দোস্ত খাইজ্জানিডা থামা
----------------------------------
এটা হচ্ছে দুই ঢাকাইয়া যুবকের গল্প। দুজনেই পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এই বন্ধুত্ব এতোই নিবিড় যে,একজনের বিপদে আরেকজন এগিয়ে আসবেই। একেবারে জানি দোস্ত। কিন্তু একটা জায়গায় ওদের ভয়ংকর ধরনের মতবিরোধ। একজন আবাহনী ক্রীড়াচক্র এবং আরেকজন মোহামেডান ক্লাবের সমর্থক। অবস্থা এমন পর্যায়ে যে খেলার ফলাফলের উপর নির্ভর করে একজন আরেকজনের বাসায় গিফট পাঠায়। আর উপহার হলো নাজিরা বাজার বংশাল থেকে একটা আস্ত গরুর রান। এটা পাঠানোর পর আবার ফোন করে বন্ধুর কুশলাদি জিজ্ঞেস করে আর এই ফাঁকে উপহারের কথাও বলে।
তো একদিনের কথা বিশ্বাস ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেদিন ছিলো আবাহনীয় ও মোহামেডানের লীগের একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলা। তো দুই বন্ধু পুরান ঢাকার ট্র্যাফিক জ্যামে পড়ে স্টেডিয়ামে যখন পৌঁছলো তখন স্টেডিয়ামে তিল ধারনের জায়গা নেই। অগত্যা দুই বন্ধু কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে শুরু করলো।
এমন সময় দুই বন্ধুর মধ্যে যে কথোপকথন হলো তা ছিলো নিন্মরূপ:
প্রথম বন্ধু: দোস্ত, ফালফারতাসোস ভালোই আমি কোনোই আপত্তি দিমু না। কিন্তুক তুই এত জোরে পাছা খাইজ্জাইতাছোস কীর লাইগ্যা?
দ্বিতীয় বন্ধু: আমার যা ইচ্ছা তাই করুম মগর তুই কইবার কেডা?
প্রথম বন্ধু : হ ঠিকই কইছোস। তুই যতো ইচ্ছা ফাল ফার আর চিল্লাইতে থাক। আমি কিছু কমু না। কিন্তুক দোস্ত দোহাই লাগে তুই খাইজ্জানিডা থামা।
দ্বিতীয় বন্ধু: কইলাম তো আমার যা ইচ্ছা করুম। আমার চুলকানি লাগছে আমি খাইজ্জামু। তোর তাতে কী?
প্রথম বন্ধু: দোস্ত ঠান্ডা মাথায় আর কথাটা শোন। তুই উত্তেজনায় ফাল ফাইরা যেহানে চুলকাইতাছোস হেইডা তোর শরীল না। হেইডা হইতাছে আমার। এলায় বুঝছো?
দ্বিতীয় বন্ধু : দোস্ত হের লাইগ্যা কইতাছি, এতোক্ষণ ধইরা চুলকাইতাছি মগর চুলকাইয়া আরাম পাইনা কীর লাইগ্যা?
আমি ফেইসবুকে কিছু লিখে সময় কাটাই। এতে কেউ কেউ কমেন্ট অপশনে বা ইনবক্সে আমাকে খাইজ্জায়। বিশেষ করে পলিটিক্যাল পোস্টে এই খাইজ্জানি বেশি।
তো ঢাকাইয়া যুবকের মতোই বলতে হয়,
দোস্ত খাইজ্জানিডা থামা। কারণ ওইটা তোর শরীল না ওইটা আমার শরীল।
© Karim Chowdhury
11 July, 2023
Cumilla.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন