সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আলিম ভাই চিঠি

 "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

শ্রদ্ধেয় বড় ভাই,

সালাম নিবেন। আপনার সাথে সরাসরি কথা না বলে চিঠি লিখছি কারন আমি ছোট ভাই হিসাবে চাইনা আপনার সাথে তর্কাতর্কি বা বেয়াদবি করি। এই চিঠিতে আমি কিছু বিষয় আপনাকে অবগত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আশা করি আপনি মনোযোগ দিয়ে চিঠিটা পড়বেন এবং এখানে উল্লেখিত কোনো ভুল থাকলে আপনি বড় ভাই হিসাবে সংশোধন করে দেবেন।

আজ থেকে ছয় বছর আগে আব্বা জীবিত থাকা অবস্থায় যখন ব্যবসা ভাগাভাগি হয়। আপনি ভাগ করে দিয়েছিলেন বড় ভাই হিসাবে। তখন আপনি বলেছিলেন যে, আপনি আর পাইকারি তথা হোল সেল ব্যবসা করবেন না। আপনার এতো পরিশ্রম আর ভালো লাগে না। আমিই যেন হোল সেল ব্যবসাটা করি। আপনি ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা করবেন। সেই সিদ্ধান্তে আপনি পাঁচ তলায় চলে যান। গ্রাউন্ড ফ্লোরে আমাদের ৪টি দোকান আছে। নিয়ম ও আইন অনুযায়ী আমার দুইটি এবং আপনার দুইটি দোকান পাওয়ার কথা। আপনি আমার কাছে আবদার করলেন যে, আপনাকে যেন ৩টি দোকান দেই। আপনি সেগুলো ভাড়া দিয়ে চলবেন। নইলে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে আপনার কষ্ট হবে। আমি আমার বড় ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করে আপনাকে ৩টি দোকান দেই এবং আমি একটি রাখি। ফ্রেন্ডস মেডিকেলের ব্যবসা তখন ঐ তিন দোকানেই চলছিল। ঐ তিন দোকানের ভাড়া ২৪ হাজার টাকা প্রতিমাসে। আমি ভাড়া বাবদ আপনাকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা দেই গাড়ি বিক্রি বাবদ।

মৌখিকভাবে কথা ছিলো ফ্রেন্ডস মেডিকেলের লাইসেন্স যেহেতু আপনার নামে তাই লাইসেন্সটি আপনি আমার নামে হস্তান্তর করবেন। আমি আপনাকে বিশ্বাস করে লাইসেন্সটি তৎক্ষণিক আমার নামে নেইনি। আপনি আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই তাই ভাবলাম, এটাতো যে কোনো সময়ই হস্তান্তর করা যাবে। লাইসেন্সটি আমার কাছে ছিলো। কয়েক বছর পর আপনি আমার কাছে লাইসেন্সটি চেয়েছিলেন কিন্তু আমি তা দেইনি।

এখানে উল্লেখ্য যে, ভাগাভাগি করে যখন আপনি স্বেচ্ছায় ফ্রেন্ডস মেডিকেলের ব্যবসা আমার হাতে তুলে দেন তখন আপনি বলেছিলেন, এই ব্যবসার যত দেনা যেমনঃ- ব্যাংক ঋণ, পার্টির পাওনা টাকা, বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর টাকা আমাকে পরিশোধ করতে হবে। আমি গত ০৬ (ছয়) বছর যাবত সমস্ত দেনা পরিশোধ করি আসতেছি। এমনকি আমাদের ৫ তলা বাড়ির ৫০,০০,০০০/- (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা লোন আমি পরিশোধ করেছি।

ঐ ভাগাভাগির আনুমানিক ০২ (দুই) মাস পর আপনি F/M মেডিকেল থেকে হোল সেল ব্যবসা শুরু করেন। হিউজ মুলধন বিনিয়োগ করে। যদিও আপনি বলেছিলেন, আপনি হোল সেল ব্যবসা করবেন না। তবু বড় ভাই হিসাবে আমি আপনাকে কিছু বলিনি। আপনি F/M মেডিকেল নামে ব্যবসা করতেই পারেন। এই মার্কেটে আমি একাই হোল সেল করি না আরো আনেকেই করে।

পাতা-২)

ভাই হিসাবে আপনিও করতেছেন। আমার কোনো আপত্তি ছিলো না। কিন্তু আপনি আমার কাস্টমার নিয়ে কম দামে মাল বিক্রি শুরু করেন। এতে আমার ব্যবসার বিরাট ক্ষতি হয়। এর মাঝে আম্মা মারা গেলেন। আমি প্রতি মাসে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) আবার কোন মাসে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা লস দিয়ে ব্যবসা ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলাম। এইভাবে আপনি দুই আড়াই বছর F/M মেডিকেলে হোল সেল করে আমার কাস্টমার নিলেন এবং আমার প্রচুর ক্ষতি করলেন।

কিন্তু এখন আপনি ফ্রেন্ডস মেডিকেল নামে গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে ব্যবসা শুরু করেছেন। যা আমার ব্যবসার বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কথা ছিলো ফ্রেন্ডস মেডিকেলের লাইসেন্স আপনি আমার নামে হস্তান্তর করবেন। আমি বড় ভাইকে বিশ্বাস করে কি অপরাধ করলাম? আপনি বড় ভাই হিসাবে আপনারই দায়িত্ব ছিলো আমার নামে লাইসেন্সটি হস্তান্তর করা। এই ক্ষেত্রে আপনি সততা এবং কথার মূল্য রাখেননি। আপনার দেয় কথার বরখেলাপ করেছেন। এখন আপনি আবার সব কোম্পানীকে বলে দিয়েছেন ফ্রেন্ডস মেডিকেলের নামে যতো ঔষধ আসবে তা যেন আপনার দোকানে দেয়া হয়। এটা কি ভাই সরাসরি আমার ব্যবসার ক্ষতি করছেন না?

