সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Grief Specialist- দুঃখ বিশেষজ্ঞ

 Grief Specialist- দুঃখ বিশেষজ্ঞ

-----------------------------------------------

প্রিন্সেস ডায়ানা মারা যান ৩১ আগস্ট ১৯৯৭। প্যারিসে সীন নদীর তীরে গভীর রাতে একটি টানেলে ডায়ানার মার্জিডিজ মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়ে। মিশরীয় মুসলিম বন্ধু ডডি আল ফায়েদ, ডায়ানা, ড্রাইভার হেনরি পল সকলেই মারা যান। পশ্চিমা বিশ্বে এই মৃত্যু বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। আমেরিকায়ও ডায়ানা এতো প্রিয় ছিলো জানা ছিলো না। ডায়ানার মৃত্যুর পর পরবর্তী সংখ্যার যায়যায়দিন ম্যাগাজিনে আমেরিকানদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটা চমৎকার লেখা লিখেছিলাম।

তখন আমি নিউইয়র্কে। সেদিন সন্ধ্যায় আমি থার্ড এভিনিউ আর লেক্সিংটন এভিনিউ মাঝে ২৮ স্ট্রিটে যাই। সেখানে গিয়েই শুনি ডায়ানা মারা গেছেন। ম্যানহাটনে এই এলাকাটিতে বেশ বাংলাদেশির আড্ডা। কারি এন্ড হারি, জয় অফ ইন্ডিয়া, কস্তুরি, শাহীন রেস্টুরেন্টসহ আরো অনেক রেস্টুরেন্ট আছে। ম্যানহাটনে বাঙালি কম থাকে। এখানে বাসা ভাড়া খুব বেশি। তাই বেশিরভাগ বাংলাদেশি কুইন্স, ব্রুকলিন, ব্রুনক্স এসব জায়গায় থাকে। আমি ম্যানহাটন থার্ড এভিনিউতেই থাকতাম। বাসা থেকে বের হলেই বেলভিউ হসপিটাল, এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, জাতিসংঘ সদর দফতর, টাইমস স্কোয়ার, রকফেলার সেন্টার, নিউইয়র্ক টাইমস, টাইম, এনবিসি টিভি, ফক্স টিভি, এবিসি টিভি, এসোসিয়েটেড প্রেস বার্তা সংস্থার হেড অফিস, বিভিন্ন দূতাবাসের কনসুলেট অফিস, নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি, সন্ত্রাসী হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া টুইন টাওয়ার বা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, একদিকে ইস্ট রিভার আরেকদিকে হাডসন রিভার।  আরো প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ অফিসসহ অনেক কিছু। সেজন্য ম্যানহাটনকে স্থানীয় ভাষায় ক্যাপিটাল অফ দ্য ওয়ার্ল্ড বলা হয়। 

ডায়ানার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে আমি বাসায় এসে টিভি দেখছিলাম, সিএনএনে প্যারিস থেকে লাইভ রিপোর্ট করছেন ক্রিস্টোফার ডিকি। সব টিভিতে শুধুই ডায়ানার খবর। কে কেমন দু:খ পেয়েছেন তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

দুঃখ হলো প্রতিকূলতা, ক্ষতি, নিরাশা, শোক, অসহায়তা, হতাশা প্রভৃতি বিভিন্ন অনুভূতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানসিক যন্ত্রণার এক বিমূর্ত প্রকাশ। দুঃখে মানুষ চুপচাপ কিংবা অবসন্ন হয়ে পড়ে এবং অন্যের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়। হতাশা, যার কারণ হিসেবে গুরুতর অবসাদজনিত ব্যাধি বা পারসিসটেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারকে দায়ী করা হয়, তা আসলে দুঃখেরই অন্যতম চরম একটি রূপ। কান্নার মাধ্যমে দুঃখের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

হঠাৎ টিভিতে ভেসে এলো এক মোটাসোটা আফ্রিকান আমেরিকান কা*লো ভদ্রমহিলা। কোকরানো চুল। বেশ ব্যক্তিত্বশালীনি। 

তিনি দু:খ নিয়ে আলোচনা শুরু করছেন। টিনএজ ছেলেমেয়েরা কেমন দু:খ পেয়েছে। ডায়ানার সঙ্গে যাদের সম্পর্ক ছিলো, আমেরিকার সরকারের সিনেটর থেকে উর্ধতন কর্মকর্তারা কেমন দু:খ পেয়েছেন। সাধারণ মানুষ কেমন দু:খ পেয়েছেন। মিডিয়া জগৎ যারা সারাক্ষণ ডায়ানাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন তারা কেমন দু:খ পেয়েছেন। মোট কথা সব শ্রেণি পেশার মানুষের দু:খ নিয়ে তিনি চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। 

তিনি যখন আলোচনা করছিলেন তখন তার ছবির নীচে লেখা আসে Grief Specialist. আমি কিছুটা থতমত খেয়ে গেলাম। গ্রিফ স্পেশিয়ালিস্ট মানে দু:খ বিশেষজ্ঞ! ওই সময় পর্যন্ত অনেক বিশেষজ্ঞ সম্পর্কে জানলেও দু:খ নিয়েও বিশেষজ্ঞ আছে তা জানা ছিলো না। 

আমেরিকায় দু:খ বিশেষজ্ঞও আছে। 

Karim Chowdhury 

28 November, 2023

Cumilla.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর