সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হুমায়ুন -গুলতেকিন


আমেরিকায় শুরুতে বেশ অর্থ কষ্টে ছিলাম। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। একটা উদাহরণ দিয়ে পরিষ্কার করছি। বড় মেয়ের প্রথম জন্মদিন। তারিখটা বেকায়দা ধরণের, ২৮ অগাস্ট। মাসের শেষের দিকে। বেতনের চেক পেতে আরো তিনদিন লাগবে। হাতের সব ডলার শেষ। মেয়ের মা'র মেয়ের প্রথম জন্মদিন নিয়ে নানা পরিকল্পনা। আমি উপহার কিনে নিয়ে এলাম দুই কেজি ময়দা। মেয়ে ময়দা চানতে পছন্দ করে। আমি প্যাকেট খুলে মেয়ের চারপাশে ময়দা বিছিয়ে দিলাম। সে মহানন্দে দুই হাতে ময়দা ছানাছানি করতে লাগল। সে আনন্দে যতই হাসে, তার মা দু :খে ততই কাদে। মেয়ের প্রথম জন্মদিনে দুই কেজি ময়দা!

তার কষ্ট দেখে আমি বলেছিলাম, দোআ করছি যেন তোমার সব ছেলেমেয়ে থাকে দুধেভাতে। যেন তারা কখনো অর্থকষ্টে না পড়ে। পরম করুনাময় আমার প্রার্থনা শুনেছেন।

গুলতেকিন আমার অর্থকস্ট লাঘবের জন্যে নেমে পড়ল। বেবি সিটিং করে। পত্রিকার এড দেখে কাপড় রিপু করে দেয়।

—হুমায়ূন আহমেদ (বলপয়েন্ট)

* লেখালেখি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে,  খ্যাতির শিখরে উঠে সেই দু:সময়ের ২৮ বছরের জীবন সঙ্গীকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। কোটি কোটি টাকা থাকলেও আপনার তিন মেয়ে এক ছেলেকে টাকা পয়সা দেননি! তারা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। আপনার বড় মেয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. নোভা আহমেদ ভার্সিটির এক বক্তৃতায় তা স্পষ্ট করে বলেছেন। নোভা এও বলেছেন, সে মায়ের পরিচয়ে পরিচিত হতে চায়। আপনার পরিচয়ে নয়। আপনি একজন ব্যর্থ স্বামী এবং পিতা। অনেকেই বলবে, আপনি শাওনকে বিয়ে করেছেন তা আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনাদের দুজনের সমস্যা না হলে আমাদের কী সমস্যা? কিন্তু আপনি কিছু করলে তার প্রভাব সমাজে পড়েবেই। বিখ্যাত লেখক, চলচ্চিত্রকার, নাট্যকার ও অধ্যাপকের কাজ তো সমাজে প্রভাব ফেলবেই।  অর্থ আর খ্যাতি অনেক মানুষকে বিপদগামী করে। গুলতেকিন আপনার দু:সময়ের সঙ্গী আর শাওন আপনার সুসময়ের সঙ্গী।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...