পাগল
আমি জানি আমি বেশি দিন বাঁচবো না। তাই অনেক না বলা কথা মুখবইতে লিখে যাই।ছাত্রজীবনে ডায়েরি মেনটেইন করতাম। প্রতিদিনই কিছু না কিছু লিখে রাখতাম উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এখন মুখবই আছে। তাই এখানেই লিখে রাখি।
১৯৮৫ সালের কথা। ৩৯ বছর আগে। আমি মেজো আপার বাসা কান্দিরপাড় থাকি। দুলাভাই টঙ্গী অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলে চাকরি করেন। একদিন দুপুরবেলা খেয়ে আমি আমার রুমে শুয়ে ইত্তেফাক পত্রিকা পড়ছিলাম। জানালা দিয়ে দেখলাম একজন ভদ্রলোক এলেন বাসায়। কাপড়চোপড় খুব একটা দামি বা আকর্ষণীয় নয়। লুঙ্গি পরা। ভাবলাম, দুলাভাইয়ের গ্রামের বাড়ি থেকে কেউ এসেছেন হয়তো। আমি আমার মতো করে পত্রিকা পড়ছি। একটু পরে ঘুমিয়ে যাবো। আমি প্রায় সারা জীবন দুপুরে ঘুমাই।
আপার সঙ্গে ভেতরে কি কথা বলেছে তা আমার জানা নেই। কিছুক্ষণ পর ভদ্রলোক আমার রুমে এলেন। আমাকে সালাম দিলেন। আমি শুয়ে থেকেই কাত হয়ে ওয়ালাইকুম আস সালাম বলে বসতে বললাম।
তিনি বসলেন। আমি পত্রিকাটা বুকের উপর রেখে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে চিনলাম না। আমাকে কি কিছু বলবেন? তিনি বললেন আপনার বোন বলেছে আপনার সাথে কথা বলতে। আমি জানতে চাইলাম কি কথা? তিনি আমার বড় ভাগ্নি নাজমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন অর্থাৎ তিনি একজন ঘটক।
আমি তখন একটা টসটসে ইয়াং ছেলে। পরিপূর্ণ যুবক। তিনি আমার বড় ভাগ্নির বিয়ে নিয়ে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করলেন। আমি প্রথমেই উনার কাছে জানতে চাইলাম, ছেলে কি করে? তিনি বললেন, ছেলে আমেরিকায় থাকে। আমি কাত হয়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম ছেলে কি করে? তিনি আবারও বললেন,ছেলে আমেরিকায় থাকে। এবার আমি চোখ ট্যারা করে বললাম, আপনি এখন যেতে পারেন। তিনি অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, আপনি মেয়ের ছোট মামা? আমি বললাম জি। তিনি বিনীতভাবে আমাকে প্রশ্ন করলেন, মামা আপনি কি করেন? বললাম, আমি বাংলাদেশে থাকি। এরপর তিনি আমার রুম থেকে চলে গেলেন।
আমার দিবা নিদ্রার পর বিকেলে বের হবো। আপা চা দিয়ে বললেন ওনাকে কি বলছিস? আমি জানতে চাইলাম কেন? আপা বললেন, ওই লোক যাওয়ার সময় বলে গেছেন আপনার ভাই একটা পাগল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন