সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ক্রোয়েশিয়া

 ক্রোয়েশিয়া

-----------------

৩২ বছর আগে ক্রোয়েশিয়া নামে কোনো দেশ পৃথিবীতে ছিলো না। ইউরোপের যে দেশটিতে আমি প্রথম গিয়েছিলাম সেই দেশটি পৃথিবী থেকে বিলিন হয়ে গেছে। নতুন প্রজন্ম সে দেশের নামই জানে না। দেশটির নাম ছিলো যুগোস্লাভিয়া। যুগোস্লাভিয়ার ইংরেজি বানান Yugoslavia. রাজধানী ছিলো বেলগ্রেড ( Belgrade)। বেলগ্রেডকে সার্বিয়ান  ভাষায় বিওগ্রাড (Beograd) বলা হতো। সার্ভিয়ানরা এখনো তাদের ভাষায় বিওগ্রাড বলে। বেলগ্রেড এয়ারপোর্ট নেমে মনে এক নতুন শিহরন অনুভব করলাম যে,আমি ইউরোপ মহাদেশে আছি এখন। 


মার্শাল জোসেফ ব্রুজ টিটোর দেশ হিসেবে যুগোস্লাভিয়ার খুব পরিচয় ছিলো। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে নেতৃত্ব  ছিলো যুগোস্লাভ প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটোর আমলে। ১৫ দিন যুগোস্লাভিয়া চষে বেড়িয়েছিলাম। বলতে গেলে যুগোস্লাভিয়া পুরোটাই ঘুরে বেড়িয়েছি। পরে আমি অস্টৃয়া চলে যাই। 


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালে যুগোশ্লাভিয়া গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অস্থায়ী সরকার স্থাপন করে। সোভিয়েট ইউনিয়ন আর যুগোশ্লাভিয়ার যৌথ বাহিনী জার্মান অকুপেশন থেকে  সারা দেশকে মুক্ত করে। পরে নব্বইয়ের দশকে আমার চোখের সামনে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। যুগোস্লাভিয়ার প্রতিবেশি দেশ অস্টৃয়া। যুগোস্লাভিয়া সমাজতান্ত্রিক দেশ ছিলো। 


একে একে চারটি যুদ্ধের মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়া, মেসিডোনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা আর স্লোভেনিয়া স্বাধীন হয়ে যায়। সার্বিয়া আর মন্টেনিগ্রো ‘ফেডারেল রিপাবলিক অব যুগোস্লাভিয়া’ নাম নিয়ে কিছুকাল টিকে থাকলেও ২০০৬ সালে মন্টেনিগ্রো স্বাধীন হয়ে গেলে পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে যায় যুগোস্লাভিয়া নামের দেশটি। পরবর্তীতে সার্বিয়া ভেঙে দুটি রাষ্ট্র হয়। একটি সার্বিয়া অপরটি কসোভো।


স্বাধীন হয়ে যাওয়া দেশসমূহ 


১. ক্রোয়েশিয়া- রাজধানী-জাগরেব , জনসংখ্যা মাত্র ৪৫ লাখ। 

২. মেসিডোনিয়া-রাজধানী-স্কপজি,জনসংখ্যা মাত্র ২০ লাখ।   

৩. বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা - রাজধানী - সারাজেভো, জনসংখ্যা- ৩০ লাখ ২ হাজার।  

৪. স্লোভেনিয়া- রাজধানী -লুবলিয়ানা-জনসংখ্যা- ২২ লাখ।   

৫. মন্টেনিগ্রো- রাজধানী -পোডগোরিকা - জনসংখ্যা ৬ লাখ ২২ হাজার।  

৬. সার্বিয়া- রাজধানী-বেলগ্রেড- জনসংখ্যা--৬৪ লাখ ৩ হাজার।   

৭. কসোভো- রাজধানী -প্রিস্টিনা - জনসংখ্যা -১৮ লাখ ৩ হাজার।  


যুগোস্লাভিয়ার আয়তন ছিলো ২৫৫৯৫০ বর্গ কিলোমিটার। এই দেশটি ভেঙে যখন ৭টি দেশ হয় তখন সব ক'টি দেশই ছোট হয়ে যায়।


আমি বর্তমান ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেব (Zagreb) তিন দিন ছিলাম।( ক্রোয়েশিয়া তখন যুগোস্লাভিয়ার একটা অঙ্গরাজ্য)। পরে একদিন এই নিয়ে ডিটেইলস লিখবো। ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে রাতে তোলা একটা ছবি। ডিসেম্বর মাস। তীব্র শীত তখন। প্রতিদিন তুষারপাত হতো। যেদিকে তাঁকাই সব সাদা। তুষারে আমার পা ডুবে গেছে।


© Karim Chowdhury 

12 April, 2022

Cumilla.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...