তাদের অনেকেই আজ আমাদের মাঝে দৈহিকভাবে উপস্থিত নেই। অনেক ছবি তুলেছিলাম। কিন্তু আমার ল্যাপটপ চুরি হওয়ায় সব গেলো। মনে আছে, ডলি জোহর আপা আমাকে অটোগ্রাফ দেয়ার সময় উনার খাবার প্লেটটা আমার হাতে দিয়ে বলেছিলেন ’এটা তুমি ধরো। রাখার জায়গা নেই?' মি.শফিক রেহমান আধুনিক মানুষ। গেস্টদের জন্য স্ন্যাকস এর ব্যবস্থা করেছিলেন। সেলফ সার্ভিস। এবং সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই খাবে। বড় টেবিলে স্ন্যাকস রাখা আছে। ইচ্ছা মতো নাও। শক্তিমান অভিনেতা প্রয়াত হুমায়ুন ফরিদী আমার ডায়েরিতে লিখেছিলেন-‘মন্টু, হাসো চিরকাল’। নাহ । আজ আর কিছু লেখা হলো না । নস্টালজিয়ায় আমাকে পেয়ে বসেছে ।
পুনশ্চঃ যারা লেখালেখি করতে চান তারা প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে লিখতে বসুন। যা মনে আসে তাই লিখবেন। গাইতে গাইতে গায়ক। লিখতে লিখতে লেখক।
* ছবিটা এখনি তোলা। Oppo সেটে ভালো ছবি আসে।
©Karim Chowdhury
23 June,2020
Cumilla
অনেক দিন আগে, ঠিক অনেক দিন আগে না, অনেক বছর আগে ছাত্র জীবনে মিসেস তালেয়া রেহমানের লেখা একটা বই পড়েছিলাম। নাম ‘লেখালেখি’। ওই বইতে তিনি লিখেছিলেন-আপনি যদি লেখক হতে চান তবে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে কাগজ কলম নিয়ে টেবিলে বসে পড়ুন। কিছু না কিছু লেখার চেষ্টা করুন। কিছু না লিখতে পারলেও ওই নির্দিষ্ট সময়ে কাগজ কলম নিয়ে টেবিলে বসে পড়ুন। আর কিছু না পারলেও কি ভাবছেন তাই লেখার চেষ্টা করুন। পরে পড়ে ভালো না লাগলে লেখার কাগজটা ছিড়ে ফেলে দেবেন। এভাবে প্রতিদিনই কিছু না কিছু লিখবেন। তিনি আরো লিখেছেন-লেখক হওয়ার জন্য কোনো উচ্চতর ডিগ্রীর প্রয়োজন নেই। মেধাই যথেষ্ট।
তবে লেখক হতে হলে পাঠক হতে হবে আগে। পাঠক না হয়ে লেখক হওয়া যায় না। এটা লেখক হবার পূর্বশর্ত। সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের একটা শ্লোগান ছিলো ‘লেখকই যার পাঠক-পাঠকই যার লেখক’ ।
পরে আমাদের কাছে হয়ে গেলো’যায়যায়দিন এ এক নিষিদ্ধ নেশা’।
ধুর, এ মুহূর্তে মনে পড়ে গেলো ছাত্র জীবনের সেই মধুর চেয়েও মধুময় দিনগুলোর কথা। আমি লিখতে বসেছিলাম ইউরোপের একটা ঘটনা। মনে পড়ে গেলো ছাত্র জীবনের কথা। ম্যারাথন আড্ডা মারতাম কান্দিরপাড়। যায়যায়দিন প্রকাশিত হতো প্রতি মঙ্গলবার। ৩২ পৃষ্ঠার ওই জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের দাম ছিলো মাত্র ৩ টাকা। যায়যায়দিনের ভেতরের পাতায় লেখা থাকতো ‘যায়যায়দিন পড়ুন-সময়টা ভালো কাটবে’।
হ্যাঁ, অনেক ভালো সময় কাটতো আমাদের। যায়যায়দিন পড়ে আমরা আলোচনা করতাম। ‘দিনের পর দিন’ ছিলো আমার প্রিয় কলাম যা সম্পাদক শফিক রেহমান নিজে লিখতেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ দুইবার যায়যায়দিনকে নিষিদ্ধ করেন। সম্পাদককে দেশ থেকে বহিস্কার করেন। তাঁকে জোর করে লন্ডনে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পিতার মৃত্যুতে আমাদের প্রিয় সম্পাদক মি.শফিক রেহমান লন্ডন থেকে ঢাকায় এলে ঢাকা এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন তাকে দেশে ঢুকতে দেয়নি। তিনি ফিরতি ফ্লাইটে লন্ডন চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তার পিতা সাইদুর রহমান ছিলেন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। শেখ মুজিবুর রহমান তার সরাসরি ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইদুর রহমান ফাউন্ডেশন আজো আছে।
আমরা কতো উদ্বিগ্ন ছিলাম। যায়যায়দিন ছাড়া আমরা ছাত্ররা এতিম হয়ে গিয়েছিলাম। সময়ই কাটতো না। তখন বিটিভি ছাড়া আর কোনো টিভি চ্যানেলও ছিলো না। হুমায়ুন আহমেদের ‘এইসব দিনরাত্রি’, 'বহুব্রীহি', 'অয়ময়', ‘কোথাও কেউ নেই’, শহিদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’। আরেকটা ধারাবাহিক ছিলো।‘ঢাকায় থাকি’।
নাট্যকারের নাম মনে নেই। এসবই দেখা হতো।
দল বেধে কান্দিরপাড়( শহরের মুল কেন্দ্রস্থল)এরশাদকে গালাগালিও করতাম ইচ্ছা মতো। যায়যায়দিন নিষিদ্ধ করার কারনে। ইশ ! সেই দিনগুলো যদি আবার ফিরে আসতো। কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স এর লেখালেখির উপর একটা বই আছে, নাম 'কি লিখবেন-কেনো লিখবেন '। বিদেশে গিয়ে ‘The writer’s Guide’, ‘How to Write’, ' How to be a good writer 'এ জাতীয় কিছু বইও পড়েছিলাম ।
ছোটখাটো লেখক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতাম।
আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে 'কৃয়েটিভ রাইটিং' নামে একটা সাবজেক্ট আছে। যারা লেখক হতে চান,তারা ওই সাবজেক্টে পড়েন। বিদেশে লেখক বানায় ওরা। নিউইয়র্ক থাকতে আমি কিছুদিন অনলাইনে তাদের ক্লাস করেছিলাম।
তালেয়া রেহমানের বই পড়ে প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখতে বসতাম। তখন তো কাগজ কলমে লিখতাম। এখন আর কাগজ কলম নিয়ে না বসলেও চলে। কম্পিউটারের কী বোর্ড চাপলেই লেখা হয়ে যায়। প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখবো বলে রুমের এক কোণায় এই চেয়ার টেবিলে আমি বসি। যায়যায়দিনের মতো এতো বেশি জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বাংলাদেশের ইতিহাসে আর পাওয়া যাবে না। এটাই আপসোস। আমার একাকী সময়টা অন্তত ভালো কাটতো ।
একবার ভিয়েনা থেকে দেশে বেড়াতে এসে যায়যায়দিন অফিসে গিয়েছিলাম কিছু পুরনো ম্যাগাজিন ও বইয়ের জন্য । যায়যায়দিন প্রকাশনীর কিছু বই ছিলো। ওই ম্যাগাজিনে লেখাগুলো দিয়েই বই প্রকাশ করা হয়েছিলো। ‘খ্যাতির শিখরে প্রেমের গভীরে’, ‘ভালোবাসা', 'আই কিউ', ‘যায়যায়দিন’ বইগুলো ডিসকাউন্টে কিনে সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যখন অফিস থেকে বের হয়ে বেইলি রোডে গেইটের সামনে এলাম, তখন মিসেস তালেয়া রেহমান অফিসে ঢুকছিলেন। আমাকে দেখে তিনি কাছে ডেকে জানতে চাইলেন, কার কাছে এসেছিলাম। বললাম-আমি যায়যায়দিনের পাঠক। কিছু বই কিনতে অফিসে এসেছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন-‘তুমি কোথায় থাকো’? বিনয়ের সঙ্গে জানালাম, আমি ভিয়েনায় থাকি। হোম ডিসটৃক্ট কুমিল্লা। তিনি বন্ধুসুলভ হাসি দিয়ে বললেন-‘তোমাকে দেখেই বোঝা যায়। লাল গেঞ্জি পড়েছো তো’। সেদিন আমি কালো প্যান্ট,লাল পলো গেঞ্জি আর কালো শু পড়েছিলাম। সে সময় যায়যায়দিন অফিস ছিলো ১৫ নিউ বেইলি রোডে। আমাকে একটা কার্ড দিয়ে তিনি বলেছিলেন- হোটেল সোনারগাঁও এ আমাদের প্রোগ্রামে তুমি এসো। যায়যায়দিনের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই প্রোগ্রাম। আমি গিয়েছিলাম। অনেক ছবি তুলেছিলাম।
চিফ গেস্ট ছিলেন তৎকালীন ঢাকায় নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত মি. ডেভিড এন মেরিল। অনেক গুণীজন ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। এম আর আকতার মুকুল, নাট্যকার আতিকুল হক চৌধুরী, আবুল হায়াত, ডলি জোহর, দিলারা জামান, বিজরি বরকতউল্লাহ, হুমায়ুন ফরিদীসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো অনেকে। যায়যায়দিনের টিমতো ছিলোই।
তাদের অনেকেই আজ আমাদের মাঝে দৈহিকভাবে উপস্থিত নেই। অনেক ছবি তুলেছিলাম। কিন্তু আমার ল্যাপটপ চুরি হওয়ায় সব গেলো। মনে আছে, ডলি জোহর আপা আমাকে অটোগ্রাফ দেয়ার সময় উনার খাবার প্লেটটা আমার হাতে দিয়ে বলেছিলেন ’এটা তুমি ধরো। রাখার জায়গা নেই?' মি.শফিক রেহমান আধুনিক মানুষ। গেস্টদের জন্য স্ন্যাকস এর ব্যবস্থা করেছিলেন। সেলফ সার্ভিস। এবং সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই খাবে। বড় টেবিলে স্ন্যাকস রাখা আছে। ইচ্ছা মতো নাও। শক্তিমান অভিনেতা প্রয়াত হুমায়ুন ফরিদী আমার ডায়েরিতে লিখেছিলেন-‘মন্টু, হাসো চিরকাল’। নাহ । আজ আর কিছু লেখা হলো না । নস্টালজিয়ায় আমাকে পেয়ে বসেছে ।
পুনশ্চঃ যারা লেখালেখি করতে চান তারা প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে লিখতে বসুন। যা মনে আসে তাই লিখবেন। গাইতে গাইতে গায়ক। লিখতে লিখতে লেখক।
* ছবিটা এখনি তোলা। Oppo সেটে ভালো ছবি আসে।
©Karim Chowdhury
23 June,2020
Cumilla
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন