সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তুই খাইজ্জানিটা থামা

 তুই খাইজ্জানিটা থামা

-------------------------------

বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। হালকা বাতাসও আছে। আবহাওয়া একটু ঠান্ডা। দক্ষিণ পশ্চিম দুই দিকের জানালা খোলে রেখেছি। দক্ষিণ দিকের বারান্দার দরজাও খোলে রেখেছি। শুধু পূর্ব দিকের জানালাটা বন্ধ। দুই খোলা জানালা আর দরজা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস আসে। তবু আমি দরজা জানালা খোলা রাখি। পর্দাও গুটিয়ে রাখি। আমি আবদ্ধ রুম পছন্দ করি না। টপ ফ্লোর বলে বিছানায় শুয়ে শুয়েও বৃষ্টি দেখা যায়। আকাশ দেখা যায়। সামান্য ঠান্ডা আছে তাই কালো রঙের ফুল স্লিভ গোল গলার একটা গেঞ্জি পরে শুয়ে বুক পর্যন্ত লেপ টেনে লিখছি। ওদিকে টিভি চলছে। ঘুমের সময় ছাড়া সব সময় রুমে টিভি চলে। টিভির কথায় মনে হয় রুমে কেউ আছে। এতে একাকীত্ব দূর হয়। প্রচুর বইপুস্তক পড়া থাকলে আর ভাষাগত দক্ষতা থাকলে যে কোনো বিষয় নিয়ে লেখা যায়। সময়ও কাটে। আমার সময় কাটানোর প্রধান মাধ্যম ফেইসবুক। একটা গল্প দিয়েই শুরু হোক। 

গল্পটি নিন্মরূপ...

এটা হচ্ছে দুই ঢাকাইয়া যুবকের গল্প। দুজনেই পরস্পরের বন্ধু। একেবারে জানি দোস্ত। এই বন্ধুত্ব এতোই নিবিড় যে, একজনের বিপদের সময় অন্য বন্ধু দ্রুত সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবেই। খেলাধুলা বিশেষ করে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলায় এদের দারুন আগ্রহ। কিন্ত একটা জায়গায় এদের ভয়ংকর ধরনের মতবিরোধ। একজন আবাহনী ক্রীড়াচক্র এবং অন্যজন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কট্টর সমর্থক। অবস্থা এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যখন আবাহনী ও মোহামেডানের খেলার ফলাফলের উপর নির্ভর করে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে সেদিন রাতেই বিজয়ী দলের সমর্থক বন্ধু উপহার পাঠাবে পরাজিত দলের সমর্থক বন্ধুর বাসায়। সেটা হচ্ছে কাটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটা দেয়ার মতো। উপহার হচ্ছে- নাজিরা বাজার, বংশাল চৌরাস্তার পাশে কসাইয়ের দোকান থেকে কিনে গরুর একটা আস্ত রান। এখানেই শেষ নয়। উপহার পাঠানোর পর আবার ফোন করে বন্ধুর কুশলাদি জিজ্ঞাসা করার ফাঁকে উপহারের কথাও বলবে।

এমন অবস্থায় একদিনের ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেদিন ছিলো আবাহনী ও মোহামেডানের মধ্যে লীগের একটা গুরুত্বপূর্ণ খেলা। পুরনো ঢাকার ট্রাফিক জ্যামের দরুন স্টেডিয়াম এসে পৌঁছাতে ওদের কিছুটা দেরি হলো। যখন মাঠে পৌঁছলো তখন মাঠে তিল ধারনের জায়গা নেই। অগত্যা কাটাতারের সীমানার কোণ ঘেঁষে দুজনে খেলা দেখতে শুরু করলো। তখন চারিদিকে দর্শকদের গগনবিদারী চিৎকার। এমন সময় দুই বন্ধুর মধ্যে যে কথোপকথন হলো তা ছিলো নিন্মরুপ...

১ম বন্ধু- দোস্ত, ফাল পারতাছোস ভালোই,আমি কোনোই আপত্তি দিমু না। কিন্তুক এতো জোরে পাছা খাইজ্যাইতাছস কীর লাইগ্যা?

২য় বন্ধু- আমার যা ইচ্ছা তাই করুম। মগর তুই কইবার কেডা?

১ম বন্ধু- হ ঠিকই কইছোস। তুই যত ইচ্ছা ফাল পাড় আর চিল্লাইতে থাক আমি কিছুই কমুনা। কিন্তুক দোস্ত, দোহাই লাগে, তুই খাইজ্জানিটা থামা।

২য় বন্ধু- কইলামতো আমার যা ইচ্ছা তাই করুম। আমার চুলকানি লাগছে, আমি খাইজ্জামু। তোর তাতে কী?

১ম বন্ধু- দোস্ত, ঠাণ্ডা মাথায় আমার কথাটা খেয়াল করিছ। তুই উত্তেজনায় ফাল ফাইরা যেহানে চুলকাইতাছোস, হেইডা তোর শরীল না, হেইডা হইতাছে আমার। এলায় বুঝছো?

২য় বন্ধু- দোস্ত, হেইর লাইগ্যা কইতাছি, এতোক্ষণ ধইরা চুলকাইতাছি, মগর চুলকাইয়া আরাম পাইনা কীর লাইগ্যা?

আমি মাঝে মাঝে ফেবুতে আত্মজৈবনিক কিছু কথা, স্মৃতি, দেশের রাজনীতি আর ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতি ও চিন্তার কথা লিখি। আমার মতের সঙ্গে সবাই একমত হবে বা পছন্দ করবে তা ভাববার মতো আহাম্মক আমি নই। আমি কাউকে আঘাত দিয়ে লেখার চেষ্টাও করি না। কিন্তু কিছু লোক আমাকে চুলকাইতেছেন রাজনৈতিক কারণে। তারা ভুলেই গেছেন ওইটা তাদের শরীর না। ওটা হচ্ছে আমার। এক লাইন লেখার মুরুদ নেই শুধু আজে বাজে কথা।

ঘুম থেকেই উঠেই দেখি ইনবক্সে একজন লিখেছে, আমি যেন আজে বাজে কথা না লিখি। জানতে চাইলাম, কি আজেবাজে লিখেছি? সে লিখলো, আমি রাজনৈতিক কথা যেন না লিখি। বুঝলাম, সে চেতনাপন্থী। প্রতিদিনই আমার রাজনৈতিক পোষ্ট থাকে। এক শ্রেণির লোক মুক্তিযুদ্ধ, ভারতপ্রীতি, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর পাকিস্তানি দালাল খোঁজার মাধ্যমে আমাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করছে।

আমি তাকে লিখলাম, আপনাকে এসব পড়তে বলা হয় নি। ভালো না লাগলে স্ক্রল করে নিচে চলে গেলেই পারেন। তাছাড়া আপনি আমার লিস্টেও নেই।

সে লিখলো, এটা পাবলিক প্লেস। আমি তাকে জানালাম, পত্রিকায় যখন লিখতাম, সেটা কি অপাবলিক ছিলো? যায়যায়দিন আর মৌচাকে ঢিল ম্যাগাজিনে যখন লিখতাম তখন বাপ, মা, ছেলে, মেয়ে, পুত্রবধূসহ সবাই পড়তেন। আমাকে ফোন/ইমেল করে অভিনন্দনও জানাতেন। ফাজলামি করে ম্যাসেজ দিলে থাপড়ায়ে দাঁত সবগুলো ফেলে দেবো। এরপর সে আর ম্যাসেজ দেয়নি।

Karim Chowdhury 

07 December, 2023

Cumilla.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর