সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

২১শে ফেব্রুয়ারি

 ২১শে ফেব্রুয়ারি 

------------------------

এক ঘন্টা পরই ২১ ফেব্রুয়ারি । আগেও একবার লিখেছিলাম । আজ একটু বর্ধিত আকারে । গতকাল থেকে ইনবক্সে যে কি যন্ত্রণা শুরু হয়েছে এক আল্লাহ জানেন আর জানি আমি । কতোজন যে একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে ম্যাসেজ দিয়েছেন তা দেখে আমি মর্মাহত হয়েছি । এভাবে ইনবক্সে ম্যাসেজ দিয়ে কাউকে বিরক্ত করা কোন সৌজন্যতায় পরে এটা তারাই ভালো বুঝেন ।

বাংলা ভাষার জন্য অনেকের কান্নাকাটি শুরু হয়ে গেছে । একুশে ফেব্রুয়ারি এখন সুবিধাবাদী ও সুবিধাভোগীদের বাংলা ভাষার জন্য কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণের দিবস । ছাত্রছাত্রী, তরুন-তরুণীদের মুখে,হাতে 'ক' 'খ' 'গ' 'ঘ' এঁকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের দিবস । বর্ণমালা,শহীদ মিনারসহ নানা ধরনের ছাপ মারা কাপড় পরে উৎসবে মত্ত হওয়ার দিবস। মাথায় পট্টি বেঁধে ঘুরাফেরার দিবস । অনেকের শখের বাগানের ফুল চুরি করার দিবস । বই মেলায় মেয়েদের উত্যক্ত করার দিবস । লেখক সাহিত্যিকদের কোপাকুপির দিবস । কিছু ধরাবাঁধা পুরনো কথার চর্বিত চর্বণ করে বুদ্ধিজীবীদের বক্তৃতার দিবস । স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা ভাষার জন্য তাদের হায় হায় করার দিবস ।

আগে এই দিবসটি ছিলো প্রতিরোধ ও সংগ্রামের এক রাজনৈতিক দিবস । দেশ স্বাধীনের পর তাকে ঘোষণা করা হলো 'শোক দিবস'। বলা হলো,স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিরোধ ও রাজনৈতিক সংগ্রাম নিষ্প্রয়োজনীয় । কাজেই এ দিবস পালন করা দরকার শোক দিবস হিসেবে । শোকের মধ্যে প্রতিরোধ ও সংগ্রামের কোনো প্রেরণা বা উপাদান থাকে না তা সবাই জানেন । 

অথচ বর্তমান সময়ে প্রতিরোধ ও সংগ্রামের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি । যারা বাংলা ভাষার জন্য পত্রপত্রিকা ও টিভিতে চিল্লাচিল্লি করেন তাদের ছেলেমেয়েরা ইংরেজিতেই পড়াশোনা করে । স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান ১৯৭২ সালে ইংরেজিতেই লেখা হয়েছিলো । কাল স্কুল কলেজের অনুষ্ঠানে যারা  বক্তৃতা দেবেন তারা বেশিরভাগই ভুল বাংলা বলেন । এসব দেখে আমি নিজেও বাংলা ভাষার জন্য হায় হায় করি ।

অনেকদিন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি পড়িয়েছিলাম। সংগত কারনেই ইংরেজির গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রতিদিনই ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বক্তৃতা দিতাম । আমার মনে হয় না কালকের পর কেউ আর বাংলাভাষা নিয়ে কান্নাকাটি করবে  । কারণ আমরা জাপান, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশ বা জাতি নই । একুশে ফেব্রুয়ারি এই কথাটিই তো ইংরেজি । মোবাইল ফোন, কম্পিউটার চালাতে গেলে ইংরেজি ছাড়া উপায় নেই । ইংরেজি ভালো না জানলে একটা চাকরিও আজকাল পাওয়া যায় না । দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে । এখন ২০১৮ সাল । এখনো মন্ত্রণালয়ের সব ফাইল ইংরেজিতেই লেখা হয় ! সুপৃম কোর্টের সব রায় আজো ইংরেজিতেই লেখা হয় । ভার্সিটি লেবেলের সব ভালো বই ইংরেজিতে লেখা । অনেক সাবজেক্ট ইংরেজিতেই পড়তে হয় । যেমন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স বা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন ইংরেজি । অথচ বাংলাভাষা নিয়ে সবার কি কান্নাকাটি ! তাই একুশে ফেব্রুয়ারির পোস্টটা ইংরেজিতেই দিলাম।

International Mother Language Day has been observed every year since 2000 February to promote linguistic and cultural diversity and multilingualism. The date represents the day in 1952 when students from different educational institutions such as Dhaka University, Jagannath University, Dhaka Medical College demonstrating for recognition of their language, Bangla, as one of the two national languages of the then Pakistan, were shot and killed by police in Dhaka (near High Court), which is the capital of present-day Bangladesh. The term "mother language" is, itself, a somewhat awkward calque translation of the term used in a number of "Romance languages"—e.g. lengua materna (Spanish), lingua madre (Italian), langue maternelle (French), and so on. A more fluent English translation would perhaps be "mother tongue", though "native language" is the most readily comprehensible term in English. In linguistics, in fact, "mother language" refers to an ancestral or protolanguage of a particular branch of a language family. International Mother Language Day was proclaimed by the General Conference of the United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization (UNESCO) in November 1999 (30C/62). On 16 May 2009 the United Nations General Assembly in its resolution A/RES/61/266 called upon Member States "to promote the preservation and protection of all languages used by peoples of the world". By the same resolution, the General Assembly proclaimed 2008 as the International Year of Languages, to promote unity in diversity and international understanding, through multilingualism and multiculturalism. Languages are the most powerful instruments of preserving and developing our tangible and intangible heritage. All moves to promote the dissemination of mother tongues will serve not only to encourage linguistic diversity and multilingual education but also to develop fuller awareness of linguistic and cultural traditions throughout the world and to inspire solidarity based on understanding, tolerance and dialogue.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর