ভিয়েনায় মারামারি!!!
--------------------------------
আমার জীবনের যুবক বয়সের প্রধান সময়টা কেটেছে ইউরোপ – আমেরিকায়। তাই আমার অনেক পোষ্টের পুনরাবৃত্তি বা পুনরোক্তি হতে পারে। কোন ছবি কখন দিয়েছিলাম বা কি লিখেছিলাম তা সব সময় মনে থাকে না। আমি খুব পড়তে ভালোবাসি। স্কুল জীবন থেকেই গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ফিচার, ভ্রমণ কাহিনী, আত্নজীবনীসহ অন্যান্য বইতো আর কম পড়িনি।
একবার আমেরিকায় একজনকে পেয়েছিলাম, ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্স সিটিতে। সবাই উনাকে ‘জামাল মামু’ ডাকতো। বাড়ি ঢাকায়। আমাদের সিনিয়র ছিলেন। তবে বন্ধুর মতো। উনি কিভাবে সবার 'কমন মামু' হলেন তা আমি আজো জানি না। তো একদিন কাজের ফাঁকে আমাকে ফিউদর দস্তয়ভস্কির উপন্যাস ‘জুয়াড়ি’ পড়তে দেখে বলেছিলেন, '‘কি করতে এসব মিছা কথা পড়েন মামু ?’'
এমন কথাও আমি জীবনে প্রথম শুনেছিলাম। তার কথা, ''লেখকরা কল্পনা করে বানিয়ে বানিয়ে গল্প উপন্যাস লিখে। আমিতো জানিই এটা সত্য না, তো জেনে শুনে মিছা কথা পড়বো কেনো ?’'
তার কথায় আমি মনে কষ্ট পেয়েছিলাম। তবে তিনি খুব মিথ্যা বলেননি। আবার গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি জীবন থেকেই নেয়া। পরে ভাবলাম, কষ্ট করে কল্পনার রং মাখিয়ে গল্প, উপন্যাস লেখার চেয়ে আমি আমার জীবনের গল্পই লিখবো। সব মানুষের জীবনেই অনেক গল্প আছে। পত্রপত্রিকায় আমার সব লেখাই ছিলো আত্নজৈবনিক। তেমনি ফেবুতেও। আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই তো অনেক গল্প আছে। এই নিচের ১০ লাইনও তো একটা ছোট গল্প।
এক রাত ইউরোপের এক বারে মারামারি করেছিলাম। ডিসেম্বর মাস। তীব্র শীত। আমি, নিউটন, সেলিম, পিটার, মাইকেল ছিলাম এক টেবিলে। আমরা হুইস্কি খাচ্ছিলাম। পুলিশ পর্যন্ত এসেছিলো। রাত তখন ১টা। ভিয়েনার এক বারে ডৃংক খেয়ে কি চেয়ার ছোড়াছুড়ি! হাতাহাতি, ঘুষি। আমিও খেয়েছিলাম একটা। তবে দিয়েছিলাম ৪/৫ টা ঘুষি। করবোই তো মারামারি। স্থানীয় কিছু অস্টৃয়ান পাশের টেবিল থেকে আমাদের ‘সাইজে আউসল্যান্ডার’ ‘আর্শ লক’ বলে বিনা কারণে গালি দিয়েছিলো। জার্মান ভাষায় এই দু'টো খুব খারাপ গালি। ওরা র্যাসিস্ট ছিলো। আমরাও পাল্টা গালি দিয়ে ওদের গায়ে হুইস্কি ছুড়ে মেরেছিলাম। শুরু হয় মারামারি। এখন ভাবলেও ভালো লাগে। হাসিও পায়। এক জীবনে মানুষ কতো কি করে !!!
রাতের ১ টায় ভিয়েনার প্রাণকেন্দ্র স্টেফানসপ্লাতস-(Stephansplatz) এ তিন বাংলাদেশি তরুণ আর দুই অস্টৃয়ান মিলে মারামারি শেষে হৈ হুল্লুর করে বাসায় ফিরেছিলাম রাত ২টায়। সেই রাতে খুব তুষারপাত হয়েছিলো। ডিসেম্বর -জানুয়ারিতে ইউরোপ-আমেরিকায় শীতের কি দাপট! প্রায় প্রতিদিন তুষারপাত হয়। আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম !!!
ছোট ছেলেমেয়েদের মতো বড়রাও তুষারপাতে খেলা করে। সেই মারামারি শেষে গাড়ির কাছে এসে দেখি সব সাদা। তুষারপাতে তোলা সেই রাতের একটা ছবি।
ফেবু বলে লেখা অনেক ছোট করে নিলাম। অনেক বর্নণাই বাদ দিয়ে লেখা। বড় লেখা ফেবুতে বেশিরভাগ মানুষ পড়ে না। তাই ফেইসবুকে নিজেই সম্পাদক, প্রুপ রিডার, প্রকাশক।
Karim Chowdhury
08 June, 2023
Cumilla.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন