সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তুমি

তুমি

ঠিক দেড় বছর আগে ফেসবুকেই তোমার সঙ্গে আমার পরিচয় । তারপর ঘনিষ্ঠতা । একদিন আমি রাগ করে ফোন রিসিভ না করায় তুমি ৬৫বার ফোন করেছিলে । আমি তোমাকে বলেছিলাম, দেখো, বিবাহিতা কোনো মেয়ের সঙ্গে আমি ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব করবো না । আমার আগের অভিজ্ঞতা আছে । এটা আমাদের সমাজ যেমন ভালো চোখে দেখে না তেমনি ওই ভদ্রমহিলার স্বামীও পছন্দ করে না । এক সময় মেয়ের পক্ষের কেউ(স্বামী) সন্দেহ পোষণ করলে ওই ভদ্রমহিলা তার স্বামী, সংসার আর সন্তানের কথা ভেবে ওই ভালোলাা মানুষটিকে ছেড়ে যায় । ওই মহিলার তেমন কোনো সমস্যা হয় না । কারন তিনি স্বামী, সংসার, সন্তান নিয়েই ব্যস্ত থাকেন । কিন্তু ওই ভদ্রলোকের খুব কষ্ট হয় । তার কিছুই করার থাকে না । আর এমন রিলেশন বেশিদিন লুকিয়েও রাখা যায় না ।
তুমি কেন আমাকে ভালোবাসো ? আমি তো তোমার অনেক সিনিয়র । দুষ্টুমি করে আরো বলতাম, শুনেছি, চাওয়ার মতো চাইতে জানলে মানুষ আল্লাহকেও পায় কিন্তু আমি আমৃত্যু তোমার সাধনা করলেও তোমাকে পাবো না । কারন তুমি এমন চরিত্রের মেয়ে নও যে, স্বামী সন্তান ফেলে পরকীয়া প্রেম করে কারো সঙ্গে চলে যাবে । তাছাড়া তোমার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্কও ছিলো না। নির্দোষ ভালোলাগার বন্ধুত্ব ছিলো।
তবু কেন আমার এতো খোঁজ নাও তুমি ? ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলো ? এক সময় তুমি চলে গেলে আমার খুব কষ্ট হবে । একথা কাউকে বলতে পারবো না । নীরব ব্যধির মতোই আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে । এই বয়সে এই ধকল আমি নিতে পারবো না । তাছাড়া আমি একা থাকি বলে তোমার এই সরব উপস্থিতি এক সময় নীরব হয়ে গেলে আমি খুব শুন্যতায় ভুগবো । আমিও তোমাকে ভালোবাসি । বিয়ে করার জন্য নয় । বন্ধুর মতোই । এখানে যৌনতাও নেই । তুমি আমার সব উপদেশ উপেক্ষা করে আমার সার্বক্ষনিক খোঁজ নিয়েছো ।
তুমি আমার উপর অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করেছো । তুমি বলতে, ছেড়ে যাবো না । যখন ফোনে ঝগড়া হতো তুমি বলতে, ঝগড়া করবা কিন্তু ছেড়ে যাবা না । আমি হেসে বলতাম, আমার যাওয়ার মতো কোনো যায়গা নেই । তুমি বলতে, তোমাকে কখনো বাবার মতো, কখনো ভাইয়ের মতো, কখনো একজন সৎ আর বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো ভালোবাসি । আমি তোমাকে কখনো ছেড়ে যাবো না । তুমি ভালো থাকলে আমার ভালো লাগে । তাই তোমার এতো খোঁজ নিই।
কিন্তু তুমি চলে গিয়েছো! যাও । তোমার যেভাবে থাকতে ভালো লাগে বা তুমি যেভাবে সুখী থাকো সেভাবেই থাকবে । আমাদের বন্ধুত্বে কোনো শর্ত ছিলো না । একটা শর্ত ছিলো, কেউ কাউকে ছেড়ে যাবো না । তুমি এটা ভঙ্গ করেছো । তোমার সুন্দর জীবনের জন্য আমি আনন্দের সঙ্গেই এটা মেনে নিলাম । আমার কোনো অভিযোগ নেই ।
আমার আমৃত্যু কষ্ট হবে । এই যা । এক সময় তুমি হয়ে যাবা আমার বাস্তব গল্পের জীবন্ত নায়িকা । আমি ফেবুতেই গল্প লিখবো । তোমার নাম, ঠিকানা, লোকেশন পরিবর্তন করে দেবো । তোমাকে আমি বলেছিলাম- দেখো, যায়যায়দিন আর মৌচাকে ঢিল ম্যাগাজিনে লিখে আমার বেশ কিছু ইয়াং বন্ধু (মেয়ে) আছে । ওই পত্রিকা দুটো তরুণ আর আধুনিক ছেলেমেয়েরা খুব পছন্দ করতো । আর লেখার নিচে লেখকের ফোন নাম্বার উল্লেখ করে দিতো । আমি জানি, তরুণ ছেলেমেয়েরা আমার লেখা বেশি পছন্দ করে । তারা অনেকে আমাকে ফোনও করতো । এতো বেশি ফোনের জ্বালায় আমি ওই সিমটা এখন আর চালাই না । ওই বন্ধুদের কেউ কেউ ফেবুতেও আমার লিস্টে আছে । বলেছিলাম তোমাকে অনেক কথা । তুমিও বলেছিলে । আমি তোমার বাবা, মা, ভাই,বোন, স্বামী, দেবর, ননদ, সন্তানের নামও জানি । তুমিই বলেছিলা । তুমি অন্য জেলার হলেও মনে হতো সারাক্ষণ তুমি আমার পাশেই আছো । তোমার অনেক স্মৃতি আমার কাছে আছে । আরো কতো স্মৃতি !
শ্লেটে চকের দাগ ভেজা কাপড়ে মুছে ফেলা যায় । কাগজে পেন্সিলের লেখা রাবার ঘষে উঠিয়ে ফেলা যায় । কিন্তু মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটনা বা স্মৃতি থাকে যা কখনো কিছুতেই মুছে ফেলা যায় না । উঠিয়ে ফেলা যায় না । সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় বটে কিন্তু থেকে যায় স্মৃতি । সময়কে পরাজিত করে বার বার সে জেগে উঠে । হতে পারে সে স্মৃতি সুখের, দুঃখের, আনন্দের, বেদনার, ভালোবাসার । মনে হতেই চোখের সামনে ভেসে উঠে অবিকল । স্মৃতির মুখচ্ছবিতে কখনো কালের মলিনতা লাগে না । তুমিও আমার কাছে কস্মিনকালেও মলিন হবে না। এই পৃথিবীর যেখানেই থাকো ভালো থেকো আমার সকল পূন্যের বিনিময়ে হলেও৷

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর