সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পূর্ব-পশ্চিম

 পূর্ব-পশ্চিম

---------------

"বিশাল ক্যানভাসে রচিত এই উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ একই সঙ্গে ছুঁয়ে আছে এপার এবং ওপার বাংলা। শুরু সেই পঞ্চাশের মধ্যভাগে। দুই বাংলার রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রের পালাবদলের স্রোত কিভাবে এসে মিশেছে আশির দশকের মোহনায়, এই উপন্যাস তার এক জীবন্ত দলিল।

এক দিকে জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যু, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর অকাল প্রয়াণ, ইন্দিরা গান্ধীর অভ্যুত্থান, অর্থনৈতিক ক্রমাবনতি, তরুণ সমাজের মধ্যে  জেগে ওঠা বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা-উন্মাদনা, উগ্রপন্থী রাজনীতি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ; অন্যদিকে ভাষা আন্দোলনের অব্যবহিত পরবর্তী সময় গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে যুব সমাজের হতাশা, শেখ মুজিবের হত্যা-এ সমস্ত কিছুকে ছুঁয়ে প্রবাহিত 'পূর্ব- পশ্চিম' এর ঘটনাস্রোত। দুই বাংলার দুই পরিবারকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে বিশেষ কোনো চরিত্রকে মূল চরিত্র বলা যাবে না। একইসঙ্গে অনেকগুলো প্রধান চরিত্র। এইসব চরিত্রের কেউ কেউ আবার পূর্ব বা পশ্চিম বাংলার গণ্ডিতেই আবর্তিত নয়, ইউরোপ-আমেরিকাতেও গেছে। ফলে কলকাতার কফি হাউজের পাশাপাশি কখনো পূর্ব বাংলার কাদা- প্যাচপেচে গ্রাম, কখনো আবার আমেরিকার চোখ ধাধাঁনো শহরের কথা এই উপন্যাসে। 'পূর্ব-পশ্চিম' নামকরণেও যেনো নিহিত ত্রিমাত্রিক ব্যঞ্জনা। এই উপন্যাসে শুধুই পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার কথা নয়। পূর্ব গোলার্ধ ও পশ্চিম গোলার্ধের বৃহত্তর পটভূমিও এর অন্তর্গত। আবার মানুষের জীবন ও মনে যে পূর্ব ও  পশ্চিম, তার উচ্চাকাঙ্খা ও উত্থান-পতন, সুচনা ও দিনাবসান- তাও যেনো সুক্ষ্মভাবে প্রতিফলিত এই নামকরণে।"

বৃহৎ কলেবরের এই উপন্যাস প্রথম খন্ড প্রথম  প্রকাশিত হয়েছিলো ১ বৈশাখ ১৩৯৫। দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয়েছিলো জানুয়ারি ১৯৮৯। আনন্দ পুরস্কার পাওয়া এই উপন্যাস। 

ছাত্রজীবনেই এই উপন্যাস পড়ে ফেলি কয়েকবার। এই উপন্যাস পড়েই প্রথম ইউরোপ আমেরিকা সম্পর্কে আগ্রহ জন্মায়। ইউরোপ আমেরিকার অনেক কিছু চিনে ফেলি এই উপন্যাস পড়ে। মোট ছয়বার এই উপন্যাসটি পড়ি এবং ১৯৯৭ সালে নিউইয়র্কের এক লাইব্রেরিতে খ্যাতিমান লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে এই কথা বলায় তিনি বলেছিলেন, " তোমার (আমার) নাম তো গিনেস বুকে উঠা দরকার।"

ইউরোপে গিয়েও এই উপন্যাস পড়েছি। আমেরিকায় গিয়েও এই উপন্যাস পড়েছি। এখনো সময় পেলে দুই চার পাতা পড়ি।

এই নিয়ে লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ে সঙ্গে দেখা ও কথা বলার স্মৃতিচারণমূলক একটা লেখাও আছে আমার এই গ্রুপে।

আমার কাছে এটি শুধুই উপন্যাস বলে বিবেচিত হয়নি। এতে ইতিহাসও বর্নিত হয়েছে নির্মোহভাবে।

চমৎকার এই উপন্যাসের প্রকাশক কলকাতার

 'আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড ' 

৪৫ বেনিয়াটোলা লেন, কলকাতা ৭০০০০৯। 

বর্তমান কভার মূল্য প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড এক সঙ্গে  ৯০০ টাকা। 

পড়ার ও সংগ্রহে রাখার মতো এক উপন্যাস। 

একটি ছবি বইয়ের। অন্যটি লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমি ১৯৯৭ সালে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে মুক্তধারা লাইব্রেরিতে।

Karim Chowdhury 

June 15, 2022

Cumilla.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...