আপনি বড় ভাই। পরিবারেরর অভিভাবক। যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজে দেখে আসতেছি, বড় ভাই ছোট ভাইকে সহযোগিতা করেন। ছোট ভাই অসুবিধায় পড়লে বড় ভাই টেনে তুলেন। এটা ইসলাম ধর্মেরও কথা। বাবার অবর্তমানে বড় ভাই বাবার ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু ভাই আপনি তো আমাকে নিঃশেষ করে দেয়ার পন্থা অবলম্বন করেছেন। বড় ভাই হিসাবে ছোট ভাইয়ের প্রতি কি আপনার কোন দায়িত্ব নেই? দুই দিনের দুনিয়ার আমরা যে এসব করছি, তার জবাব দিহি কি আল্লাহর দরবারে আমাদের করতে হবে না?

ভাই আমি একটা সহি হাদিসে পড়েছি "আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।"

ফ্রেন্ডস মেডিকেলের লাইসেন্স আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে দিয়ে দেবেন। এটা আমার হক। আপনি F/M নামে ব্যবসা করতে পারেন।

অনেক কিছু লিখলাম। ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আপনি ও আপনার পরিবার সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ আপনাদের হেফাজতে করুন এই কামনায় শেষ করছি।

ইতি

আপনার ছোট ভাই

(মোঃ আবু সায়েম) তা

তারিখঃ ১২/১২/২০১৯ইং 

রোজ- বৃহস্পতিবার

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ

আমার দেখা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সরকারঃ শেখ মুজিবের শাসনামল ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের মার্চে শুরু হয়ে সেই বছরেরই ডিসেম্বরের দিকে গিয়ে শেষ হয়। এই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গন্য করা হয়। ওই সময় আমি বুঝতাম। ক্লাশ ফোরে পড়তাম। আহারে ! কি যে অভাব ! অনেকের মতো আমরাও ভাত না খেয়ে রুটি খেয়েছি । তাও পরিমিত । কখনো জাউ খেয়েছি । শুকনো মরিচ পাওয়া যেতো না । কাঁচা মরিচের কেজি ছিলো ১৫০ টাকা । লবন ১২০ টাকা । আর সোনার ভরি ছিলো তখন ১৫০ টাকা । সোনা শুধু ওই সময় কম দাম ছিলো । চারদিকে অভাব । সারাদেশের মানুষের হাহাকার । কতো মানুষ না খেয়ে মারা গেছেন ! বিদেশি রিলিফ সব আওয়ামী লীগের লোকেরা চুরি করেছে । আর বেশিরভাগ রিলিফ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে পাচার হয়েছিলো । তখন বর্ডার খোলা ছিলো তখন । মহিলাদের শাড়ি কাপড় ছিলো না । অনেকে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জাস্থান ঢেকেছিলো । এসব ছবি পত্রিকায়ও ছাপা হয়েছিলো । কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো অভাব ছিলো না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় ...

বোতল

বোতল মানব জীবনে বোতল অপরিহার্য । বোতল অনেক অর্থেও ব্যবহার হয় । কোনো কোনো এলাকায় আনস্মার্ট, বেয়াক্কেল প্রকৃতির লোককেও বোতল বলা হয় । ইউরোপ আমেরিকায় থাকতে আমি ডৃংক করতাম । হার্ড ডৃংক কমই খেতাম । প্রতিদিনই বিয়ার খেতাম । বিয়ার স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কাজ করতে এনার্জি জোগায় । পরিমিত বিয়ার খেলে কেউ মাতাল হয় না । মাঝে মাঝে বিশেষ কোনো পার্টিতে হুইস্কি খাওয়া হতো । তাও দামি ব্র্যান্ডের । জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেবেল, টিচার্স, পাসপোর্ট, হেনেসি, শিভাস রিগাল, জ্যাক ড্যানিয়েলস । সাকুরায়ও অনেক সময় এসব ব্র্যান্ডের হুইস্কি পাওয়া যায় না । তো দেশে আসার পরও কিছু দিন ডৃংক করেছিলাম । কুমিল্লায় সরকার অনুমোদিত একটা মদের দোকান আছে চক বাজারে । নামঃ নাদের ট্রেডিং কোং । এটা প্রায় আজ ৫০ বছর । এখানে বিদেশি ব্র্যান্ডের ডৃংক পাওয়া যায় না । দেশিয় কোম্পানি ‘কেরো এন্ড কোং’ যা দর্শনায় অবস্থিত তার তৈরি ভদকা, হুইস্কি, জিন পাওয়া যায় । আমাদের সমাজতো রক্ষনশীল । তাই কান্দিরপাড় থেকে একটা স্প্রাইট কিনে অর্ধেক খেতে খেতে চক বাজার যেতাম । নাদেরে যখন পৌঁছতাম তখন স্প্রাইটের বোতল অর্ধেক খালি হয়ে যেতো । আমি বাবুল ভাইকে স্প্...

অশ্লীল নাম

বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থানের বিচিত্র বা বিকৃত অর্থের নাম যা পরিবর্তন করা উচিতঃ ১. বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড় ২. চুমাচুমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ৩. সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা ৪. মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারি ৫. সোনাকাটা ইউনিয়ন, তালতলী, বরগুনা ৬.বড়বাল ইউনিয়ন, মিঠাপুকুর, রংপুর ৭.সোনাখাড়া ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ৮. ধনকামড়া গ্রাম, ভোদামারা, দিনাজপুর ৯.গোয়াকাটা, দোহার, ঢাকা ১০. গোয়াতলা, ময়মনসিংহ ১১.লেংটার হাট, মতলব, চাঁদপুর