সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমেরিকার আদালতে একদিন

 আমেরিকার আদালতে একদিন

----------------------------------------------

২০০০ সালের একদিন। চাকরি করতাম শেল গ্যাস স্টেশনে। অনেকেই জানেন, আমেরিকা-ইউরোপে রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত যে কোনো প্রকার অ্যালকোহল, বিয়ার, হুইস্কি, কনিয়াগ ইত্যাদি বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সব বার, নাইট ক্লাব, ডিসকো রাত ২টায় বন্ধ হয়ে যায়। অনেক কনভিনিয়েন্ট স্টোর ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। গ্যাস স্টেশন তো বটেই। এসব স্টোরে মদ, বিয়ার পাওয়া গেলেও রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিক্রি নিষিদ্ধ। যদিও ফাঁকফোঁকর দিয়ে কিছু বিক্রি হয় তবে তা সামান্য। খুব সাবধানে। 

আবার ২১ বছরের নীচের ছেলেমেয়েদের কাছে অ্যালকোহল বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। যেমন অপরাধ ২১ বছরের নীচে ছেলেমেয়েদের কাছে সিগারেট বা যে কোনো টোবাকো প্রোডাক্ট বিক্রি। এটি ফেডারেল ক্রাইম। সব সিগারেটের প্যাকেটে লেখা থাকে Underage Sale Prohibited. যদিও ২১ বছরের নীচে অনেক ছেলেমেয়ে সিগারেট ও অ্যালকোহল খায়। কখনো নিজেরাই কেনে বা সিনিয়র কাউকে অনুরোধ করে কেনায়। পুলিশ বা অ্যালকোহল কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টের লোকের কাছে ধরা পড়লে অনেক ঝামেলা। আদালত পর্যন্ত যেতে হয়।

তবে আমেরিকাতে এসব স্টোরে বা গ্যাস স্টেশনে যারা চাকরি করেন তাদের প্রায় সকলেই একবার না একবার এই ধরা খেয়েছেন। আমি খেয়েছিলাম দুইবার।

একদিন বিকেল ৩টা। আমি ২টা থেকে রাত ১০টার শিফটে কাজ করতাম। সেদিন আমি, সোহেল, এঞ্জেলা, মিনার্ভা, মামা(ভদ্র মহিলার নাম ভুলে গেছি, আমাদের সবার সিনিয়র ছিলেন বলে আমরা সবাই তাকে মামা ডাকতাম। মা মিন করে।) অন ডিউটিতে ছিলাম। একটা ছেলে এসে ৬টার প্যাক বাডওয়াইজার বিয়ার কাউন্টারে দিতেই সোহেল স্ক্যান করে দাম রেখে দিলো। আমরা খুব গল্প করছিলাম। তাই তাড়াহুড়া করে সোহেল ছেলেটির আইডি চেক করেনি। এ সময় বিজনেস স্লো থাকে। ২১ বছরের নীচে হবে এমন সন্দেহ হলে আমরা বিনীতভাবে আইডি দেখাতে বলি। এই নিয়ে কিছু যুবক যুবতীর সঙ্গে তর্কাতর্কি, রাগারাগিও হয়। সোহেল সেদিন অসতর্ক ছিলো তাই আইডি চেক না করেই বিয়ার বিক্রি করে দেয়।

ওমা! ছেলেটা বিয়ার নিয়ে বাইরে যেতেই দু’জন লোক ছেলেটাকে নিয়ে ভেতরে এসে সরাসরি সোহেলকে অত্যন্ত ভদ্রভাবে নাম ধরে বললো, তুমি এই ছেলের কাছে বিয়ার বিক্রি করেছো। তুমি কাউন্টার ছেড়ে কাইন্ডলি বাইরে এসো।

আমাদের নাম জানতে কোনো সমস্যা নেই কারন আমাদের সবার বুকে নেম শিল্ড আছে। এটা নিয়ম। এবং শেলের লাল হলুদ স্ট্রাইপ গেঞ্জি পরা। ছেলেটির হাতে তখনো ৬টার প্যাকেটের বাডওয়াইজার বিয়ার। তারা পরিচয় দিলেন যে, তারা অ্যালকোহল এন্ড টোবাকো কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টের লোক। গলায় ঝুলানো আইডি কার্ড শার্টের ভেতর থেকে বের করে নিজেদের পরিচয় আমাদের দিলেন। 

খাইছে। সোহেল ধরা পড়েছে। আমিও জীবনে প্রথম এমন ঘটনা দেখলাম। 

তারা সোহেলকে নানারকম প্রশ্ন করলেন। তুমি কতোদিন এখানে কাজ করো? তোমাকে ঠিকমতো ট্রেনিং দিয়েছে কিনা? তুমি এদেশের আইন জানো না? এই ছেলের বয়স উনিশ। তুমি কি করে তার আইডি চেক না করে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলের কাছে বিয়ার বিক্রি করলে? তোমাদের ম্যানেজারকে আসতে বলো। অফিস রুমে নিয়ে অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেখলেন। সোহেলের ছবি তুললেন। সোহেল খুব ভয় পেয়েছিলো। ছবি না তোলার জন্য অনেক অনুনয় বিনয় করলেও কাজ হয়নি। প্রায় আধা ঘন্টা জেরা করার পর সোহেলের আইডি দেখে সব ইনফরমেশন লিখে জানালেন, আগামি মাসের সাত তারিখ তাকে লি কাউন্টি কোর্টে যেতে হবে। আদালত বিচার করবে। সোহেলের হাতে আদালতে উপস্থিত হওয়ার কাগজ ধরিয়ে দিয়ে উনারা চলে যেতেই আমরা সোহেলকে রাগাতে লাগলাম।

আমি গান গাইলাম,'ধরা পইরা গেছো তুমি রঙিলা শহরে'। 

এঞ্জেলা, মামা, মিনার্ভা আমাদের বুঝিয়ে দিলো যে, এটা আহামরি কিছু না। অনেকেরই এমন হয়। 

সোহেল ইংরেজিতে খুবই দুর্বল। এটা লজ্জার কিছু নয়। কিন্তু কুয়েতে ছিলো বলে আরবীতে ভালো। কুমিল্লা আমাদের কাছাকাছি বাসা। সোহেলের বাসা শাসনগাছা মহাজন বাড়ি। তুই তোকারি সম্পর্ক। সোহেল আমাকে বললো, মন্টু, তুই দোভাষী হিসেবে আমার লগে কোর্টে যাবি। আমি বললাম, আমারে ইন্টারপ্রেটারের ফি দেয়া লাগবো। সোহেল বললো, কোর্ট থাইকা বাইর হইয়াই দুইজনে বিয়ার খাওয়া শুরু করমু। সব বিল আমি দেমু। যাহ।

৭ তারিখ কোর্টে হাজিরার দিন সোহেল আমার বাসায় এলো তার নিজের নিসান আল্টিমা চালিয়ে। বাসা থেকে ২০ মিনিটের ড্রাইভ কোর্ট। আমি রেডি হয়ে গাড়ির কাছে গেলাম। কিছুদিন হয় আমি একটা ব্র‍্যান্ড নিউ হোন্ডা সিভিক গাড়ি কিনেছি। সোহেলের নিসান বাসার সামনে রেখে সেদিন আমার গাড়িতেই কোর্টে গেলাম। সোহেলই ড্রাইভ করলো। আমাদের মনে খুবই উত্তেজনা। কি জানি হয়?

কোর্টে পৌঁছে অ্যালকোহল কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টের লোকদের দেয়া কাগজপত্র জমা দিলে সোহেলের নাম লেখা হলো আর ইন্টারপ্রেটার হিসেবে আমার নাম। 

কোর্ট রুমে ঢুকে দেখি এটা কনসার্ট হলের মতো। গোল সারি করে উপরে নিচে সিনেমা হলের মতো অনেক চেয়ার এবং তাতে অনেক মানুষ বসা। ৬০/৭০ জন হবে। সবাই একই অপরাধে অপরাধী। কয়েকজন পুলিশ সবাইকে হেল্প করছে। কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কে কোথায় বসবে এসব পুলিশ বুঝিয়ে দিচ্ছে। মাঝখানে ফ্লোরে সাদা রঙয়ের গোল দাগ দেয়া। এটাই কাঠগড়া। আমাদের দেশের কাঠগড়ার মতো নয়।

