সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"শালা শুয়োরের বাচ্চা"

"শালা শুয়োরের বাচ্চা"

ছাত্র জীবনে দাউদ হায়দারের কবিতা পড়েছিলাম কিছু। আমি আর রাজু কয়েকমাস এক রুমে ছিলাম। মনোহরপুর সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট অফিসের ঠিক পেছনে। তখন ইন্টারমেডিয়েট লেভেল। রাজু ভালো ছাত্র। এখন একটা কলেজে সহকারি অধ্যাপক। আদর্শিক রাজনীতি করতে গিয়ে জেল খেটেছে। নিজের ক্যারিয়ার নষ্ট করেছে। অনেক সেকৃফাইস আছে রাজুর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারতো সে।
দাউদ হায়দারের কবিতা রাজুও পছন্দ করতো। আমাদের প্রতিবেশি ছিলো ইলিয়াস নামের এক যুবক। আমাদের বয়সি। বন্ধুস্থানীয়। সে লেখাপড়া করতো না। একটা ভেস্পা চালাতো সেই বয়সেই। চলাফেরা ছিলো বুং বাং।
আমরা পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম আর একটু প্রেম ট্রেম করতাম বলে ইলিয়াস আমাদের হিংসা করতো। মাঝে মধ্যে টিপ্পনি কাটতো।
একদিন আমি বললাম, ইলিয়াসকে কিভাবে সাইজ করা যায় রাজু ? তার তাফালিং তো আর ভালোলাগছে না।
রাজু ইনটেলেকচুয়ালের মতো ভাব নিয়ে বললো, কাল থেকেই শুরু হবে। আমি জানতে চাইলাম, কিভাবে ?
রাজু বললো, দাউদ হায়দারের
" জন্মই আমার আজন্ম পাপ" কবিতার কয়েক লাইন ইলিয়াসকে দেখলেই জোরে জোরে পড়বো।
" শালা শুয়োরের বাচ্চা, আমরাই পাপীরে হারামজাদা,তাহলে তুমি কি হে "।
এই লাইন পড়লেই ইলিয়াসের শিক্ষা হবে। আমি রাজুকে বললাম, সে যদি ক্ষেপে যায় ? রাজু বললো, সে প্রতিবাদ করলে বলবো,ভাই দেখো, তোমাকে গালাগালি করিনি। লেখাপড়াতো করো না। তাই জানো না। এটা দাউদ হায়দারের কবিতা। একটু লেখাপড়া করো।
আমাদের এই কবিতা শুনে ইলিয়াস প্রতিবাদ করেনি। কটমট করে তাঁকাতো আমাদের দিকে। ইলিয়াস মারা গেছে কয়েক বছর হয়।
অনেক বছর পরে যখন অস্টৃয়া থেকে জার্মানি বেড়াতে গিয়েছিলাম তখন দাউদ হায়দারের সঙ্গে বার্লিনে আমার দেখা হয়েছিলো। অনেক গল্প হয়েছিলো। বার্লিনের এক রেস্তোরাঁয় কবি আমাকে ডিনার খাইয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন। তিনি জার্মানিতে সেটেল্ড। ইদানীং কিছু মানুষ দেখলে কেনো যেনো কবিতার ওই লাইনটা পড়তে খুব ইচ্ছা করে।
( রাজু আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আছে Mir Raju. রাজু, তোকে না দেখিয়ে পোস্টিং দিলাম। প্রয়োজনে সম্পাদনা করা যেতে পারে।)
Karim Chowdhury
19 June,2020
Cumilla.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর