সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পড়ুয়া

 পড়ুয়া                                             Repost

----------

ফেইসবুকে অনেক গ্রুপ আছে। গ্রুপে তেমন কেউ-ই বিশেষ কিছু লিখেন না। এমনকি সদস্যদের মাঝে পাঠকের সংখ্যাও অতি নগন্য। এটা খুবই দুঃখজনক। বই পড়ার উৎসাহ দিলেও অনেকে যে গ্রুপের ছোট ছোট লেখাও পড়েন না তারা কি বড় বই পড়েন? এ বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। পড়লে তো তাদের বুক রিভিউ অন্তত দেখতাম। 


আমরা যারা লেখালেখি করতাম। ঈদে আমরা ম্যাগাজিনে গল্প লিখতামই। এটাই ছিলো আমাদের ঈদের প্রধান আনন্দ। ম্যাগাজিনও সাধারণ সংখ্যার পৃষ্ঠার চেয়ে অনেক বেশি পৃষ্ঠা নিয়ে বৃহৎ কলেবরে প্রকাশিত হতো। দামও ম্যাগাজিনের বেশি হতো। ঈদে অনেক পাঠক অন্যান্য শপিংয়ের সঙ্গে ম্যাগাজিনের 'ঈদ সংখ্যা' কিনতোই। কারণ ওই সংখ্যায় বিভিন্ন লেখকের ভালো ভালো লেখা থাকতো। ঈদ সংখ্যায় লেখার জন্য পাঠকদের জন্য ম্যাগাজিনে বিজ্ঞাপন দেয়া হলেও আমরা যারা নিয়মিত লিখতাম তাদেরকে সম্পাদক নিজে ফোন করে ঈদ সংখ্যায় লেখা দিতে অনুরোধ করতেন। 


ফেইসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ থাকলেও ভালো গল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা ইত্যাদি খুব একটা চোখে পড়েই না! তাহলে এতো এতো বই পড়ে তারা ফিডব্যাক কি পেলেন? আরেকটা জিনিস আমার নজরে পড়েছে তা হলো,

একটা প্রজন্ম দাঁড়াচ্ছে যারা নিজেদেরকে খুব পড়ুয়া বলে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই পরিচয়টা অফলাইনে দেওয়ার চেয়ে অনলাইনে দেওয়া সহজ।কেউ কেউ তো নিজের নামের শেষে ব্রাকেট দিয়ে বই পোকা বা অন্য কিছুও লিখে দেয়। এটা করার পেছনে একটা এলিটিয় চিন্তা চেতনা থাকে। নিজেকে খুব শিক্ষিত টাইপের কিছু একটা প্রমাণ করা যায়! আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো। তার নাম জাহাঙ্গীর আলম। তাকে দেখতাম অনেক বই কিনে যদিও এই অভ্যাসটা সে আমাকে অনুসরণ করেই করেছিলো। কিন্তু কোনো বই-ই সে পড়তো না। ড্রয়িং রুমে বুক সেল্ফে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতো। এতো বই কিনেও সে 

'অঘটনঘটনপটিয়সি' শব্দটা উচ্চারণ করতে পারতো না। অবশ্য ওই বন্ধুর দোষ দিয়ে লাভ নেই। অনেক নতুন টাকা ওয়ালারা ড্রয়িং রুমের সৌন্দর্য বাড়াতে দামি বুক সেল্ফ কিনে তাতে দামি দামি বই রাখে তার স্ট্যাটাস বাড়ানোর জন্য যাতে তার বাসায় যাওয়া মানুষ বুঝতে পারে তাদের বাসায় বেশ বই পড়া হয়। 


এখন যে এইসব গ্রুপে এতো এতো বই পড়ার উৎসাহ দেয়া হয় তাতে কোনো কাজ হয় বলে আমার মনে হয় না। এই অতিরিক্ত গ্রুপ পড়ুয়া প্রজন্মের বড় একটা অংশেরই নৈতিকতা সাহস বলতে কিছু থাকে না। চিন্তা করার ক্ষমতাও লোপ পায়! পাঠশালা গ্রুপেও আমি দুই বছর লিখে এই একই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। 


Karim Chowdhury 

14 July, 2022

Cumilla.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...