এক পাশে স্টেজের উপরে তিনটা চেয়ার। মাঝের চেয়ারটা বেশ আলীশান। বুঝাই যায় এখানে জাজ বসবেন। এর একটু নীচে দু’জন ভদ্রমহিলা কম্পিউটার নিয়ে বসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই চেয়ারের পেছনের দরজা দিয়ে তিনজন ব্যক্তিত্ববান গুরুগম্ভীর লোক প্রবেশ করলেন। বুঝাই যায় তারা বিচারক। আমরা সবাই দাঁড়িয়ে স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিলাম। মাঝের চেয়ারে জাজ বসলেন। দুই দিকে দু’জন সহকারি। আর নীচে কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা মহিলা দু’জন সোহেলের জবানবন্ধি লিখবেন। অর্থাৎ কম্পোজ করবেন। বক্তব্য রেকর্ড করা যাবে না। এটাও ওই দেশের আইন। আরেকজন পুলিশ অফিসার ফাইলপত্র নিয়ে বসেছেন। তিনি পর্যায়ক্রমে নাম ডাকছেন।

কয়েকজনের বিচার দেখলাম। এখানে উপস্থিত প্রায় ৬০/৭০ জন সবাই একই অপরাধে অপরাধী। বাংলাদেশি শুধু আমরা দুই জন। সোহেলের নাম মোস্তাফিজুর রহমান ডাকতেই সোহেল, আমি উঠে হাঁটা দিলাম সাদা গোল চিহ্নিত জায়গার উদ্দেশ্যে। আমার নামও আগেই লেখা হয়ে গেছে ইন্টারপ্রেটার হিসেবে।

আমরা গোল সাদা দাগের ভেতর দাঁড়ালাম। জাজ প্রথম জানতে চাইলেন, ইন্টারপ্রেটার কে? আমি পরিচয় দিলাম। সোহেল আমার কি হয়? কিভাবে চিনি এসব কয়েকটা প্রশ্ন জাজ করলেন আমাকে। 

এরপর শুরু, আমাকে উদ্দেশ্য করে ইংরেজিতে বলা হলো, “যাহা বলিবো,সত্য বলিবো। সত্য বিনা মিথ্যা বলিবো না।“ এটা যেনো সোহেলকে বলি ডান হাত উপরের দিকে তুলে বলতে। বাইবেল দিয়ে হাত রাখতে বলা হয়নি। 

আমি সোহেলকে বাংলায় বললাম, 

অই, সারাজীবন মিছা কথা কইছোস। এইটা কইলাম আদালত। আইজ আমেরিকার আদালতে খাঁড়াইয়া হেছা কথা কইবি। হাত তুইল্লা আমারে ক। এরপর আমি জাজেরে কমু। সোহেল হাত তুলতে তুলতে আমাকে বললো, জাজ বুঝি তোরে এমনে কইতে কইছে?

আমি বললাম, অই ,খবরদার - চুপ। তাড়াতাড়ি ক। সোহেল আমাকে বাংলায় বললো, যা কমু সব মিছা কথা।

আমি জাজকে বললাম, সে বলেছে, সত্য বিনা মিথ্যা বলবে না।

এরপর জাজ আমাকে বললেন, তাকে জিজ্ঞেস করো  আন্ডার এইজের কাছে অ্যালকোহল বিক্রি যে অপরাধ এটা সে জানে না? 

আমি গম্ভীরভাবে সোহেলকে বললাম, অই, তুই জানোস না, আন্ডার এইজের কাছে বিয়ার বেচা  নিষেধ? থাপড়াইয়া তোর দাঁত ফালাই দেমু।

সোহেল বললো,দেখ মন্টু, চান্স পাইয়া আইজ আমারে বেইজ্জতি করতাছোস কইলাম। জাজ বুঝি এমনে জিগায়? হেরা কতো ভদ্র ! আমি একটু হাত নেড়ে তাকে বললাম, তুই কিছু একটা ক। আমিই বানাইয়া কইয়া দেমু।

জাজকে বললাম, জানি। 

জাজ-তুমি জেনেশুনে এই অপরাধ করেছো?

এবার আমি সোহেলকে জিজ্ঞেস না করেই উত্তর দিলাম।

আমি অসতর্কভাবে আইডি চেক করিনি। এটা আমার অপরাধ। ভবিষ্যতে এমন ভুল আর করবো না।

জাজ আমাকে বললেন, তুমি তাকে জিজ্ঞেস না করে উত্তর দিয়েছো কেনো? তোমাকে প্রশ্ন করা হয়নি। 

আমি জিহ্বায় কামড় দিয়ে সোহেলকে বললাম, তোরে বাঁচাইতে আইসা তো আমি বিপদে পড়ছি।

ক জীবনেও আর এই কাম করবি না। 

সোহেল বললো, মনে রাখিস, তুইও একদিন ধরা পড়বি। যা খুশি তুই জজেরে কইয়া দে।

আমি বললাম, সে জীবনেও আর এই কাজ করবে না বলে আদালতে প্রতিজ্ঞা করছে এখন। 

জাজ তিনটি অপশন দিলেন সোহেলকে।

১। ১২ ঘন্টা বিনাশ্রম কারাদন্ড।

২। ১৫০ ডলার জরিমানা।

৩। ৮ ঘন্টা কমিউনিটি সার্ভিস।( কমিউনিটি সার্ভিস কি তা পরে এক সময় লিখবো)।

সোহেল ১৫০ ডলার জরিমানায় রাজি। আমিও পরে ধরা পড়ে তাই করেছিলাম। সোহেলকে বললাম, একদিন কাজ করলে ১০০ ডলার বেতন পাস। এখন সকাল ১১টা বাজে। এখান থেকে জেলে চলে যা। রাত ১১টায় বাসায় চলে আসবি। ১৫০ ডলার ইনকাম। কাজ তো করতে হবে না। ফাঁকতালে আমেরিকার জেল দেখা হবে। সোহেল বললো, তোরে দোভাষী হিসেবে কোর্টে আনছি যাতে জেলে যেতে না হয়। 

জাজ জানালেন, এখনি দিতে হবে না। কোর্ট এখন যে কাগজ দিবে তার সঙ্গে একটা খাম থাকবে। আগামি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে ১৫০ ডলার পার্সোনাল চেকের মাধ্যমে লি কাউন্টি কোর্ট বরাবর পাঠাতে হবে। এক সঙ্গে না পারলে সে ইনস্টলমেন্ট করে তিন মাসে পরিশোধ করতে পারবে।

আমি জাজকে ধন্যবাদ দিয়ে কোর্টের দেয়া কাগজ নিয়ে বেরিয়ে এলাম দুজন। 

© Karim Chowdhury

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট

ফেবুতে মেয়েদের পোস্ট সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আট টা বাজে । শরীরটাও বেশি ভালো লাগছে না । আবার ঘুমাল াম । ১১টায় উঠলাম । ২ মগ চা খেলাম ( বাজারের হিসেবে ৮ কাপ হবে)। সবাই জানেন আমি স্মোক করি । চেইন স্মোকার । কম্পিউটার খোঁচাখুঁচি করে নিজে নিজেই ঠিক করলাম । প্রায় দুই ঘন্টা । আমি থাকি চার তলায় । দুপুর ১টা বাজে । খেতেও ইচ্ছে করছে না কিছু । তখনো মুখ ধুই নি । কম্পিউটারে খোঁচাখোঁচি করতে গিয়ে দেখি এক মেয়ে তার পা’য়ের একটা ছবি আপলোড করেছে । দেখলাম এই পা মানে ঠ্যাং এর ছবিতে লাইক পড়েছে ৯৪৭ টা । কমেন্ট অসংখ্য । ‘কতো সুন্দর এই পা । না জানি তুমি কতো সুন্দর । পা তো নয় যেন একটা গোলাপ ফুল’ । এ জাতীয় অনেক কমেন্ট । আমি পোষ্ট টা দেখে কিছুটা অবাক হলাম । একটা ঠ্যাং এর এতো কদর ! প্রায়ই লক্ষ্য করি, মেয়েরা যখনি কিছু আপলোড করে সেটা তাদের পায়ের ছবিই হোক,হাতের ছবিই হোক আর নাকের ছবিই হোক বা এক চোখের ছবিই হোক সে সব ছবিতে অগনিত লাইক আর কমেন্ট । মেয়ে বন্ধুদের ছোট করার জন্য বলছি না, ফেবুতে প্রায়ই দেখি মেয়েরা কোনো ছবি বা দু এক লাইন হাবিজাবি লিখলে লাইক আর কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় । অনেক মেয়েরা শখ করে পিঠা, ...